চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

শিল্পকলায় বোধনের ‘কিষাণকাব্য’ ও ‘পান্তা বুড়ি’ মঞ্চস্থ

বিনোদন ডেস্ক

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১০:১৩ অপরাহ্ণ

পাবনা জেলার বিলকুড়ালিয়ায় (চলন বিল) সত্য ঘটনা অাবহের কৃষকের উপর মহাজন ধনী শ্রেণীর নানান কূট-কৌশলের নির্মম পটভূমির আখ্যান ‘কিষাণকাব্য’। অন্যটি প্রভাব-প্রতিপত্তির খোলস কিভাবে অসহায় ও নিঃস্বদের শোষণ বঞ্চণায় তাড়িয়ে বেড়ায় তেমনি অনন্য কৌশলী সে শর্ষের মধ্যে এখনো ভূত আবহমান সেই নিরিখের প্রেক্ষাপট নির্মাণে শ্রুতি নাট্যরূপ পান্তা বুড়ি।

এ দুইটি কাব্যনাট্য প্রযোজনা আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় নগরীর জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম মঞ্চায়ন করে।

‘কিষাণকাব্য’ মূলত ভূমিহীন কৃষকদের দুঃখ-দুর্দশার ইতিহাস। যেখানে বাংলার কৃষককে অন্যের মাটি ভালোবেসে দিন কাটে। এভাবেই একসময় তাদের স্বপ্ন ও সাধ পল্লবিত হয়। যেখানে ভূমি অন্যের, জল অন্যের, শুধু মাটির প্রতি ভালোবাসা ভূমিদাস কৃষকের। আর এ ভালোবাসা কৃষককে অন্যের ঘরে তুলে দিতে হয় দাসত্বের চিরকালীন প্রথায়। তবে স্থানীয় রানামাষ্টারের নেতৃত্বে পাবনার বিলকুড়ালিয়ায় জোতদার ও মহাজনদের বিরুদ্ধে সংগঠিত কৃষকসমাজের তোপের মুখে লাঠিয়ালবাহিনী পালাতে বাধ্য হন। কিন্তু এখনো বাংলার কৃষককে সেই শোষক শ্রেণীর বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। তবুও তাঁরা অন্নের স্বপ্নে মেতে মাটির প্রতি ভালোবাসায় বীজ ফোটানোর স্বপ্নে বিভোর।

এ কাব্যনাট্যে পান্ডুলিপি ও নির্দেশনা দিয়েছেন সোহেল আনোয়ার। সহ-নির্দেশনায় ছিলেন সুমন বিশ্বাস।

অনুষ্ঠানের মূল পর্বের শুরুতে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম এর সাধারণ সম্পাদক এস এম আব্দুল আজিজ।

বোধনের সহ-সভাপতি সুবর্ণা চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন নাট্যকার ও নির্দেশক সাংবাদিক প্রদীপ দেওয়ানজী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ‘র উপসচিব আবুল হাশেম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়’র অধ্যাপক উদিতি দত্ত এবং বি.এড কলেজের অধ্যাপক শামসুূদ্দিন শিশির।

বড়দের প্রযোজনা শেষে
অনুষ্ঠানের অনন্য আবহের মঞ্চায়ন শুরু হয় বোধনের শিশুবিভাগ প্রযোজনা ‘পান্তা বুড়ি’।

এখানে মূলত ‘রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি’ মর্মে নেপথ্যের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে এখনো এমন মানুষই বিদ্যমান, যাদের প্রভাব প্রতিপত্তি শক্তিশালী ও প্রচুর সম্পদের মালিক হয়েও লোভী। যাঁদের চাওয়ার কোনো শেষ নেই। সেই লোভের শিকার নিঃস্ব-রিক্ত মানুষও তাদের গ্রাস থেকে রেহাই পায় না। পান্তা বুড়ির গল্পের বিভিন্ন দৃশ্যে এমনই এক চিত্র ফুটে উঠেছে। যেখানে এক শ্রেণির মানুষের বুড়ির সামান্য অন্ন পান্তার প্রতি লোভাতুর দৃষ্টি পড়েছে। রোজ রাতে কে যেনো এসে বুড়ির সামান্য পান্তা খেয়ে যায়। বুড়ি পান্তা চুরি বিচার দিতে যায় রাজার কাছে। কিন্তু যুগে যুগে রাজারা যেনো ক্ষমতাবান লোভীদেরই দলে। বিচার না-পেয়ে বিফল মনোরথে ফিরে আসে বুড়ি। কিন্তু ঘটনাপ্রবাহে আমরা দেখি একদিন ধরা পড়ে যায় পান্তা চোর। গ্রামবাসী অবাক হয়ে দেখে, এ যে তাঁদের রাজা মশাই।

পান্তা বুড়ি প্রযোজনাটি নির্দেশনায় ছিলেন সঞ্জয় পাল ও মিথিলা চৌধুরী। তবে লেখক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর ” পান্তা বুড়ির গল্প”‘অবলম্বনে ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটনের ছড়া রূপান্তরকে শ্রুতি নাট্যরূপ দিয়েছেন সঞ্জয় পাল।

পূর্বকোণ/পলাশ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট