চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

১৬ দিনে সৌদি থেকে ফিরলেন দেড় হাজার কর্মী  

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৭ জানুয়ারি, ২০২০ | ১:২৩ অপরাহ্ণ

সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরতে হয়েছে আরও ১০৯ জন বাংলাদেশিকে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাত ১১টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০৪ বিমানযোগে তারা দেশে ফেরেন। এ নিয়ে এ বছরের ১৬ দিনে এক হাজার ৬১০ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন।

বৃহস্পতিবারও ফেরত আসাদের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়। 

পাঁচ বছর আগে শ্রমিক হিসেবে সৌদি আরব গিয়েছিলেন তালেব। কিন্তু গত দুই মাস আগে সেখান মানসিক ভারসাম্য হারান।

আর মাত্র দুই মাস আগে সৌদি গিয়েছিলেন নোয়াখালীর আজিম হোসেন। পাসপোর্টে তিন মাসের ভিসা থাকা সত্বেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি বলেন, বাজার করার জন্য মার্কেটে যাওয়ার পথে পুলিশ আটক করেন। আটকের সময় পুলিশের সঙ্গে নিয়োগকর্তার (কফিল) কথা বলিয়ে দেন তিন। এরপরও তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জের রুহুল আমিন, কুমিল্লার ফিরোজ হোসেন ও মানিক, শরিয়তপুরের মিলন, যশোরের মোসলেম উদ্দিন, বগুড়ার মেহেদি হাসান, গাজীপুরের রাজিবসহ ১০৯ বাংলাদেশি বেশিরভাগেরই এমন অবস্থা। 

দেশে ফেরা কর্মীদের অভিযোগ, আকামা তৈরির জন্য নিয়োগকর্তা কফিলকে টাকা প্রদান করলেও কফিল আকামা তৈরি করে দেয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর কফিলের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও গ্রেপ্তারকৃত কর্মীর দায়-দায়িত্ব নিচ্ছে না। 

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, ২০১৯ সালে ২৫ হাজার ৭৮৯ বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। নতুন বছরের শুরুর ১৬ দিনে এক হাজার ৬১০ জন বাংলাদেশি ফিরলেন দেশটি থেকে। ফেরত আসাদের বর্ণনা প্রায় একই রকম। প্রায় সবাই খালি হাতে ফিরেছেন। কয়েকমাস আগে গিয়েছিলেন এমন লোকও আছেন। তারা সবাই ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায়।

শরিফুল হাসান গত বছরের পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে মোট ৬৪ হাজার ৬৩৮ কর্মী দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে ২৫ হাজার ৭৮৯ জন, মালয়েশিয়া থেকে ১৫ হাজার ৩৮৯ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ছয় হাজার ১১৭ জন, ওমান থেকে সাত হাজার ৩৬৬ জন, মালদ্বীপ থেকে দুই হাজার ৫২৫ জন, কাতার থেকে দুই হাজার ১২ জন, বাহরাইন থেকে এক হাজার ৪৪৮ জন ও কুয়েত থেকে ৪৭৯ জন শূন্য হাতে ফিরেছেন। 

এই মানুষগুলোর পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত। ফেরত আসা প্রবাসীদের আমরা শুধু বিমানবন্দরে সহায়তা দিয়েই দায়িত্ব শেষ করছি না, তারা যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য কাউন্সিলিং, দক্ষতা প্রশিক্ষণ ও আর্থিকভাবেও পাশে থাকতে চাই। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সবাই মিলে কাজটি করতে হবে।

আর এভাবে যেন কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে না হয় সেজন্য রিক্রুটিং এজেন্সিকে দায়িত্ব নিতে হবে। বিশেষ করে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করা উচিত।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট