চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বর্ণাঢ্য আয়োজনে আবুধাবীতে বিজয় দিবস পালিত

মোহাম্মদ মনির উদ্দিন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে

১৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ১১:৩৬ অপরাহ্ণ

জাতীয় কবিতা মঞ্চ, সংযুক্ত আরব আমিরাত কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উদযাপন ও রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে কবিতা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবীর রজনীগন্ধা খান সি আই পি হলরুমে সংগঠনের সভাপতি কবি কলামিস্ট মুহাম্মদ মুসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবি ও সাংবাদিক মনির উদ্দিন মান্না।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মহাগ্রন্থ আল কোরআন থেকে অর্থসহ তেলাওয়াত ও দোয়া মোনাজাত করেন মাওলানা ইমরান হোসাইন। পরে রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সকল শহীদদের প্রতি এক মিনিট নীরবতা পালনসহ গভীর বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে কবিতা উৎসব শুভ উদ্বােধন করেন বিশিষ্ট কবি ও লেখক, গবেষক, মো. জানে আলম জাহাঙ্গীর।

মহান বিজয় দিবস উদযাপন ও রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে কবিতা উৎসবে নানা অনুষ্ঠানমালায় মধ্যে ছিল শহীদ মিনারে( অস্থায়ী) পুষ্পস্তবক অর্পণ,জাতীয় পতাকা উওোলন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ/ আত্মদানকারী/যুদ্ধাহত/মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ দোয়া মোনাজাত, মহান বিজয় দিবসের ৪৮তম এর কেক কাটা,চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, বিজয়-পূর্ব বিজয়ের কবিতা আবৃত্তি, ১৯৭১-এ মুক্তিযোদ্ধাদের ভয়াবহ সেই দিনগুলো শীর্ষক আলোচনা সভা, রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, তরুণ কবি আরাফাতুর ইসলাম চৌধুরী বই ‘অস্পর্শ ভালোবাসা’ ও জাতীয় কবিতা মঞ্চের মাসিক পত্রিকা ‘অন্বেষণ’-এর মোড়ক উন্মোচন, বর্ষসেরা কবি ও পুরস্কার বিতরণ, বিজয়ের উল্লাস, বিভিন্ন কমিউনিটির সম্মানে মেজবান। বিপুল সংখ্যক প্রবাসী কবি, লেখক, ছড়াকার, সাহিত্যিক, সাংবাদিকদ সহ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের অংশ গ্রহণে বর্ণিল হয়ে উঠে বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বর্ণাঢ্য আয়োজন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় কবিতা মঞ্চের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আল সুমাইয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান, মীরসরাই সমিতির সভাপতি, শিল্পপতি ও মানবতার কবি ফখরুল ইসলাম খান সি আই পি। সংবর্ধিত অতিথি ছিলেন জাতীয় শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা জাকের হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর আলম পক্ষে তার পুত্র শিবলু মাহবুদ সম্মাননা গ্রহণ করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় কবিতা মঞ্চের উপদেষ্টা, কবি ও লেখক মোহাম্মদ সাইফুল আলম সাইফ, প্রকৌশলী আশিক বডুয়া, জনতা ব্যাংক আবুধাবী শাখার ম্যানেজার আব্দুল হাই, মাওলানা এনামুল হক নিজামি, মোহাম্মদ মুজিবুর হক, মোহাম্মদ আক্তারউদ্দিন পারভেজ, নারীনেত্রী ফরিদা পারভিন, কবি সুলতান তানিয়া, মোহাম্মদ রবি হোসেন, একুশে টিভি আরব আমিরাত প্রতিনিধি সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম সহ প্রমুখ। আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কবিতা মঞ্চের সিনিয়র সহ সভাপতি কবি মির্জা মোহাম্মদ আলী, মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা শবনম আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক তরুণ কবি মোহাম্মদ আরাফাতুর ইসলাম চৌধুরী, কবি আল আমিন জয়, কবি সেলিম, নাজমুল ইসলাম চৌধুরী, বাবু দীপক চন্দ্র দাস, কবি জুলেকা বেগমসহ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন – এবারের মহান বিজয় দিবস এসেছে ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে। আগামী ২০২০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং এর পরের বছর ২০২১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে বাংলাদেশ। বাঁধভাঙা আনন্দের দিন। বাঙালি জাতির জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জনের দিনটি আজ। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার স্বপ্নপূরণের দিন। পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ, নিপীড়ন আর দুঃশাসনের জাল ভেদ করে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিজয়ের প্রভাতী সূর্যের আলোয় ঝিকমিক করে উঠেছিল বাংলাদেশের শিশিরভেজা মাটি। অবসান হয়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সাড়ে ২৩ বছরের নির্বিচার শোষণ, বঞ্চনা আর নির্যাতনের কালো অধ্যায়। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার সামনে দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণে শত্রুদের মোকাবিলা করার জন্য যার কাছে যা আছে, তা-ই নিয়ে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ একাত্তর সালের ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পথ বেয়ে এসেছে বাঙালির বিজয়। পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছরের মুক্তির সংগ্রাম ও একাত্তর সালের ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পথ বেয়ে এসেছে বাঙালির বিজয়। সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তানে ১৯৪৭ সালেই বাঙালির ওপর প্রথম আঘাত এসেছিল। রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন পাকিস্তানি শাসকেরা। ১৯৫২ সালে বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রাঙিয়ে বাংলার বীর সন্তানেরা মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছিলেন। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধিকারের চেতনার যে স্ফুরণ ঘটেছিল, কালক্রমে তা সশস্ত্র স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। বিবর্তন ধারায় প্রবাসের মাটিতে সার্থকতার পরিমণ্ডলে প্রশংসিত অবিসংবাদিত বর্ণিল আলোক ছোঁটায় অব্যহত ভাবে এক নূতন কাব্যধারা সমুজ্জল। সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের অনিন্দ্য যাত্রাপথে কবিতা মঞ্চের বিচরণ গভীর বিশ্বস্ততার, নির্মল প্রতিশ্রুতি স্থায়িত্ব ও নির্ভরতার এক অনবদ্য শুদ্ধতম প্রতীক।

অনুষ্ঠানে আমিরাতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত তরুন কবি ও সাংবাদিক, বিশিষ্ট ব্যক্তি, সংস্কৃতিককর্মী, বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিপুল সংখ্যক কবিতা প্রেমী উপস্থিত ছিলেন।

 

 

পূর্বকোণ/মনির-আরপি

শেয়ার করুন