পারস্য উপসাগরের গরম ও মরুভূমির ছোট দেশ কাতার। মাথাপিছু আয়ে বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ কাতার। দেশটিতে প্রায় পাঁচ লাখ বাংলাদেশি বিভিন্ন পেশায় কর্মরত আছেন। তাদের বেশিরভাগই নির্মাণশ্রমিক।
কাতারে হাতেগোনা কিছু বাংলাদেশি থাকেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। শনি থেকে বৃহস্পতিবার সবাই ব্যস্ত থাকলেও শুক্রবার থাকে ছুটির দিন, আর প্রতি শুক্রবার কাতারে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য দিনটি ঈদের দিনের মতো।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর বাংলাদেশিদের বাসাবাড়ি ও কাতারের বিভিন্ন পার্ক, রেস্টুরেন্টে বসে ফ্যামেলি আড্ডা আর একসঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়া। আড্ডা চলে রাত পর্যন্ত, রাতের খাওয়া শেষে যে যার মতো চলে যান বাসায়।
বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা সফিকুল ইসলাম তালুকদার বাবু জানান, বাংলাদেশি এই পরিবারগুলো না থাকলে কার কাছে যেতাম। আরবের সংস্কৃতি ও নাগরিকদের সঙ্গে আমাদের কোনো কিছু তেমন একটা মেলে না। বাংলাদেশি পরিবার থাকায় অন্তত প্রতি সপ্তাহে একবার হলেও ফ্যামেলি আড্ডা হয়।
তিনি জানান, আমরা যেমন বন্ধু পেয়েছি, আমাদের ভাবিরা বান্ধবী পেয়েছেন আর ছেলেমেয়েরাও তাদের বন্ধু পেয়েছে। কাতারে থাকা বাংলাদেশি পরিবার একেক জন একেক জনের পরম আত্মার আত্মীয় হয়ে গেছে।
ফরিদা ইয়াসমিন পপি জানান, শুক্রবার দিনটি আমাদের জন্য বিশেষ একটা দিন। কারণ শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সবাই নিজেদের কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মজার ব্যাপার হলো আমরা প্রতি শুক্রবার একসঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়া আড্ডা-গল্পগুজব করি ও যে যার মতো করে সবাই বাসা থেকে রান্না করে নিয়ে আসি একসঙ্গে বসে খাই।
সৈয়দা আলিফ জানান, আমাদের সবার বাড়ি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় হলেও সবার সঙ্গে এইখানে পরিচয়, কিন্তু আমরা যখন একত্মিত হই মনে হয় না যে আমাদের সবার বাড়ি বিভিন্ন এলাকায়। আমরা সবাই আত্মার আত্মীয় এক সপ্তাহ কেউ কাউকে না দেখে থাকতে পারি না।
তিনি জানান, যখনই ছুটি পাই একসঙ্গে হয় গল্প-আড্ডা, খাওয়া-দাওয়া, এককথায় আমরা যারা এইখানে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করি সবাই সবার আত্মার আত্মীয় হয়ে গেছি।
পূর্বকোণ-রাশেদ