চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

হ্যামবুর্গের গ্যাস্তঠাখ যেখানে সূর্য ডোবে রাতে

সৌরভ কাইছার জীবন

২৮ জুলাই, ২০১৯ | ১:৩১ পূর্বাহ্ণ

সাধারণত আমরা সূর্যাস্তের সময় বলতে বুঝি সন্ধ্যা ৬টা বা ৭টা। কিন্তু রাত ১০/১১ টায় সূর্যাস্ত তো বুঝি না ? কিংবা রাত ৮ টায় রোদ বুঝি না? হ্যা! আমিও ভাবতাম সূর্যাস্ত বুঝি ৬/৭ টায় হয় আর রোদ ৪টার পর আর দেখা যাবে না। কিন্তু যখন এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে জার্মানি আসি তখনও ফিল করিনি রাত ১০টায়ও সূর্য ডোবে।
এপ্রিল শেষ হয়ে মে আসে তখন সামার সিজন কেবলমাত্র শুরু। তবে সামার তার আসল রূপ দেখানো শুরু করে জুনের শুরুতে। তাপমাত্রা গিয়ে ঠেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর সূর্য অস্ত যায় রাত ১০টায়।
সাধ হল একদিন সূর্যাস্ত দেখবো। প্রজেক্টের কাজে ছিলাম জার্মানির হ্যামবুর্গের গ্যাস্তঠাখে। গ্যাস্তঠাখ শহরটা এলবে নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা। সুতরাং যেখানেই নদী একটু চওড়া রূপে আবির্ভূত হয়ছে সেখানেই জার্মানরা নয়নাভিরাম পার্ক করে রাখছে। তেমনি একটি পার্ক করা আছে বার্গেডর্ফার স্ট্রাচের পাশে। আমার হোস্টেল থেকে ৪ মিনিটের পথ। ৯ টায় বের হলাম নদীর পাড় গিয়ে বসবো। কিন্তু জানা ছিল না এত সুন্দর দৃশ্য দেখব। পরিবেশটা ছিল এমন চারিদিক নীরব-স্তব্ধ। মানুষ বলতে আমরা হাতেগোনা ১০/১২ জন।
দেশের বর্ডারের তুলনায় জনসংখ্যা কম হলে যা হয় আরকি। হালকা বাতাসের সাথে জলরাশির মৃদু ঢেউয়ের ছল ছল শব্দ যে কাউকে হিপনোটিজ করতে সক্ষম। তবে এমন পরিবেশেও কেন জানি মনের মাঝে খচ খচ লাগে, ইস ! আমাদের দেশেও যদি এমন পরিবেশ থাকতো। দেশতো দেশই। আপনি যতই সুখে থাকেন না কেন হৃদয়ে সব কিছুতে ভেসে বেড়াবে নিজের বেড়ে ওঠা শৈশবের মাটির গন্ধমাখা স্মৃতিগুলো। দেশে থেকে যে দেশপ্রেমটা অনুভব করতে পারতাম না তা আজ পরবাসে সবসময় অনুভব করি। ছোটবেলায় স্কুলে জাতীয় সংগীত গেয়ে যেতাম কিন্তু অনুভব করতাম না। কিন্তু পরদেশে যখন নিজ দেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয় তখন গায়ে প্রতিটি পশম দাড়িয়ে জানান দেয় আমি বাংলাদেশি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট