চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পরিকল্পিত ও মানসম্মত শিক্ষা প্রদানে অগ্রণী বিদ্যাপীঠ

এস. এম. জাওয়াদ

২ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ১:১৩ পূর্বাহ্ণ

আজকের শিশুকে আগামী দিনের আদর্শ নাগরিকরুপে গড়ে তুলতে একটি আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিকল্প নেই। সুসমন্বিত ও কল্যাণধর্মী জীবনযাপনে সচেতন, কর্তব্যবোধে উদ্বুদ্ধ সৎ ও প্রগতিশীল দৃষ্টিসম্পন্ন প্রজন্ম গড়ার লক্ষ্যে ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে পরিচালিত চকবাজার চট্টেশ্ব¦রী রোডে অবস্থিত ‘চট্টগ্রাম ল্যাবরেটরী স্কুল এন্ড কলেজ’ বন্দর নগরীর বুকে এমনই একটি মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষামন্ত্রণালয় এবং শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত ‘রিসার্চ ফর এডুকেশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট একাডেমী ট্রাস্ট’ প্রতিষ্ঠিত এবং অভিজ্ঞ শিক্ষাবিদগণের পরিচালনায় এই বিদ্যালয়টি ২০ বছরের পথপরিক্রমায় সচেতন অভিভাবকের কাছে আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

শিক্ষক ও পাঠক্রম ট্রাস্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক বাহার উদ্দিন মো. জোবায়ের শিক্ষাপদ্ধতি সম্পর্কে বলেন, শিক্ষা কৌশল নির্ধারণে এখানে শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আছেন। তারা নিয়মিত প্লে থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর সামগ্রিক উন্নয়ন ও উৎকর্ষের জন্য প্রথাগত পদ্ধতির উপর ছেড়ে না দিয়ে ক্রমাগত উৎকৃষ্ট পদ্ধতির উপর জোর দিয়ে থাকেন। স্ব স্ব বিষয়ে মাস্টার্স এবং বি.এড, এম.এড ডিগ্রীধারী অভিজ্ঞ শিক্ষক ম-লী পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে প্রস্তুুত পাঠ টিকা অনুসারে পাঠদানের কাজ সম্পন্ন করেন। ফলে ক্লাসের পড়া ক্লাসেই আদায় হয়, প্রাইভেট পড়ার প্রয়োজন পড়ে না। শিক্ষাবিজ্ঞানের সফল প্রয়োগে বিগত বছর সমূহে সকল বোর্ড পরীক্ষায় আমাদের ছাত্রছাত্রীদের এ’ প্লাস প্রাপ্তিসহ শতভাগ পাসের সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তাই শিক্ষাবোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় আমাদের স্কুলকে পিএসসি, জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষা গ্রহণের অনুমোদন প্রদান করেছেন যা অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নেই। ফলে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পিএসসি, জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষা ল্যাবরেটরী স্কুল এন্ড কলেজের নামেই দেবে। সম্মানিত
অভিভাবকবৃন্দ এ বিষয়টি লক্ষ্য করবেন যে, অনুমোদেন নেই এমন বিদ্যালয়ে ভর্তি করালে বোর্ড পরীক্ষায় নানা জটিলতায় পড়তে হয়।
মানসম্মত ও ডিজিটাল পাঠদান পদ্ধতি

এই প্রসঙ্গে স্কুল অধ্যক্ষ ইমাম গাজ্জালী ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যাপক হাবীব রহমত উল্লাহ জানান, ‘মুখস্থ নয় বরং অনুধাবন ক্ষমতা সৃষ্টি’ এই রীতির আলোকে এক ঘেঁয়ে নিরানন্দ পাঠদানের পরিবর্তে শিক্ষার্থীরা সক্রিয় অংশগ্রহণমূলক আনন্দঘন পরিবেশে শিখবে এখানে। মনোবিজ্ঞান পদ্ধতি ও
শ্রবণ-দর্শনমূলক শিক্ষা উপকরণ যেমন- মাল্টিমিডিয়া এবং ওভারহেড প্রজেক্টর ব্যবহারের মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষকে অত্যন্ত সহবোধ্য ও আনন্দময় করে তোলা হয়েছে। এখানকার শিক্ষকগণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। প্লে-নার্সারী ক্লাসগুলো ছোট্টমণিদের জন্য সাজানো হয়েছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়ভাবে। মজার সব সিডির মাধ্যমে বর্ণ মালা ও সংখ্যায় হাতেখড়ি হয় ওদের। এখানে সকল ক্লাসের কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামলূক। একজন অভিজ্ঞ বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ার পরিচালনা করছেন এই শিক্ষা কার্যক্রম। এখানে ছাত্র এবং ছাত্রীদের জন্য রয়েছে পৃথক ক্লাসরুম ও সময়সূচী।
সহ-পাঠক্রমিক কার‌্যাবলী ও স্কাউটিং : ভাইস প্রিন্সিপ্যাল মো. সিকান্দর জানান, লেখাপড়ার পাশাপাশি শিশুর সৃজনশীল ক্ষমতার পরিপূর্ণ বিকাশে অত্যন্ত সজাগ চট্টগ্রাম ল্যাবরেটরী স্কুল। প্রতি বৃহস্পতিবার বিশেষজ্ঞ দ্বারা প্রণীত বাংলা উচ্চারণের ক্লাস, আবৃত্তি, বিতর্ক, গানের ক্লাস, চিত্রাঙ্কন ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়। ইংলিশ লিসেনিং ও স্পিকিং এ পারদর্শীতা অর্জন করার জন্য রয়েছে ল্যাংগুয়েজ ল্যাব। আউটডোর-ইনডোর গেমসের পাশাপাশি নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। প্রতিদিন প্রাত্যহিক সমাবেশে শরীর গঠনমূলক ব্যয়াম করানো হয়। এ ছাড়া স্কুল অধ্যক্ষ বাংলাদেশ স্কাউট, চট্টগ্রাম জেলা রোভার এর সহকারী কমিশনার অধ্যাপক হাবীব রহমত উল্লাহর নেতৃত্বে কাব, বয় ও রোভার স্কাউটিংয়ের ব্যবস্থা : শিক্ষার্থীদের চৌকষ ব্যক্তিত্ব গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। জাতীয় পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট স্কাউটস পরীক্ষায় এবং ২০১৯ সালের জাতীয় জাম্বুরীতে এই স্কুলের ছাত্ররা অংশগ্রহণ করার গৌরব অর্জন করেছে। শিক্ষার্থীর মননশীলতা বিকাশের জন্য নিয়মিত দেয়ালিকা ও বুলেটিন প্রকাশ করা হয়। এছাড়া জাতীয় সকল দিবসসমূহ পালিত হয় সাড়ম্বরে।

বিজ্ঞানাগার ও বিজ্ঞান ক্লাব : প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য
ছাত্র-ছাত্রীদের যাতে প্রচুর আগ্রহ জন্মে, বুঝতে সহজ হয়, ব্যবহারিক ও প্রয়োগিক দিক স্পষ্ট হয়ে ওঠে, সেজন্য এই স্কুলে রয়েছে উন্নত বিজ্ঞানাগার। বিজ্ঞান ক্লাবে নানা সৃজনশীল কর্মকা- এবং বিজ্ঞান মেলা, গণিত অলিম্পিয়াড, রসায়ন অলিম্পিয়াড অয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান মনস্ক হিসাবে গড়ে তুলতে সফল উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আবাসিক ব্যবস্থাপনা : ট্রাস্ট ট্রেজারার অধ্যাপক আহসানুল করিম সিদ্দিকী বলেন, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় ছাত্রদের শিক্ষা, শৃঙ্খলা, আচরণে পরিপূর্ণতা প্রদান ও মানবিক মূল্যবোধ গঠনের নিমিত্তে আবাসিক ছাত্রদের আমরা প্রয়োজনীয় নৈতিক শিক্ষা ও শিষ্টাচার চর্চার মাধ্যমে দৈনন্দিন রুটিন অনুসরণ করে সুশৃঙ্খল অবস্থান নিশ্চিত করেছি। একজন হোস্টেল সুপার, এক বা একাধিক রেসিডেন্ট টিচার এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক হাউস টিউটর ও ধর্মীয় শিক্ষকের সমন্বয়ে হোস্টেল পরিচালিত হয়ে থাকে।

পরিশেষে ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি ও শিক্ষানুরাগী এস. এম. নুরুল হক (সি আই পি) বলেন, ‘শিক্ষার একটি মহৎ উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যক্তিকে সুস্থ, স্বাভাবিক ও অনন্য মানুষরুপে গড়ে তোলা। অভিভাবকের একটি সিদ্ধান্তই সন্তানের অপরিমেয় সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ বিকাশের চূড়ান্ত পথনির্দেশ। আমরা আপনার সন্তানকে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের পাশাপাশি চরিত্রবান ও আদর্শ মানুষরুপে গড়ে তোলার জন্য আন্তরিক পরিচর্যা করার কথা দিলাম।’ বিস্তারিত জানতে ১১৬, চট্টেশ্বরী রোড, চকবাজার এবং ৬২৫৪০৩ এবং
০১৮২০-২৩২০০০ ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।

শেয়ার করুন