চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

এইচএসসি পরবর্তী ক্যারিয়ার হতে চান চার্টার্ড সার্টিফায়েড একাউন্ট্যান্ট?

এস. এম. জাওয়াদ

৪ নভেম্বর, ২০১৯ | ১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সামনে নানাবিষয়ে ক্যারিয়ার গড়ার হাতছানি। পুরো জীবনের গতিপথ ঠিক করবে এইসময়ের সঠিক একটি সিদ্ধান্ত। তাই ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞগনের অভিমত- বেছে নিতে হবে এমন একটি বিষয় যেটি একজন শিক্ষার্থীর মেধার সাথে সাযুজ্যপূর্ণ এবং ভবিষ্যত কর্মবাজারে চহিদাসম্পন্ন। চার্টার্ড সার্টিফায়েড একাউন্ট্যান্সী এমনই একটি প্রফেশনাল কোর্স যা একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ারকে দেশ ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে আন্তর্জাতিক পরিম-লে। এ লেভেল কিংবা উচ্চমাধ্যমিক পাস করে একজন শিক্ষার্থী ফাউন্ডেশন ডিপ্লোমার মাধ্যমে এসিসিএ শুরু করতে পারেন।

এসিসিএ কী? : ‘অ্যাসোসিয়েশন অব চার্টার্ড সার্টিফায়েড অ্যাকাউন্ট্যান্টস’-এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো এসিসিএ (অঈঈঅ)। এটি একটি যুক্তরাজ্যভিত্তিক পেশাদারি প্রতিষ্ঠান, যা ১৯০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ফিন্যান্স ও অ্যাকাউন্ট্যান্সি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে বিশ্বব্যাপী কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। এসিসিএ বাংলাদেশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৮০টি দেশে সব মিলিয়ে ২ লাখ ৮ হাজার এসিসিএর সদস্য আছেন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ ৮৩ হাজার। বাংলাদেশেও এসিসিএর ৩০০’র বেশি সদস্য এবং ৫০০০ শিক্ষার্থী আছেন।

স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের মতো : এসিসিএ (অঈঈঅ) কোনো একাডেমিক ডিগ্রি নয়। এটি একটি পেশাগত দক্ষতার সনদ। এ লেভেল কিংবা উচ্চমাধ্যমিক পাস করে বছরের যেকোনো সময় একজন শিক্ষার্থী ফাউন্ডেশন ডিপ্লোমার মাধ্যমে এসিসিএ শুরু করতে পারেন। অনেক পেশাজীবী কর্মজীবনের পাশাপাশি বাড়তি দক্ষতা অর্জনের জন্য এসিসিএ করেন। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকলে ফাউন্ডেশন ডিপ্লোমা ছাড়াই সরাসরি এসিসিএতে ভর্তি হওয়া যায়। বিশ্বের অনেক দেশে এটি স্বীকৃত ও গ্রহণযোগ্য একটি পেশাগত দক্ষতার সনদ। বিশেষ করে হিসাববিজ্ঞান, ফিন্যান্স বা ব্যবস্থাপনা খাতে যারা সফল ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাঁরা লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য এসিসিএ বেছে নিতে পারেন।
পড়ালেখার নিয়মকানুন : এসিসিএ (অঈঈঅ) এর মূল লক্ষ্য হলো এমন একটি ক্যারিয়ার তৈরি করে দেয়া যা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এবং মূল্যায়িত। তিনটি ধাপে মোট ১৩ টি পেপারের সমন্বয়ে বর্তমানে এসিসিএ কোয়ালিফিকেশনের কোর্স প্ল্যান নির্ধারিত। যেখানে অ্যাকাউন্টিং, ফিন্যান্স, ম্যানেজমেন্ট বা বিজনেস অ্যাকাউন্টিংয়ের মতো বিষয় সম্পর্কে উচ্চতর জ্ঞান লাভ করা যায়।

এসিসিএ-তে বর্তমানে আপনি দুই ভাবে প্রবেশ করতে পারেন। এইচএসসি বা এ-লেভেল এর পর অথবা গ্রাজুয়েশন-এর পর। আপনি যদি গ্র্যাজুয়েশনের পর প্রবেশ করেন তবে আপনাকে এপ্লাইড নলেজ লেভেল (অঢ়ঢ়ষরবফ কহড়ষিবফমব খবাবষ) থেকে শুরু করতে হবে তবে আপনার গ্র্যাজুয়েশনের মেজর বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ক্ষেত্র বিশেষে ছাড় পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে সরাসরি এপ্লাইড স্কিল লেভেল (অঢ়ঢ়ষরবফ ঝশরষষ খবাবষ) থেকে শুরু করতে পারেন। এইচএসসি বা এ-লেভেল এর পর প্রবেশ করলে আপনাকে অঈঈঅ-এর ফাউন্ডেশন কোর্স করে তারপর অঈঈঅ-এর মূল কোয়ালিফিকেশনে প্রবেশ করতে পারবেন।
উচ্চমাধ্যমিক বা এ লেভেল পাস করে এসিসিএ শেষ করতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে ‘ফাউন্ডেশন ডিপ্লোমা’ দিয়ে শুরু করতে হয়। তারপর অ্যাপ্লাইড স্কিলস লেভেলে এসে একজন শিক্ষার্থী চাইলে স্নাতকের সনদ নিতে পারেন। এই পর্যায়ে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ব্রুকস
ইউনিভার্সিটি (ঙীভড়ৎফ ইৎড়ড়শবং

টহরাবৎংরঃু) তে একটি থিসিস এবং
আইইএলটিএস স্কোর জমা দিলে, যাচাই-বাছাইয়ের পর এই বিশ্ববিদ্যালয় বিএসসি (অনার্স) ইন এপ্লাইড একাউন্টিং সনদ দিয়ে থাকে। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে পারে দেশে বসেই। সে ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী ‘অ্যাপ্লাইড অ্যাকাউন্টিং গ্র্যাজুয়েট’ হিসেবে বিবেচিত হবেন।

এই ধাপ পেরোনোর পর আসে কর্মক্ষেত্রে কাজের অভিজ্ঞতা নেওয়ার পালা। অধিকাংশ শিক্ষার্থী তখন তার কর্মক্ষেত্র বেছে নেন। হাতে-কলমে এই অভিজ্ঞতা জরুরি বলেই এসিসিএ-কে পেশাগত দক্ষতার সনদ বলা হয়। সব শেষ ধাপটিকে বলা হয় ‘স্ট্র্যাটেজিক প্রফেশনাল’। এই ধাপের জন্য মোট পাঁচটি ‘প্রফেশনাল পেপার’ শেষ করতে হয়। সঙ্গে দরকার হয় ৩৬ মাস, অর্থাৎ ৩ বছর কাজের অভিজ্ঞতা। ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই পর্যায়ে এসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি ‘এমএসসি ইন প্রফেশনাল একাউন্ট্যান্সী’ (গংপ রহ চৎড়ভবংংরড়হধষ অপপড়ঁহঃধহপু) লাভ করা যায়। পুরো প্রক্রিয়ায় বেশির ভাগ পরীক্ষাই সম্পন্ন হয় অনলাইনে, এসিসিএ-র ‘এক্সাম পার্টনার’ ব্রিটিশ কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে। সম্পূর্ণ ব্রিটিশ কারিকুলামের এই কোর্সের লেখাপড়া ও পরীক্ষা দিতে পারবেন দেশে বসে এবং সকল ডিগ্রী ও সার্টিফিকেট দেবে এসিসিএ, ইউকে (অঈঈঅ-টক)। চাইলে ক্রেডিট ট্রান্সফার করতে পারবেন বিশে^র যে কোন দেশে।

চাকুরী বাজারে চাহিদা : যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই ডিগ্রি সারা বিশ্বেই চাকরির বাজারে সমাদৃত। এসিসিএ (অঈঈঅ) একটা আন্তর্জাতিক ডিগ্রি, তাই দেশে-বিদেশে ব্যাংক, বিমা প্রতিষ্ঠান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং প্রতিষ্ঠান, টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক ও দাতাসংস্থায় সহজেই চাকরি পেতে পারেন এসিসিএ ডিগ্রি নিয়ে।আর এ চাকুরী হয় অত্যন্ত সম্মানজনক ও উচ্চপদে।
কোথায় পড়বেন? : চট্টগ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য নগরীর শিক্ষাপাড়া খ্যাত ও. আর. নিজাম রোড এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এসিসিএ অনুমোদিত চট্টগ্রামের একমাত্র স্টাডি সেন্টার ‘প্রফেশনাল স্কুল অব বিজনেস’
(চৎড়ভবংংরড়হধষ ঝপযড়ড়ষ ড়ভ ইঁংরহবংং), যেটি এসিসিএ-র সিলভার লার্ণিং পার্টনার স্ট্যাটাসপ্রাপ্ত। কারণ অত্যাধুনিক ক্লাস ও স্টাডি ম্যাটেরিয়ালসের মাধ্যমে এখানে পাঠদান করেন এসিসিএ ডিগ্রীধারী (অঈঈঅ-টক ছঁধষরভরবফ)
অভিজ্ঞ শিক্ষকবৃন্দ।

এসিসিএ সম্পর্কিত আরও তথ্য জানতে ভিজিট করতে পারেন তাদের ফেসবুক পেইজ (@চঝই ঈঞএ) অথবা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন- ‘প্রফেশনাল স্কুল অব বিজনেস’, বাড়ী নং-১৪, রোড নং-১, ও আর নিজাম রোড আ/এ, জিইসি, চট্টগ্রাম ঠিকানায় এবং ০১৯৭৮-০০৩০২৯,
০১৯৭৮-০০৩০২৮ নম্বরে। আগামী ৫ নভেম্বর ব্রিটিশ কাউন্সিল, চট্টগ্রাম কর্তৃক আয়োজিত এসিসিএ বিষয়ক সেমিনারে যোগদান করে স্পট এডমিশনের বিশেষ ডিসকাউন্ট এর সুযোগ নিতে পারেন আগ্রহীগণ!

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট