চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্কশপ অন ডিজিটাল হিউম্যানিটিজ অনুষ্ঠিত

বিজ্ঞপ্তি

১৪ অক্টোবর, ২০১৯ | ৫:১৪ অপরাহ্ণ

প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির জিইসি মোড়স্থ ইংরেজি বিভাগের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হল দুইদিন ব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্কশপ অন ডিজিটাল হিউম্যানিটিজ নামক আন্তর্জাতিক কর্মশালা। ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ এবং সাউথ এশিয়ান ফাউন্ডেশন ফর একাডেমিক রিসার্চ (SAFAR) এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালার প্রথম দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশ-বিদেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ। ১ম দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল ১০:৩০ টায়।

ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোলাইমান চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পর্বে স্বাগত বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে কর্মশালায় সবাইকে স্বাগতম জানান ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারি অধ্যাপক সাদাত জামান খান। প্রথম বক্তা সাউথ এশিয়ান ফাউন্ডেশন ফর একাডেমিক রিসার্চের পরিচালক ড. সংগীতা রায়ামাঝি ডিজিটাল হিউম্যানিটিজ সম্পর্কে মূল ধারণা প্রদান করেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল হিউম্যানিটিজ রিসার্চ করার জন্য শিক্ষার্থীদের একটা গ্লোবাল সুযোগ করে দেয়।

বিশেষ অতিথি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম বলেন, ডিজিটাল হিউম্যানিটিজ সাহিত্যপাঠের একটি নতুন মাধ্যম। এর অনেক সুবিধা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি আশংকার ইংগিতও প্রদান করেন। শ্রেণীকক্ষে গুগল ব্যবহার করা যেমন তথ্য সংগ্রহের জন্য সুবিধার, তেমনি বইপাঠের আনন্দ ও গভীরতা থেকে দূরে সরে যাওয়ার শংকারও বটে৷

বরেণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মনজুরুল ইসলাম বলেন, ডিজিটাল হিউম্যানিটিজ হল হিউম্যানিটিজ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এর সমন্বয় যা শিক্ষার্থীদের সামনে তথ্য ও জ্ঞান অর্জনের অসংখ্য দ্বার উন্মোচিত করে। তবে এর নেতিবাচক দিক হল এসমস্ত তথ্য সকলের জন্য উন্মুক্ত হওয়ায় অথোরাইজেশন সুনিশ্চিত করা যায়না। এখানেই ব্যবহারকারীর বিবেক সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির মাননীয় উপাচার্য বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন। মানবসভ্যতার ইতিহাস সংরক্ষণে বিজ্ঞানের ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি বলেন বিজ্ঞানের যেহেতু ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় দিকই রয়েছে, ডিজিটাল হিউম্যানিটিজেরও তেমনি উভয় পক্ষ বিদ্যমান। সর্বপরি, সঠিক উপায়ে ব্যবহার করতে পারলে ডিজিটালাইজেশন একটি আশীর্বাদ বটে।

অনুষ্ঠানের মূল বক্তা ইন্সটিটিউট অব এডভান্সড কমিউনিকেশন, এডুকেশন এন্ড রিসার্চের অধ্যক্ষ অধ্যাপক অরুণ গুপ্ত ডিজিটাল হিউম্যানিটিজের সম্ভাবনা ও সমস্যার কথা উল্লেখ করে ব্ল্যাকবোর্ড নামক একটি ওয়েবসাইটের কথা বলেন যা মূলত ভৌগোলিক দূরত্বের গ্লানিকে মুছে দিয়ে সাউথ এশিয়ান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ করার একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম।

অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহিত উল আলম। তিনিও ডিজিটাল হিউম্যানিটিজের হুমকির কথা মাথায় রেখে বিজ্ঞানের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে প্রথম পর্ব শেষ করেন।

এরপর মধ্যাহ্নভোজের বিরতি কাটিয়ে শুরু হয় মূল ওয়ার্কশপ। ১ম দিনের কর্মশালা পরিচালনা করেন অধ্যাপক ড. অরুণ গুপ্ত। তার সঙ্গে সহ-পরিচালনার কাজ করেন নেপালের গবেষক শংকর এবং সিধুনাথ। প্রথম দিনের সেশনে মূলত ডিজিটাল হিউম্যানিটিজ নিয়ে পরিষ্কার ধারণা দেওয়া হয়। ইন্টারকানেক্টিভিটি শীর্ষক কর্মশালায় ডিজিটাল হিউম্যানিটিজকে কিভাবে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা ও শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা যায়, তাই শেখান অধ্যাপক গুপ্ত।দ্বিতীয় সকালের দুটি সেশনই পরিচালনা করেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তৌফিক সাঈদ৷ প্রথম সেশনে ব্লগ এবং ওয়েবসাইট বানানো শেখান অধ্যাপক সাঈদ। পরবর্তী সেশনে তিনি নিজে হাতে-কলমে উপস্থিত অংশগ্রহণকারীদের দিয়েই ব্লগ সাইট তৈরি করান। ডিজিটাল হিউম্যানিটিজে ব্লগের ভূমিকা অসামান্য। এতে বিভিন্ন তথ্যবহুল লেখা আর্কাইভ করে রাখা যায়।

দুপুরের খাবারের বিরতির পরে শেষ সেশন পরিচালনা করেন নেপালের গবেষক রেনুকা, শংকর এবং সিধুনাথ। স্থিরচিত্র ও চলমান চিত্র কিভাবে ডিজিটাল হিউম্যানিটিজকে আর্কাইভ করতে সহায়তা করে, তা-ই মূলত আলোচনা করেন তারা। ব্ল্যাকবোর্ড নামের ওয়েবসাইটে অংশগ্রহণকারীদের নিবন্ধন করতে উৎসাহিত করে অনলাইন কোর্স ও অনলাইন ক্লাসের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন নেপালের এই তরুণ প্রজন্মের শিক্ষক ও গবেষক।

সবশেষে অংশগ্রহণকারীদের সার্টিফিকেট প্রদানের মাধ্যমে শেষ হয় দুইদিন ব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্কশপ অন ডিজিটাল হিউম্যানিটিজ।

পূর্বকোণ/টিএফ

শেয়ার করুন