চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

শীর্ষ এক হাজারে নেই ঢাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ৬:৪৪ অপরাহ্ণ

প্রতি বছর বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‌্যাংকিং প্রকাশ করে লন্ডনভিত্তিক শিক্ষা বিষয়ক সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন। শিক্ষার পরিবেশ, গবেষণার সংখ্যা ও সুনাম, সাইটেশন বা গবেষণার উদ্ধৃতি, এখাত থেকে আয় এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বা সংশ্লিষ্টতাসহ ৫টি মানদণ্ড বিশ্লেষণ করে তৈরি করা হয় এই তালিকা।

এবার ৯২টি দেশের ১৩০০ বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তালিকাটিতে। সেই তালিকায় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান এক হাজারের পরের দিকে। তবে শুধুমাত্র বাংলাদেশের এই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ই তালিকায় স্থান পেয়েছে।

র‌্যাংকিংয়ে বিদেশি ছাত্রের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে শূন্য। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালটির ৪১০৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে নেই কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী কিংবা থাকলেও সেই সংখ্যা খুব একটা সন্তোষজনক নয়।
২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টিরর অবস্থান ছিল ৬শ থেকে ৮শ’র মধ্যে। তবে এর দুই বছর পরেই এটির অবস্থান হঠাৎই নেমে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান গিয়ে দাঁড়ায় এক হাজারেরও পরে২০১৮ সালে ।

এ বছরই মে মাসে লন্ডনভিত্তিক সাময়িকীটি এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করে। সেই তালিকায় উল্লেখিত এশিয়ার ৪১৭ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে  উল্লেখ ছিল না বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও। সে সময় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার মান ও গবেষণার সুযোগ নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছিল।

এর মধ্যে আগের বছরগুলোর তুলনায় গবেষণা, উদ্ধৃতি এবং আয়-এই তিনটি খাতে উন্নতি হলেও ২০১৬ সালের পর থেকে ব্যাপকহারে নেমে গেছে শিক্ষার পরিবেশের গ্রাফ চিত্র। এদিকে, তালিকাটি ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, বেশ ভালো করেছে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত এবং পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এ তালিকায় ভারতের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে তিনশ থেকে শুরু করে এক হাজারের মধ্যে। এর মধ্যে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এমনকি রাজনীতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অস্থিতিশীল দেশ পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থানও বাংলাদেশের চেয়ে ভালো।
তালিকায় এক হাজারের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে প্রথম ৫শ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে ইসলামাবাদের কায়েদ-ই-আজম ইউনিভার্সিটি।

এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে চীন এবং জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তালিকায় উঠে এসেছে উল্লেখযোগ্য হারে। এছাড়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত ইরানের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ও  স্থান পেয়েছেএ তালিকায়।

এদিকে, বরাবরের মতোই এই তালিকায় কর্তৃত্ব করছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর। এ বছরের তালিকার প্রথম ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সাতটিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। যার মধ্যে রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইয়েল ইউনিভার্সিটি। তবে চতুর্থবারের মতো এই বছরও তালিকায় প্রথম স্থানটি দখলে নিয়েছে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড। তৃতীয় স্থানে রয়েছে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি। আর দশম স্থানে রয়েছে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন।

তালিকা নিয়ে এক বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে যে, যুক্তরাজ্যের কথিত ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল’ অর্থাৎ অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ এবং লন্ডন ইউনিভার্সিটি বরাবরের মতোই খুব ভালো করছে।
তবে এর ফলে যুক্তরাজ্যের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সুনাম ঢাকা পড়ে যাচ্ছে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
আরো বলা হচ্ছে যে, জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ব্যাপক হারে উন্নতি করছে। ২০১৬ সালের পর থেকে প্রথম ২০০টির মধ্যে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৪টি থেকে কমে ২৮-এ নেমে এসেছে।
কিন্তু এই তালিকায় জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা তিনটি থেকে বেড়ে ২৩টি হয়েছে।

টাইমস হায়ার এডুকেশনের এক বিশ্লেষণে বলা হয়, এর মানে হচ্ছে উল্লেখযোগ্য হারে জার্মানি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থায় বিনিয়োগ বাড়িয়েছে।

পূর্বকোণ/রাশেদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট