চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

নৈতিক শিক্ষায় বেড়ে উঠুক শিশু শিক্ষার্থী!

ফেরদৌস আরা

২৬ আগস্ট, ২০১৯ | ১২:৪৯ পূর্বাহ্ণ

জ্ঞান মানুষকে মনুষ্যত্ব দান করে। কিন্তু শুধু পুঁথিগত জ্ঞানই কি মনুষ্যত্ব অর্জনে যথেষ্ট? পুঁথিগত জ্ঞান মানুষকে আলোর পথ দেখায়। অ-জানাকে জানা, অ-দেখাকে দেখার স্পৃহা বাড়িয়ে দেয়। মানুষকে করে তোলে বিজ্ঞ। কিন্তু এ বিজ্ঞতার সাথে নৈতিকতার স্পর্শ না থাকলে মানুষের মনুষ্যত্ব অর্জন সম্পূর্ণ হয় না। তাইতো মানুষকে সততা ও নৈতিকতার অনুশীলন করতে হয়। আর এ অনুশীলন করতে হয় শিশুকাল থেকেই। শিশু শিক্ষর্থীদের নৈতিকতার অনুশীলনে “৪ গধমরপ ডড়ৎফং” অনুশীলনের বিকল্প নেই।
(ঝধষধস, চষবধংব, ঝড়ৎৎু, ঞযধহশ ণড়ঁ) এ চারটি শব্দকেই আমরা বলি “৪ গধমরপ ডড়ৎফং”। কারণ এ শব্দগুলোর প্রয়োগ মানুষের জীবনে যাদুকরী প্রভাব ফেলে। একজন মুসলিম অপর এক মুসলিমকে দেখে বলেন ‘আছ্ছালামু আলাইকুম’ এর অর্থ হলো ‘আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক’। উত্তরে অপর মুসলিমও বলেন ‘ওয়ালাইকুম আছছালাম’ যার অর্থ হলো ‘আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক’। সালাম দেয়া ও সালামের উত্তর দেয়ার ধর্মীয় গুরুত্ব অনেক। শুধু মুসলিমই নয়, অন্য সব ধর্মের অনুসারিরাও নিজ নিজ ধর্ম অনুসারে একে অন্যের সাথে দেখা হলে
‘প্রনাম’ করেন। দেখা হলে অন্যকে অভিভাদন জানানোর এ অভ্যাসটি মানুষকে শিশুকাল হতে অর্জন করতে হয়। এটি মানুষকে ভদ্র ও মার্জিত করে তোলে।
মানুষের বিনয়ীভাব প্রকাশ করে চষবধংব শব্দটি। অন্যের কাছ থেকে কিছু চাইতে হলে চষবধংব শব্দটি ব্যবহার করতে হয়। এ শব্দটির যেন এক যাদুকরী শক্তি আছে। যার মাধ্যমে অনেক অসম্ভব কাজও সম্ভব করা যায়। দৈনন্দিন জীবনে এ শব্দের ব্যপক ব্যবহার মানুষকে অহংকার মুক্ত করে ও বিনয়ী করে তোলে।
কাউকে কষ্ট বা আঘাত দিলে অথবা কারো প্রতি কোন অন্যায় করলে আমরা ঝড়ৎৎু বলি। ঝড়ৎৎু শব্দটির যথাযথ ব্যবহার মানুষের প্রতি সহমর্মিতার ভাব বাড়িয়ে দেয় ও মমত্ববোধ জাগ্রত করে। আবার ঝড়ৎৎু বলার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে অপরাধ বোধ অনুভূত হয়। ফলে মানুষের ভুল বা অন্যায় করার প্রবণতা কমে আসে।
ঞযধহশ ণড়ঁ শব্দটি ব্যবহার করে মানুষ একে অন্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। এ শব্দের ব্যাপক ব্যবহার পরস্পরের মাঝে আন্তরিকতার সম্পর্ক দৃঢ় করে। মানুষ হয়ে উঠে পরোপকারী ও পরস্পরের প্রতি অধিক যতœশীল।
প্রকৃতপক্ষে ঝধষধস, চষবধংব, ঝড়ৎৎু, ঞযধহশ ণড়ঁ এ চারটি শব্দেরই এক অদ্ভুত ও অকল্পনীয় শক্তি রয়েছে। যা দিয়ে মানুষ হয়ে উঠে ভদ্র-বিনয়ী, অহংকারমুক্ত ও পরোপকারী। কিন্তু এ গুনগুলোর সব একসাথে একদিনে অর্জন করা সম্ভব হয় না। অনেকদিনের অভ্যাসগত আচারণই মানুষকে সব ভালো গুনের অধিকারী হতে সাহায্য করে। তাইতো অভ্যাসটি গড়ে তুলতে হয় ছোটবেলা থেকেই। আর এসব ভালগুন অর্জনে পরিবার ও পারিবারিক পরিবেশ সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। পরিবারের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পারে শিশু শিক্ষার্থীকে নৈতিক সব গুন অর্জনে সাহায্য করতে। ঊফঁপধঃরড়হ, উরংপরঢ়ষরহব ধহফ গড়ৎধষরঃু এ তিনটি মূলমন্ত্রকে ধারণ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতে নেতৃত্বদানকারী ভালো মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে কর্নেল আবু নাসের মোঃ তোহা, বিএসপি, এসজিপি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি (অবঃ) (চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের বিদায়ী অধ্যক্ষ যিনি চট্টগ্রাম বিভাগে একাধিকবার শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন) স্যারের নির্দেশনায় অভিজ্ঞ ও তরুণ শিক্ষকম-লীর গুনগত মানের শিক্ষাদান পদ্ধতিতে দীপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে চলছে নগরীর ‘লিডার্স স্কুল এন্ড কলেজ চট্টগ্রাম’। শিশু শিক্ষার্থীকে পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে এ প্রতিষ্ঠানে ৪ গধমরপ ডড়ৎফং অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে অনুশীলন করানো হয়। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে প্রদর্শিত হচ্ছে ৪ গধমরপ ডড়ৎফং যাতে শিক্ষার্থীরা শব্দগুলো দেখে আনন্দ ও আন্তরিকতার সাথে অনুশীলন করতে পারে। আমি বিশ^াস করি এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একদিন ভালোমানুষ তথা সোনার বাংলার সোনার মানুষ হয়ে জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার হবে।
উপাধ্যক্ষ
লিডার্স স্কুল এন্ড কলেজ চট্টগ্রাম

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট