চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

নৈতিক ও আদর্শ প্রজন্ম গঠনে কর্ণফুলী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ

৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ | ১:৪২ অপরাহ্ণ

নৈতিকতা বোধ না শিখে আমরা যদি অনেক বেশি শিক্ষিত হয়ে যাই, দক্ষ হই তা হলেও সেই শিক্ষার কোনো মূল্য নেই। এজন্য সঠিক শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধও শেখাতে হবে।আমাদের সমাজের নৈতিক অবক্ষয়কে জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি এক ধরনের হুমকি বলা যায়। নীতি হচ্ছে ন্যায়বান ব্যক্তি। শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে নীতি-নৈতিকতা খুব জরুরি। এই বাস্তবতার আলোকে সুষম ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও চরিত্রবান যোগ্য নাগরিক সৃষ্টির লক্ষ্যকে সামনে রেখে কে.বি আমান আলী রোড, চকবাজারে কর্ণফুলী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয় যা বর্তমানে চট্টগ্রামে একটি মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুনাম অর্জন করেছে। বিশেষ করে করোনাকালে এই স্কুলটি ফেসবুক ও জুম মাধ্যমে সকল শ্রেণির ক্লাস চালু রেখেছে । সিলেবাস শেষে টার্মিনাল পরীক্ষাও নিয়েছে! স্কুলের ধারাবাহিক এই অনলাইন ক্লাস এবং পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় নিমগ্ন রেখে শিক্ষাজীবন সচল রাখতে বিশেষ সাফল্য, সচেতন অভিভাবকমণ্ডলীর কাছে দারুণ প্রশংসিত হয়েছে।

স্কুলের নির্বাহী পরিচালক শিক্ষাবিদ প্রফেসর মো. খায়রুজ্জামান জানান শিক্ষামন্ত্রণালয় ও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড অনুমোদিত (EIIN-134444) প্রি নার্সারী থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ পরিচালনায় আদর্শ এই বিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য নানা বৈশিষ্ট সম্মন্ধে।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক মণ্ডলী : মানসম্মত শিক্ষাদানের জন্য মেধাবী, দক্ষ, পরিশ্রমী ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক-শিক্ষিকার বিকল্প নেই। উন্নত বিশ্বের আধুনিক শিক্ষাপদ্ধতির অনুকরণে নিয়মিত বিষয়ভিত্তিক Workshop ও Practise Teaching সহ আধুনিক পদ্ধতি, নবতর কলাকৌশল প্রয়োগ করে পাঠদান সহজতর, আকর্ষণীয় ও বিজ্ঞানসম্মত করার জন্য গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে এবং মাস্টার ট্রেইনার দ্বারা সৃজনশীল ট্রেনিং প্রদান করে শিক্ষকদের দক্ষতা ও কৌশল উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করা হয়।২০২৩ শিক্ষা কারিকুলাম রুপরেখা বাস্তবায়নে বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে আমাদের স্কুলের সকল শিক্ষকশিক্ষিকা।
পাঠদান পদ্ধতি : বর্তমান শিক্ষা সম্পূর্ণ প্রাইভেট ও কোচিং নির্ভর। এই কঠিন বিষয়কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী প্রতিটি বিষয়ে পাঠ দান করা হয়। ৮ম, ৯ম এবং ১০ম শ্রেণীতে প্রতিদিন প্রথম ২০ মিনিট পূর্ববর্তী দিনের পড়ার উপর পরীক্ষা নেয়া হয়। ফলে বাসায় প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে পড়া শিখতে হয়। আবার শ্রেণীর পঠিত বিষয়ের উপর রয়েছে প্রশ্নোত্তর পর্ব। ফলে কোন বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকলে তা ক্লাসেই পরিষ্কার হয়ে যায়। তারপরও ক্লাসে পড়া আদায় সন্তোষজনক না হলে তাদের জন্য রয়েছে ডিটেনশন ক্লাস। যেখানে নির্দিষ্ট শিক্ষকের সামনে পড়া মুখস্থ করে দিতে হবে, নয়তো ছুটি মিলবেনা। প্রি-নার্সারী হতে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে একই ব্যবস্থা।নানা শিক্ষা উপকরণের সাহায্যে আনন্দময় পরিবেশে ক্লাসের পড়া মুখস্থ করে আদায় করা হয়। ক্লাসে যা বোঝা যায়নি সে বিষয়গুলো পুনরালোচনা করা হয়। লেখাপড়ার মান বজায় রাখতে স্কুলে উপস্থিতি হার শতভাগ নিশ্চিত করা জরুরী। তাই আমরা প্রতিটি অভিভাবকের ফোন নম্বর সংরক্ষণ করে কোন ছাত্র ছাত্রী অনুপস্থিত থাকলে কারণ জানতে চেয়ে অভিভাবককে ফোন করি। ফলে আমাদের স্কুলে উপস্থিতির হার প্রায় শতভাগ। শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট কোচিং এবং গাইড বই এর উপর নির্ভরতা দূর করতে বিভিন্ন বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের উপর মানসম্মত হ্যান্ডনোট ও লেকচারশীট প্রদান করা হয়।

মাল্টিমিডিয়া ক্লাস : বিশ্বায়নের এই যুগে সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে নানা কার্যক্রম নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্য প্রতিটি ক্লাসে বিভিন্ন্ বিষয়ে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে পাঠদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা একটি শিক্ষাবান্ধব পরিবেশে দ্রুত বেশ কিছু পাঠ আত্মস্থ করতে পারে। পাশাপাশি এ্যাপসের মাধ্যমে নিয়মিত উপস্থিতি ,বাড়ির কাজসহ অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য জানার সুযোগ রয়েছে।
কম্পিউটার ল্যাব ও বিজ্ঞানাগার : প্রগতিশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে ও নিজেকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে হলে কম্পিউটার জ্ঞান এর বিকল্প নেই। যার ফলস্বরূপ ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কম্পিউটার শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শিক্ষার্থীকে কম্পিউটার জ্ঞানে সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার জন্য আমাদের রয়েছে অনলাইন সুবিধাসম্বলিত আধুনিক সুসজ্জ্বিত ও সমৃদ্ধ কম্পিউটার ল্যাব।বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদেও জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ রসায়ন,জীব এবং পদার্থ বিজ্ঞান ল্যাব ।
ডে-কেয়ার ব্যবস্থা : কর্মব্যস্ত অভিভাবক ও নিয়ন্ত্রণহীন সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকের সন্তানদের গতিশীল, সমৃদ্ধ ও সুনিয়ন্ত্রিত লেখাপড়ার জন্য অত্র প্রতিষ্ঠানে আছে সকাল ৮ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডে-কেয়ারের ব্যবস্থা। যেখানে তাদের ধর্মীয় অনুশাসন, স্কুলের যাবতীয় লেখপড়া পুনরায় প্রাইভেট টিচারের মাধ্যমে বিষয় ভিত্তিক বুঝানো, শেখানো ও আদায় করার ব্যবস্থাসহ মানসম্মত টিফিন, নাস্তা ২ বেলা ও দুপুরের খাবার ও ইনডোর ও আউটডোর গেমসের ব্যবস্থা থাকবে।
আবাসিক ব্যবস্থাপনা : এ প্রসংগে অধ্যক্ষ সমরজিৎ দাস বলেন,উন্নত ভবিষ্যতের জন্য সুশৃঙ্খল জীবনের বিকল্প নেই।তাই, শৃঙ্খলা ও পারিবারিক আবহের সমন্বয়ে আমরা হোস্টেল অর্থাৎ আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বন্দোবস্ত করেছি উন্নত শিক্ষাপদ্ধতি,নিয়মানুবর্তিতা প্রশিক্ষণ,স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য মাসিক হেলথ চেক আপ , নিয়মিত ব্যায়াম ,মুসলিম শিক্ষার্থীর জন্য নামাজ ও কোরআন শিক্ষা,অন্য ধর্মাবলম্বীদের স্ব-স্ব ধর্মীয় অনুশাসন,চিত্ত বিনোদনের জন্য ইনডোর ও আউটডোর গেমস এবং ত্রৈমাসিক দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন।মানসম্মত খাবার সরবরাহে আমরা আপোষহীন। সার্বক্ষণিক শিক্ষকমন্ডলী ও বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের দ্বারা কোচিং ক্লাস পরিচালনার মাধ্যমে পরিচালিত হবে শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত বিনির্মাণের পথ নির্দেশক এই আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা।
সহ পাঠক্রমিক কার্যাবলী : ছাত্র ছাত্রীদের মানসিক প্রবৃদ্ধির জন্য বিনোদনমূলক কর্মকান্ডের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সামগ্রিক বিকাশ এবং সুপ্ত প্রতিভাকে জাগিয়ে তুলতে সঙ্গীত, আবৃত্তি, বক্তৃতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। রয়েছে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অভিভাবক সমাবেশ, শিক্ষা সফর, আবাসিক ছাত্রদের আউটিং, ক্লাস পার্টিসহ জাতীয় দিবস সমূহের সাড়ম্বর আয়োজন।

এইভাবেই শিশুদের বোধগম্য পদ্ধতিতে আন্তরিক পাঠদান, প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষাধারা, কঠোর শৃঙ্খলায় সু-ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিগত এক যুগ ধরে চট্টগ্রামবাসীর আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে এবং প্রতি বছর বেসরকারী বৃত্তি পরীক্ষায় প্রচুর ছাত্র-ছাত্রীর বৃত্তি লাভ এবং এসএসসি পরীক্ষায় এ+ সহ শতভাগ পাশ করার মত কৃতিত্ব অর্জন করেছে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিস্তারিত জানতে ধুনির পুল, কেবি আমান আলী রোড, চকবাজার এই ঠিকানায়, karnaphuli public school & college ফেইস বুকে এবং ০১৯১৭-৭০৬৩১১,০১৮৪৮-৩৪৩৮৮৮ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে ।

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট