চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মুজিব আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হোক মুজিববর্ষে

জুবায়ের আহমেদ

২২ জানুয়ারি, ২০২০ | ৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালি জাতির জনক, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশের বঙ্গ প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতী ইউনিয়নের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন। বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির জনকের শততম জন্মবার্ষিকীকে মুজিববর্ষ হিসেবে আখ্যায়িত করে নানা আয়োজনের মাধ্যমে শততম জন্ম সালটিকে স্মরণীয় করে রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের পেছনে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদান, ত্যাগ, জেল জুলুম, অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করলেও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাত্রিতে সপরিবারে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হন তিনি। বাংলাদেশে ক্ষমতার রাজনীতির দ্বন্দ্বে সবসময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতি প্রাপ্য সম্মান জানানো হলেও বঙ্গবন্ধু তনয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা যখনই সরকার গঠন করেছেন, প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তখনই জন্মদাতা পিতার চেয়েও বেশি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে জাতির জনকের প্রতি যথাযথ মর্যাদা প্রদর্শন করেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সকল অঙ্গসংগঠন ও সমর্থকদের উদ্বুদ্ধ করছেন জাতির জনকের মতোই দেশের জন্য কাজ করার বিষয়ে।

২০০৮ সাল থেকে বর্তমান অবধি টানা ক্ষমতায় থাকা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, সমর্থকরা মুজিব আদর্শের বুলি আওড়ালেও বাস্তবিক পক্ষে দেশের জন্য, দশের জন্য সারা জীবন তিনি যে ত্যাগ, পরিশ্রম, সংগ্রাম করে গেছেন তা অনেকেই জানে না, জানলেও মানে না। বিগত এক দশকে মুজিব আদর্শ লালন করে জীবন যাপন করছেন এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন, এমন নেতাকর্মী কিংবা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খুব বেশি দেখা যায়নি বাংলাদেশে। মুজিব আদর্শের খই ফোটানো ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকের কর্মকান্ডে স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ এবং তিনি বিভিন্নভাবে পদক্ষেপও নিয়েছেন সে সকল ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুকাল থেকেই ছিলেন জনদরদী। শিশু মুজিব দরিদ্র ও অসহায় ছাত্রদের শিক্ষা গ্রহণের জন্য নিজ পরিবারসহ পাড়া-প্রতিবেশী থেকে চাল সংগ্রহ করে অনেক ছাত্রের লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছেন। ছাত্র জীবন থেকে দেশ স্বাধীন পর্যন্ত অসংখ্যবার কারাবরণ করা মুজিব নিজ আদর্শ ও দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করা থেকে সরে যাননি, তৎকালীন পাকিস্তানের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য পাকিস্তানীদের শত বাধাবিপত্তিকে উপেক্ষা করে তিনি মানুষের জন্য লড়াই করেছেন, অধিকাংশ সময়েই অসহায় জীবন যাপন করেছেন। পাকিস্তানীরা বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে আখ্যায়িত করলেও তিনি সুকৌশলে এগিয়েছেন কাক্সিক্ষত স্বাধীনতার দিকে।
বহু দেশ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের উপর আক্রমণ হতে পারে, সে বার্তা দিলেও বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করেছিলেন তার অফিসারদের, তিনি বলেছিলেন সবাই তার সন্তান, তারা এমন কাজ করতেই পারে না। তিনি আরোও বলেছিলেন প্রাণের ভয়ে তিনি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নেবেন না। বঙ্গবন্ধু মৃত্যুর শংকার কথা জেনেও জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চাননি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুরো জীবনকাল ছিলো দেশ ও দেশের কল্যাণের জন্য নিবেদিত। যেখানে ছিলো না বিলাসিতা, ছিলো না অর্থের লোভ, ছিলো না হিংসা, বিদ্বেষ, ছিলো দেশের জন্য ও সাধারণ মানুষদের ভালোবাসা ও ভালো রাখার প্রচেষ্টায় ভরা বিশাল হৃদয়। তাই মুজিববর্ষে প্রত্যাশা শুধুমাত্র মুখেই নয়, মুজিব আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হোক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনকালের নানা জনকল্যাণমুখী কাজের মতো কর্ম দিয়ে।
প্রত্যাশা থাকবে বাঙালি জাতির জনকের আদর্শের রাজনীতির বাহক হবে আওয়ামীলীগ ও সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থকরা এবং দেশের সকল তরুণরা। যারা দেশের তরে বঙ্গবন্ধুর মতোই নিঃস্বার্থে কাজ করবে, অহংকারমুক্ত থাকবে, মানুষের সাথে মানুষের ভেদাভেদ না করে সকল ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিতের মাধ্যমে সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়বে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট