চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জয় মৃত্যুঞ্জয়ের জয়। শুভ মুজিববর্ষ প্রসঙ্গে

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

১০ জানুয়ারি, ২০২০ | ৩:৪৬ পূর্বাহ্ণ

বাঙালির বঙ্গবন্ধু বিশ্ববন্ধু শেখ মুজিব। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। ১৭ মার্চ ১৯২০ সাল ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামের মধ্যবিত্ত সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে তাঁর জন্ম। এক মহান আধ্যাতিœক পুরুষ শেখ বোরহানউদ্দিন এই শেখ বংশের গোড়াপত্তন করেছিলেন। মোগল আমলের স্মৃতিময় দালানগুলোই অতীতের এই পরিবারের সুদিনের সাক্ষ্য বহন করে চলেছিল। ‘অসমাপ্ত আতœজীবনী’ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, “একটা দালানে আমার এক মামা আজও কোনোমতে দিন কাটাচ্ছেন। আর একটা দালান ভেঙ্গে পড়েছে, যেখানে বিষাক্ত সর্পকুল দয়া করে আশ্রয় নিয়েছে। এই সকল দালান চুনকাম করার ক্ষমতা আজ তাদের অনেকেরই নাই। এই বংশের অনেকেই এখন এ বাড়ির চারপাশে টিনের ঘরে বাস করেন। আমি এই টিনের ঘরের এক ঘরেই জন্মগ্রহণ করি।”

আমরা অবগত আছি যে, ভারতের জাতির পিতা পরম শ্রদ্ধেয় মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সত্য; আতœার অমিয় শক্তিতে বিশ্বাসী অহিংস সংগ্রাম; শান্তি ও কালজয়ী মানবতার জন্য ‘মহাতœা’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর উদ্দেশে বিশ্বজয়ী বিজ্ঞানী প্রফেসর আইনস্টাইন বলেছিলেন, ‘আমাদের তুমিই একমাত্র ভরসা, তোমার পদচিহ্নই আগামীকালের পৃথিবীর কক্ষপথ’। রবীঠাকুর তাঁকে ‘ঋতুরাজ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। আজ বাঙালির বঙ্গবন্ধু বিশ্বপরিম-লে একই ধারাবাহিকতায় স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ভাবনা-সংগ্রাম-ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর শোষিত-বঞ্চিত-স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠীর বিশ্ববন্ধু হিসেবে নন্দিত ও সমাদৃত। বঙ্গবন্ধুর জন্মেই যেন বাঙালি জাতি শুনতে পেয়েছিল রবীঠাকুরের সেই ‘অচেনা’ কবিতার নাদিত নান্দীপাঠ, “রে অচেনা, মোর মুষ্টি ছাড়াবি কী ক’রে/যতক্ষণ চিনি নাই তোরে?/কোন অন্ধক্ষণে বিজড়িত তন্দ্রাজাগরণে/রাত্রি যবে সবে হয় ভোর, মুখ দেখিলাম তোর।”

বস্তুতপক্ষে: বঙ্গবন্ধুর জীবনচরিত, জীবন-সমাজ-রাষ্ট্র-শিক্ষাদর্শন, বৈশ্বিক সম্পর্ক ইত্যাদি পর্যালোচনায় এটি বরাবরই প্রতীয়মান হয়েছে, তিনি ছিলেন অনগ্রসর বাঙালি সমাজের বিদ্যমান সকল কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামী, মানবাধিকার বিরোধী কার্যকলাপ, শোষণ-বঞ্চণার কঠিন অন্ধকার দূরীভূত করে বাঙালি জাতি-সত্ত্বার ভিত্তিতে আধুনিক-গণতান্ত্রিক-সমাজতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা। তাঁর সততা, সত্যবাদীতা, নির্ভীক সাহসিকতা, অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা, দেশপ্রেম, মাটি ও মানুষের প্রতি নিখাঁদ ভালোবাসা ছিল অতুলনীয়। এদেশের সমগ্র জনগণ তাঁর নেতৃত্বে আস্থাশীল হয়ে অকাতরে ত্রিশ লক্ষ প্রাণ এবং দুই লক্ষ জননী-জায়া-কন্যার সর্বোচ্চ প্রপতন বিসর্জনে অর্জন করেছে এই স্বাধীন মাতৃভূমি। রবীঠাকুরের ভাষায় আবারো ব্রততী চরণে বলতে হয়, ‘হে অচেনা, দিন যায়, সন্ধ্যা হয়, সময় রবে না,/মহা আকস্মিক বাধাবন্ধ ছিন্ন করি দিক,/তোমারে চেনার অগ্নি দীপ্তশিখা উঠুক উজ্জ্বলি,/দিব তাহে জীবন অঞ্জলি।’

১৯৬৯, ৫ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক রাজনীতিক বাংলার দুই অবিসংবাদিত জননেতা শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা ফজলুল হকের মাজার সংলগ্ন আয়োজিত শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীর ভাষণে অত্যন্ত আবেগে ভরা কন্ঠে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “এদেশের বুক হইতে, মানচিত্রের পৃষ্টা হইতে ‘বাংলা’ কথাটির সর্বশেষ চিহ্নটুকুও চিরতরে মুছিয়া ফেলার চেষ্টা করা হইয়াছে। …. একমাত্র বঙ্গোপসাগর ছাড়া আর কোনো কিছুর নামের ‘বাংলা’ কথাটির অস্তিত্ব খুঁজিয়া পাওয়া যায় নাই।” তাই সেইদিন বাঙালি জাতির চিরায়ত ঐতিহ্যিক এই আবাসভূমিকে পূর্ববঙ্গ বা পূর্ববাংলা নয় ‘বাংলাদেশ’ নামেই এটির নামকরণ করেছিলেন। জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকের ভাষায়, এই ঘোষণার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু তাঁর এবং বাঙালি জাতির মধ্যে অবিচ্ছেদ্য আঙ্গিক সম্পর্ক নির্মাণ করেছেন। এটিই ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের অভীষ্টতম চারণক্ষেত্র।
৬ জানুয়ারি ১৯৭০ বঙ্গবন্ধু এবং শ্রদ্ধেয় নেতা এইচএম কামারুজ্জামান যথাক্রমে পাকিস্তান আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সকলের জানা আছে যে, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে প্রচ- মনোবেদনায় বঙ্গবন্ধু ছিলেন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং বিরূপ অভিজ্ঞতায় ক্ষুব্ধ। সে সময় নির্বাচনী প্রচার অভিযানে বঙ্গবন্ধু তাঁর অপরিমেয় জনপ্রিয়তা সম্পর্কে সম্যক উপলব্ধি-ঋদ্ধ হলেন। বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, “আমি যে গ্রামেই যেতাম, জনসাধারণ শুধু আমাকে ভোট দেওয়ার ওয়াদা করতেন না, আমাকে বসিয়ে পানদানের পান এবং কিছু টাকা আমার সামনে নজরানা হিসেবে হাজির করত এবং না নিলে রাগ করত। তারা বলত, এ টাকা নির্বাচনের খরচ বাবদ দিচ্ছে। আমার মনে আছে খুবই গরিব এক বৃদ্ধ মহিলা কয়েক ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে, শুনেছে এই পথে আমি যাব, আমাকে দেখে আমার হাত ধরে বলল, ‘বাবা আমার এই কুঁড়ে ঘরে তোমায় একটু বসতে হবে।’

বঙ্গবন্ধু আরো লিখেছেন, “আমি তার হাত ধরেই তার বাড়িতে যাই। অনেক লোক আমার সাথে, আমাকে মাটিতে একটা পাটি বিছিয়ে বসতে দিয়ে এক বাটি দুধ, একটা পান ও চার আনা পয়সা এনে আমার সামনে ধরে বলল, ‘খাও বাবা, আর পয়সা কয়টা তুমি নেও, আমার তো কিছুই নাই।’ আমার চোখ দিয়ে পানি এল। আমি দুধ একটু মুখে নিয়ে, সেই পয়সার সাথে কিছু টাকা তার হাতে দিয়ে বললাম, ‘তোমার দোয়া আমার জন্য যথেষ্ট, তোমার দোয়ার মূল্য টাকা দিয়ে শোধ করা যায় না।’ টাকা সে নিল না, আমার মাথায় মুখে হাত দিয়ে বলল, ‘গরিবের দোয়া তোমার জন্য আছে বাবা।’ নীরবে আমার চক্ষ ুদিয়ে দুই ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়েছিল, যখন তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসি। সেই দিনই আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, মানুষের ধোঁকা আমি দিতে পারব না।” নিঃসংকোচে, নিঃসন্দেহে, দৃঢ়ভাবে বলা যায়; এই ব্রত ব্যঞ্জনার কোথাও কখনো ন্যূনতম ব্যত্যয় ঘটেনি এই মহান নেতার জীবনে। রবীঠাকুরের ‘বিস্ময়’ কবিতায় আবারো ফিরে যেতে হয়, ‘আবার জাগিণু আমি।/রাত্রি হ’ল ক্ষয়।/পাপড়ি মেলিল বিশ্ব।/এই তো বিস্ময় অন্তহীন।’
ভারতের প্রাক্তন মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু শ্রী প্রণব মুখার্জী তাঁর ‘ঞযব উৎধসধঃরপ উবপধফব – ঞযব ওহফরৎধ এধহফযর ণবধৎং’ গ্রন্থের প্রথম অধ্যায়ে (গঁশঃরলঁফফযড়:ঞযব গধশরহম ড়ভ ইধহমষধফবংয) খ্যাতিমান মার্কিন কূটনীতিক অৎপযবৎ ক. ইষড়ড়ফ’ গ্রন্থের (ঞযব ঈৎঁবষ ইরৎঃয ড়ভ ইধহমষধফবংয) উদ্ধৃতি উল্লেখ করেছেন। অৎপযবৎ বলেছেন, ‘ঝরহপব রহফবঢ়বহফবহপব ৎবধষ ঢ়ড়ষরঃরপধষ পড়হঃৎড়ষ ড়ভ চধশরংঃধহ যধফ নববহ রহ ঃযব যধহফং ড়ভ ঃযব চধশরংঃধহর সরষরঃধৎু, ঃযব ঁঢ়ঢ়বৎ ৎধহশং ড়ভ ঃযব পরারষ ংবৎাধহঃং ধহফ ধ ংসধষষ হঁসনবৎ ড়ভ বিধষঃযু রহফঁংঃৎরধষরংঃং, রিঃয ধষষ ঃযৎবব মৎড়ঁঢ়ং ভৎড়স ডবংঃ চধশরংঃধহ. ঊধংঃ চধশরংঃধহ’ং হঁসবৎরপধষ ংঁঢ়বৎরড়ৎরঃু ধিং হঁষষরভরবফ নু ঃযব ভধরষঁৎব ড়ভ ঢ়ধৎষরধসবহঃধৎু ফবসড়পৎধপু ঃড় ঃধশব বভভবপঃরাব ৎড়ড়ঃ রহ চধশরংঃধহ, ধং রঃ যধফ রহ ওহফরধ. ঞযব যরমযষু পবহঃৎধষরুবফ, ড়ভঃবহ ধঁঃযড়ৎরঃধৎরধহ ংঃৎঁপঃঁৎব ড়ভ চধশরংঃধহ মড়াবৎহসবহঃ রহ ঃযব ডবংঃ ডরহম ৎবংঁষঃবফ রহ ডবংঃ চধশরংঃধহ মবঃঃরহম ঃযব ষরড়হ’ং ংযধৎব ড়ভ ভড়ৎবরমহ ধংংরংঃধহপব ধহফ রহঃবৎহধষ ফবাবষড়ঢ়সবহঃ ভঁহফং.’

প্রসঙ্গত প্রণব মুখার্জী মহোদয় লিখেছেন, ‘খধপশ ড়ভ ফবাবষড়ঢ়সবহঃ, ঁহফবসড়পৎধঃরপ ঢ়ৎধপঃরপবং, ধহফ ঃযব ধৎনরঃৎধৎু সধহরঢ়ঁষধঃরড়হ ড়ভ ঢ়ধৎষরধসবহঃধৎু ফবসড়পৎধঃরপ ংুংঃবসং ষবফ ঃড় ঃযব ভরহধষ ৎবাড়ষঃ ড়ভ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব ড়ভ ঊধংঃ চধশরংঃধহ ধমধরহংঃ ঃযব ৎঁষরহম ডবংঃ চধশরংঃধহ. গঁলরনঁৎ জধযসধহ বসবৎমবফ ধং ঃযব ষবধফবৎ ড়ভ ঃযরং ৎবাড়ষঁঃরড়হ. ওভ ড়হব ংঃঁফরবং যরং বাবহঃভঁষ ষরভব ফঁৎরহম ঃযবংব ুবধৎং, ড়হব পধহ ঁহফবৎংঃধহফ যড়ি যব মৎধফঁধষষু ঢ়ৎবঢ়ধৎবফ যরসংবষভ ধহফ যরং ঢ়বড়ঢ়ষব ভড়ৎ ঃযব পৎবধঃরড়হ ড়ভ ঃযব ংড়াবৎবরমহ হধঃরড়হ ড়ভ ইধহমষধফবংয. ১৯৭০ এর নির্বাচনে ছয় দফাকে ধারণ করে দেশের আপামর জনগণ অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জনে আওয়ামী লীগকে শুধু জয়যুক্ত করেছিলেন তা নয়, মুলতঃ বঙ্গবন্ধুকেই এই বিপুল জনগোষ্ঠী মুক্তির সাহসী দার্শনিক ও পথনির্দেশক হিসেবেই দৃঢ়চিত্তে সমাসীন করেছেন। এখানেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের যথার্থ সার্থকতা। স্বল্প পরিসরে বিশদ ব্যাখ্যার অবকাশ না থাকলেও এটুকু মননীয় সমীকরণ নির্ধারণ করা যায় যে, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক এবং প্রচীয়মান নেতৃত্বের প্রকীর্তিতুল্য বিশ্বব্যাপী বঙ্গবন্ধুর বিকল্প শুধু বঙ্গবন্ধুই।

ভারতের মুক্তিকামী মানুষের প্রগত প্রাণসত্ত্বাখ্যাত নেতাজী সুভাষ বসু বলেছিলেন, ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।’ ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক বিশ্বশ্রেষ্ঠ ভাষণে বঙ্গবন্ধুও দৃপ্তকণ্ঠে বলেছিলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব, তবুও এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।’ মৃত্যুদন্ড/ফাঁসিকে আলিঙ্গন করার পরিপূর্ণ মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর নৃশংস হত্যাকান্ড ও গণধর্ষণের শুরুতেই ২৬ মার্চ মধ্যরাতে ৭ মার্চ ঘোষিত স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করলেন এক অনবদ্য বার্তার মাধ্যমে – ‘ঞযরং সধু নব সু ষধংঃ সবংংধমব. ঋৎড়স ঃড়ফধু ইধহমষধফবংয রং রহফবঢ়বহফবহঃ. ও পধষষ ঁঢ়ড়হ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব ড়ভ ইধহমষধফবংয যিবৎবাবৎ ুড়ঁ সরমযঃ নব ধহফ রিঃয যিধঃবাবৎ ুড়ঁ যধাব, ঃড় ৎবংরংঃ ঃযব ধৎসু ড়ভ ড়পপঁঢ়ধঃরড়হ ঃড় ঃযব ষধংঃ. ণড়ঁৎ ভরমযঃ সঁংঃ মড় ড়হ ঁহঃরষ ঃযব ষধংঃ ংড়ষফরবৎ ড়ভ ঃযব চধশরংঃধহ ড়পপঁঢ়ধঃরড়হ ধৎসু রং বীঢ়বষষবফ ভৎড়স ঃযব ংড়রষ ড়ভ ইধহমষধফবংয ধহফ ভরহধষ ারপঃড়ৎু রং ধপযরবাবফ.’

১৯৭৫, ১৫ আগস্ট। যে পাকিস্তানি সেনারা বঙ্গবন্ধুকে সামান্যতম স্পর্শ করার সাহস করেনি, বিচারপতি মাহমুদ হোসেনের ভাষায় বিপথগামী ও উচ্চাবিলাসী বাঙালি সেনা সদস্যরা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কুখ্যাত ইয়াহিয়া খানের আদেশ বাস্তবায়ন করল ইতিহাসের বর্বর ও নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞ দিয়ে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে প্রাণে নিঃশেষ করার মাধ্যমে। কিন্তু ইতিহাস বড় কঠিন এবং সত্য প্রতিষ্ঠায় ইতিহাস বড় নির্মম। ইতিহাস বরাবরই সঠিক অবস্থানে সমুজ্জ্বল থাকে- এটিই ইতিহাসের শিক্ষা।
মুজিববর্ষ উদযাপনের দিনক্ষণ গণনার সূচনাতে রবীঠাকুরের ‘শিশুতীর্থ’ কবিতার কিছু পংক্তি নিবেদন করতে চাই – ‘কেউ বা অলক্ষিতে পালিয়ে যেতে চায়, পারে না;/অপরাধের শৃঙ্খলে আপন বলির কাছে তারা বাঁধা।/পরস্পরকে তারা শুধায়, “কে আমাদের পথ দেখাবে।”/পূর্ব দেশের বৃদ্ধ বললে, “আমরা যাকে মেরেছি সেই দেখাবে।”/সবাই নিরুত্তর ও নতশির।/বৃদ্ধ আবার বললে, “সংশয়ে তাকে আমরা অস্বীকার করেছি,/ক্রোধে তাকে আমরা হনন করেছি,/প্রেমে এখন আমরা তাকে গ্রহণ করব,/কেননা, মৃত্যুর দ্বারা সে আমাদের সকলের জীবনের মধ্যে সঞ্জীবিত, সেই মহামৃত্যুঞ্জয়।”/সকলে দাঁড়িয়ে উঠল, কণ্ঠ মিলিয়ে গান করল, “জয় মৃত্যুঞ্জয়ের জয়।।”

প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী কবি, শিক্ষাবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, সদ্য সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট