চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

পথ চলি সাবধানে

কাজী আবু মোহাম্মদ খালেদ নিজাম

৩ জানুয়ারি, ২০২০ | ৩:২৮ পূর্বাহ্ণ

আমরা প্রতিদিন নানা কাজে বের হই। কেউ চাকরি, কেউ ব্যবসা, কেউ স্কুল-কলেজে কিংবা প্রয়োজনীয় কাজের উদ্দেশে। তাছাড়া, অনেকেই সারাদিন বা রাতে কাজে ব্যস্ত থাকেন। এই যে কাজকর্ম করতে গিয়ে অথবা চলাফেরায় আমরা সাধারণত সাবধানতা অবলম্বন করি। অনেক সময় সতর্ক থাকি না। অথবা বেখেয়ালে থাকি। সাবধানতা অবলম্বনে ঘাটতি থাকলে জীবনের ঝুঁকি বাড়ে। শঙ্কায় থাকে পরিবার। আমাদের নিয়ে তারা চিন্তা করেন ঘরে না ফেরা পর্যন্ত।

এখন পুরুষ এবং নারীর কাজের পরিধি বেড়েছে। বেড়েছে ব্যস্ততাও। যে কারণে সাবধানতা বা সতর্কতা অবলম্বনের ক্ষেত্রে আমাদের আরো যতœবান হতে হবে।
পথ চলতে ডানে-বাঁয়ে, পেছনে খেয়াল করা উচিত। বিশেষ করে গাড়ি চলাচলের রাস্তায় সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। কারণ গাড়ি তার সঠিক গতিতে যথাযথভাবে যে সব সময় চলবে তার নিশ্চয়তা নেই! পাশাপাশি গাড়ি, ট্রেনে উঠার সময় হাত, পা যেন ফসকে না যায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। একটু অসচেতনতায় জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে! চলার পথে আশেপাশে নির্মাণাধীন কোন ভবন আছে কিনা দেখে নেওয়া ভালো।
কারণ বিভিন্ন সময় পত্রিকার খবরে নির্মাণাধীন ভবনের ইট, লোহা বা নির্মাণসামগ্রী পড়ে মানুষের আহত, নিহত হওয়া সম্পর্কে জানা যায়। অন্যরা দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে কি জীবন সুরক্ষার জন্য নিজেই সচেতন হবো না?

নির্জনে একাকী পথচলা পরিহার করতে হবে। কারণ, নানা আশঙ্কা থাকা অমূলক নয়। রাস্তাঘাটে সদা তৎপর মলমপার্টি, অজ্ঞানপার্টি, ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা। একটু সুযোগের অপেক্ষায় থাকে তারা। মুহূর্তেই ছোঁ মেরে নিয়ে যাবে সব। এমনকি প্রাণটাও। যানবাহনে অপরিচিতি জনের দেওয়া খাবার কিংবা নেশাযুক্ত দ্রব্য দিয়ে অজ্ঞান করার ভয়ও রয়েছে। এজন্য সদা সতর্কভাবে চলাফেরা করা দরকার। প্রয়োজনের তাগিদে অপরিচিত এলাকা বা অপরিচিতজনদের সংস্পর্শে আসার আগে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত।

পারিপার্শ্বিক পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা থাকা উচিত। পরিচিতজনের সহায়তা নিতে পারলে আরো ভাল। চলার পথে টুকটাক কাজ করতে গিয়ে ভুলে যাই হাতে কিংবা কাঁধে ব্যাগ ছিল, ছিল ল্যাপটপ। অথবা প্যান্টের পেছনের পকেটে মানিব্যাগ, মোবাইল ছিল। সামান্য খেয়ালের ভুলে গুরুত্বপূর্ণ অনেক জিনিসই হারিয়ে ফেলি। যা শত চেষ্টার পরও খুঁজে পাইনা। এরকম অবস্থা অনেকের হয়। এজন্য চলার পথে, কাজ শেষে বা কাজের ফাঁকে সঙ্গে থাকা সব জিনিসপত্রের দিকে দু’একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া ভালো। একটু সতর্ক হলে এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হয়। অনেকে অনেক রাত করে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরেন। কাজের চাপেও সেটি হতে পারে। রাত গভীর হলে সারাদিনের কোলাহলপূর্ণ সড়ক ও জনপদগুলোতেও একাকীত্ব ভর করে। ফাঁকা রাস্তায় গাড়িগুলোও গতি পায়! এ সময় জীবনের শঙ্কা ও বাড়ে। কখন বিপদ হয়। তাই যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষে বাড়ি ফেরার

চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
এরপরও আমাদের ভুল হতে পারে কারণ, আমরা মানুষ। এজন্য যতটুকু পারা যায় আমাদেরকে চোখ কান খোলা রেখে চলাফেরা করতে হবে। একটু সচেতনতাই পারে আমাদেরকে বিভিন্ন অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি ও বিপদ থেকে মুক্ত রাখতে। ভুলে যাওয়া কিংবা কাজের বাধ্যবাধকতা জীবনের স্বাভাবিক বিষয়। তারপরও আমাদের নিজের জন্য, পরিবারের জন্য চলাফেরায় সতর্কতা অবলম্বন করার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি অন্যদেরও এ বিষয়ে সচেতন করে তুলতে হবে। আসুন, সতর্ক-সচেতন হই। সাবধানে পথ চলি।

কাজী আবু মোহাম্মদ খালেদ নিজাম শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট