চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখুন

কাজী আবু মোহাম্মদ খালেদ নিজাম

১৬ মে, ২০১৯ | ২:০৯ পূর্বাহ্ণ

আমাদের মাঝে চলমান সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান। এ মাসে বিশে^র সব মুসলমান তাক্বওয়া অর্জনের মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য ইবাদাত বন্দেগীতে মশগুল থাকেন। অন্যান্য মাসের চেয়ে এই মাসে প্রত্যেক মুসলমান চায় একটু স্বস্তি ও একাগ্রতার সাথে রোজা পালন করতে।
আমাদের দেশে প্রতি বছরে রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়! কষ্টে পড়ে মুমিন মুসলমান। আরব রাষ্ট্রসহ পৃথিবীর অনেক মুসলিম দেশেই রোজাদারদের কষ্ট লাঘবে রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য কমিয়ে দেয় কিংবা সহনীয় পর্যায়ে রাখে। সেখানে আমরাই ব্যতিক্রম!
কেন এমন হয় তার সদুত্তর পাওয়া যায় নি! সরকার চাইলে রমজান মাসে মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানতে উদ্যোগ নিতে পারেন। পারেন কালোবাজারী ও মজুদদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে। বাড়াতে পারেন নিরবচ্ছিন্ন নজরদারি। সে সাথে বাজারে দ্রব্যসামগ্রীর পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থ নড়বড়ে হলে দ্রব্যমূল্য লাগামহীন হবেই! তাতে কোন সন্দেহ নেই।
বিশেষ করে দেখা যায়, রমজান মাস আসার আগেই ইফতার সামগ্রী প্রস্তুতের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের মূল্য বেড়ে যায়। ক্ষেত্র বিশেষে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির অপচেষ্টাও হয়। এসব অনিয়ম কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে রোধ করতে হবে।
নিত্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য দ্রব্যের ক্ষেত্রেও মূল্য বাড়ানোর প্রবণতা দেখা যায়। সরকারিভাবে ওএমএসের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করা হলেও তা দ্রব্যমূল্যের কাছে হার মানে! অথবা অপর্যাপ্ত ও নি¤œমানের সামগ্রী বিক্রি কিংবা কার্যকর মনিটরিং এর অভাবে তার সুফল পাওয়া যায় না। সাধারণ মানুষ খুব বেশি উপকৃত হয় না। এজন্য বিতরণ ব্যবস্থায় মনিটরিং ও এর পরিসর বাড়ানো দরকার। তবেই তার সুফল আসতে পারে বলে মনে করি।
অন্যদিকে, দেশব্যাপী সরকারিভাবে স্থানীয় সব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গরীব ও অসহায় রোজাদারদের মধ্যে বিনামূল্যে ইফতার/সেহেরী সামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। যার ফলে ঐসব রোজাদার ব্যক্তি ও তাদের পরিবার স্বস্তির সাথে এবং সুন্দরভাবে পবিত্র রমজানের রোজা পালন করতে সক্ষম হবেন। সঠিক ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যেন পর্যাপ্ত দ্রব্যসামগ্রী রোজাদারদের হাতে পৌঁছে তার পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিত্তশালী ও সামর্থ্যবান সব মানুষও ইফতার, সেহেরী সামগ্রী অসহায় রোজাদারদের মাঝে বিতরণের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করতে পারেন। এর ফলে রোজাদারদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হতে পারে।
মহান আল্লাহপাক আমাদের জন্য রমজানের রোজা ফরজ করেছেন। এই একমাস ইবাদাত – বন্দেগীর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজন মুসলমান বাকী মাস ও দিনগুলোতে নিজেদেরকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে চেষ্টা করেন। এই ইবাদত-বন্দেগীতে যেন কোন ধরনের ছেদ না পড়ে তার জন্য দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা অতীব জরুরী।
সরকার, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে রমজান মাসে যেন দ্রব্যমূল্য কোনভাবেই বৃদ্ধি না পায় সে লক্ষে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে হবে। পবিত্র এই মাসটিতে রোজাদারগণ যেন স্বস্তির সাথে পুরো মাস অতিবাহিত করতে পারেন সে ব্যাপারে আমাদের সকলকেই ভূমিকা রাখতে হবে।
“রমজানে দ্রব্যমূল্য বাড়বে না”-এমন আশা সব মানুষ করতেই পারেন।

লেখক : শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট