চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

চাই নৈতিক শিক্ষা

১০ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৪:০৩ পূর্বাহ্ণ

সামাজিক আচরণের ক্ষেত্রে যদি এমন হতো, সঠিক নৈতিকতা থাকলে পড়াশোনার পর একটি সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে, তবে সামাজিক চিত্রের সত্যিকারের রূপটি ধরা যেত। বর্তমান সময়ে শৈশব শেষ করে কৈশোরে গমন করা প্রতিটি শিশুর মুখভঙ্গি ও আচরণের বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তাদের মধ্যে একটা আলাদা ধরনের ম্যাচিউরিটি। এটা দুইভাবেই ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। এর ভালো দিক যেমন অনেক, তেমনি বিপরীত দিকও চিন্তা করা খুবই সহজ। ভালো রেজাল্টধারীদের সার্টিফিকেট যখন কেউ দেখবে তখন তাকে ভালো ছাত্র হিসেবেই দেখবে। নিজের মা-বাবাও হয়তো তাদের ধন্যবাদ দেবেন; কিন্তু তাদের নৈতিকতার ক্ষেত্রে যদি হতাশাজনক পরিবর্তন হয়, তাহলে এর দায় কে নেবে! পারিপার্শ্বিক অবস্থায় দায় আমাদেরও। আমরা সন্তানদের সার্টিফিকেট অর্জন করতে বলছি শুধু জীবিকার জন্য। অর্থাৎ নির্দিষ্ট একটি সার্টিফিকেট আর নিজের যোগ্যতা প্রমাণের জন্য কিছু টাকা হলেই একপক্ষ চাকরি পেয়ে যাচ্ছে আর সুবিধাবঞ্চিত সাধারণ মানুষ এ কারণেই চাকরিবঞ্চিত। শুধু টাকা উপার্জনের জন্যই শিক্ষা অর্জন এটা মাথায় বিঁধিয়ে দেয়ার ফলেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক শিক্ষার এত বিপর্যয়। শিশুর নৈতিক শিক্ষার ক্লাস বাধ্যতামূলক করে স্কুলে নতুন অভিযাত্রা শুরু করা যেতে পারে। নইলে এখন যে পরিমাণ সার্টিফিকেট অর্জন হচ্ছে, তা সত্যিই একটা হতাশাজনক পরিস্থিতি বয়ে নিয়ে আসতে পারে আমাদের সামাজিক জীবনে। আপনি যে আপনার সন্তানকে টাকা উপার্জনের জন্যই শুধু শিক্ষা দিচ্ছেন না, এটা বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করুন। সন্তানের সঙ্গে মনের সঠিক কথাগুলো বলতে শিখুন। স্বপ্নগুলো তাদের মধ্যে বিস্তার ঘটিয়ে দিলে আপনার চিন্তা অর্ধেকে নেমে আসবে। যদি রেজাল্টের পর ধূমপান করতে করতে আপনার শিশুই বলে আরেকটা পাস দিয়ে ৫ লাখ টাকা হাতে নিলেই চাকরি নিশ্চিত, তবে আপনি ধরে নিতেই পারেন এ সন্তান আপনার কোনো উপকারে আসবে না। কারণ আপনার সন্তান একইসঙ্গে কয়েকটি নৈতিকতা নিঃশেষ করেছে। শিক্ষা, সার্টিফিকেট আর নৈতিকতার মান একই সরল রেখায় আনতে পারলেই শুধু শিক্ষার সঠিক উদ্দেশ্য পূরণ হবে। নইলে নৈতিকতার সঙ্গে সার্টিফিকেট অর্জনের এ বৈরী সম্পর্ক আমাদের অনেক ভোগান্তি এনে দেবে সামাজিকভাবেই।

দীপান্বিতা রায়চৌধুরী
সদস্য, পরিবেশ ও মানবাধিকার আন্দোলন-পমা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট