চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

শিশুশিক্ষা হোক চাপমুক্ত

২৯ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:১১ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিশুদের মানসিক বিকাশের উপযোগী আনন্দময় পরিবেশে শিক্ষাদানের কথা বলা হয়েছে। স্কুলগুলোতে বাচ্চাদের আনন্দ বইয়ের চাপায় হারিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে প্রাথমিক বা প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে পড়াশোনা কোমলমতি শিশুদের উপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দেখা যায়, নার্সারি, প্লে, কেজি ওয়ান, কেজি টু সহ তিন থেকে চার বছর ধরে পড়ানো হয় শিশুদের।

আবার এ সময় শিশুদের খেলায় খেলায় মাতৃভাষা, অক্ষর ও সংখ্যার ধারণা দেয়ার কথা বলা হলেও বাস্তবে স্কুলগুলোতে শিশুদের গ্রামার এমনকি সমাজ বিজ্ঞানও পড়ানো হয়। স্কুলগুলোতে কেবল পড়াশোনা, পড়াশোনা আর পড়াশোনা। মনে হয় যেন স্কুলগুলোতে লেখাপড়ার ছাড়া আর কোন জগত নেই। তাছাড়া নামিদামি স্কুলগুলোতে রয়েছে ভর্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা। যার ফলে ওসব স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য বাচ্চসহ অভিভাবকদের দৌড়াতে হয় কোচিং সেন্টারে।

সাম্প্রতিককালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপণী পরীক্ষার কারণে হঠাৎ করেই পঞ্চম শ্রেণিতে চাপ বেড়েছে শিক্ষার্থীদের উপর। অভিভাবকরাও ছুটছেন ভালো রেজাল্টের দিকে। অভিভাবকদের প্রত্যাশা পূরণ করার জন্য প্রতিদিন যে ধরনের রুটিনের মধ্য দিয়ে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের তাতে বাইরের খোলা পরিবেশের সাথে তো তাদের দেখা হয়ই না। ২০১৮ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নিয়ে বেসরকারি সংগঠন গণসাক্ষরতা অভিযানের এক গবেষণায় দেখা যায়, ‘পঞ্চম শ্রেণিতে পি.এস.সি পরীক্ষার কারণে স্কুল, প্রাইভেট টিউশনির বাইরে শুধু বাধ্যতামূলক স্কুল কোচিংয়ে বছরে শিক্ষার্থীদের ব্যয় হয় ৪শ ১২ ঘণ্টা করে।’ এ পরীক্ষায় সবকিছুর মূলে হয়ে থাকে ভালো রেজাল্ট। তাছাড়া অন্যান্য ছোট ক্লাসগুলোতেও থাকে ক্লাস টেস্ট, মান্থলি টেস্টের মত বাড়তি চাপ। বাংলাদেশে শিশু শিক্ষার যে ব্যবস্থা রয়েছে তা আসলে যথার্থ নয়। এর মধ্যে আরো পরিবর্তন আনা দরকার, উন্নতি সাধন করা দরকার।

যাতে করে শিশুরা আনন্দের সঙ্গে পড়তে পারে। পরীক্ষার চাপ থেকে শিশুরা নিজেদের মুক্ত করতে পারে। আমরা যদি শিশুদের সব ক্ষেত্রে বিকাশের সুযোগ না দিয়ে শুধু জ্ঞানবিকাশের দিকে প্রাধান্য দিই, তাহলে পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ হবে কিভাবে?

প্রেমা চক্রবর্তী
চট্টগ্রাম

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট