চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

শিশুস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবাইকে ভূূমিকা রাখতে হবে

২১ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:১৪ পূর্বাহ্ণ

‘ভিশন ২০২১ ও ভিশন ২০৪১’ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শিশু স্বাস্থ্যের ওপর বিনিয়োগ বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৭৩ সালে ‘জাতীয় অন্ধত্ব দূরীকরণ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভিটামিন ‘এ’ সম্পূরক কর্মসূচি চালু করা হয়। বর্তমানে দেশে বছরে দু’বার ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এই কর্মসূচি পরিচালিত হয় এবং বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্মসূচিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বিশ্বব্যাংকের মতে, বর্তমানে জনস্বাস্থ্যমূলক কর্মকান্ডের মধ্যে সবচেয়ে সাশ্রয়ী টিকা ভিটামিন ‘এ’ সম্পূরক। ভিটামিন ‘এ’ পরিস্থিতির উন্নতি হলে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে একইসাথে শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা কমে যাবে। এই সামান্য বিনিয়োগে শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ স্বল্পতা, ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, ধনুষ্টঙ্কার, পোলিও, হাম, যক্ষ্মা, হেপাটাইটিস ‘বি’ থেকে রক্ষা করা যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের এক জরিপে দেখা যায়, অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সী শিশু মৃত্যুর ৫০ শতাংশ হচ্ছে অপুষ্টির ফল। শিশু স্বাস্থ্য রক্ষার চ্যালেঞ্জগুলো অঞ্চল ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে কার্যক্রম পরিচালনা, যথাসময়ে ক্যাপসুলের যোগান দেয়া, ক্যাম্পেইন পরিচালনায় পর্যাপ্ত কর্মী পাওয়া এবং দুর্গম এলাকায় সেবা পৌঁছানো বড় চ্যালেঞ্জ।

১৫টি মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের শিশু বাজেট অংশ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিগত অর্থবছরের তুলনায় বর্তমান অর্থবছরে শিশু বাজেট বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং জন নিরাপত্তা বিভাগে শিশু বাজেট বৃদ্ধির হার যথাক্রমে ৪.৩৯ শতাংশ, ৪.২২ শতাংশ এবং ৮.৩৯ শতাংশ। এছাড়া মহিলা ও শিশু বিষয়ক নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাক্সিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই) কর্তৃক ‘ভ্যাকসিন হিরো’ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস, শিশু ও মায়েদের টিকা দেয়া, ভিটামিন ‘এ’ ঘাটতির দূরীকরণ সূচকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আশা করি, এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

আজকের শিশু ভালো থাকলে, ভালো থাকবে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ। আশা করি, বর্তমানে গৃহীত কর্মসূচির মাধ্যমে শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোল মডেলে পরিণত হবে।

ফাহিম আহমেদ
মাস্টার্স, রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট