চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মানবতাবাদী ও জনদরদী নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু

আজিজুল হক নসু

৮ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:০৯ পূর্বাহ্ণ

তুমি নেই আছে শুধু তোমার স্মৃতি রেখে যাওয়া আদর্শ। ভুলি নাই ভূলবো না আজীবন। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর যিনি আওয়ামীলীকে সু-সংগঠিত করেছেন আওয়ামীলীগের দুঃসময়ের কান্ডারী আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু। তিনি একাধারে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি শিক্ষানুসারী ছিলেন। তিনি বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক মহলে পরিচিতি করেন। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ৭৭ জাতি ব্যবসায়ী সমিতির ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আমি তাঁর সান্নিধ্যে এসে দীর্ঘ ২৬ বছর পাশে ছিলাম। আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর মত বড় মাপের মহৎ হৃদয়বান জাতীয় নেতার সাহচার্য লাভের সুযোগ হয়েছে। বিশ্বস্থতার সহিত মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত তার অভিভাবকত্বে জনগণের সেবামূলক কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। তাঁকে নিবিড়ভাবে দেখেছি, মিশেছি। সুখ, দুঃখের সঙ্গী হয়েছি। আমি দেখেছি, তাঁর মধ্যে এক নরম প্রকৃতির হৃদয়, মানুষকে ভালবাসার উদার মন-মানসিকতা।

আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু সমস্ত লোভ-লালসার উর্ধ্বে উঠে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের অগ্রসৈনিক অর্থ সরবরাহকারী ছিলেন, তিনি স্বাধীনতা উত্তর কালের সেই সব বিরল রাজনীতিবিদের অন্যতম, যিনি আওয়ামীগের দুঃসময়ে হাল ধরেছেন, রাজনীতি করেছেন নিজের অর্থ ব্যয় করেছেন। একটা মানুষের সঙ্গে চলে যায় গোটা একটি পৃথিবী। কথাটি লিখেছেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দ মুখোপাধ্যায়। আসলে সব মানুষই জীবনে নিজ নিজ ক্ষেত্র গড়ে তোলে আপন আপন ভুবন। আর যার কর্মে কীর্তিতে, মেধায়, মননে, স্নেহ, ভালবাসায় ও সখ্যতায় অনন্য স্বাক্ষর রেখে যায়। তারা সারাজীবন ধরে তৈরী করে এক একটি বিচিত্র ও বর্ণিল অনন্য পৃথিবী। অবিনাশী যৌথ স্মৃতির অংশীদার। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুক্তিযোদ্ধা বর্ষিয়ান আওয়ামীলীগ নেতা আখতারুজ্জামান চেীধুরী বাবু ছিলেন এমনি এক অসাধারণ পুরুষ, যার সঙ্গে সঙ্গে চলে গেছে বিশাল এক প্রাণবন্ত জগত। তিনি বঙ্গবুন্ধুর আদর্শ ধারণ করে সংগঠন ও জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। সুস্থ ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসের আখতারুজ্জামান চেীধুরী বাবুর জীবনী থেকে নতুন প্রজন্মের অনেক কিছু শেখার আছে।

জীবনে অনেকবার মন্ত্রীত্বের সুযোগ পেয়েও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুতি হয়নি। তিনি অত্যন্ত দূরদর্শী ও বিচক্ষণ রাজনীতির ধারক ছিলেন। চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক উজ্ঝল নক্ষত্র। তিনি চট্টগ্রাম আওয়ামীলীগের অভিভাবক ও ধারক-বাহক ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্ব। রাজনীতিতে যেমন ব্যবসা, ব্যাংক, বীমা ও শিল্প স্থাপনে তিনি ছিলেন একজন উচ্চমাপের সফল ব্যক্তিত্ব। আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে তিনি ছিলেন একজন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নেতা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও চট্টগ্রাম আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে তাঁর অবদান অপরিসীম। যে কোন কঠিন সময়ে দলের জন্য তিনি ছিলেন নিবেদিত এক কর্মী। ক্রমেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন চট্টগ্রাম আওয়ামীলীগের একজন অভিভাবক। তাঁর মৃত্যু চট্টগ্রাম আওয়ামীলীগকে শুধু অভিভাবকহীন করেনি, দেশের সামগ্রিক রাজনীতিতে একটি শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। যদিও তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই। তবুও তিনি আমাদের অন্তরে চির জাগ্রত। প্রজন্মের অনেক কিছু শেখার আছে।
ওনার সান্নিধ্যে এসে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। খ্যাতি, পরিচিতি, ভালবাসা, সম্মান, অনেক কিছু। বাবু ভাই আমাকে ইউসিবিএল এ চাকুরী প্রদান করেন। আমি বাবু ভাই এর লোক হওয়াতে ১৯৯৩ সালে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেন।

আমার শ্রদ্ধাভাজন মাতৃতুল্য বেগম নুরুন নাহারজ্জামান বাবু ভাই এর মত ¯েœহ করেন। বাবু ভাইয়ের সান্নিধ্যে এসে ওনার ছেলদের সাথে পরিচয়। বাবু ভাই এর মেঝ ছেলে আনিছুজ্জামান চৌধুরী রনি ও মাননীয় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী (জাবেদ) আমার জীবনকে পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তাদেঁর সহযোগিতায় আজ আমি সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এর অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক দায়িত্বে ও আর আই, সিকিউরিটি কর্ণধার এবং আখতারুজ্জামান সেন্টার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি। আমি বঙ্গবন্ধু ও বাবু ভাইয়ের আদর্শের সৈনিক। আমি বাবু ভাইকে আইডল/আদর্শ মনে করি। বাবু ভাইয়ের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকীতে ওনার আত্নার মাগফেরাত কামনা করি। আল্লাহ ওনাকে জান্নাত দান করুন আমিন।

আজিজুল হক নসু সভাপতি, আখতারুজ্জামান সেন্টার দোকান মালিক সমিতি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট