চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

কর্ণফুলী নদীকে বাঁচাতে সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি

২২ অক্টোবর, ২০১৯ | ১২:৪০ পূর্বাহ্ণ

পৃথিবীতে যতো সভ্যতা ও বড় বড় শহর গড়ে উঠেছে তা সবই নদীর পাড় ঘেঁষে। আমাদের কর্ণফুলী নদীও তার ব্যতিক্রম নয়। হাজার বছর আগে থেকেই কর্ণফুলীর পাড়ে পণ্য উঠানামা করতো। আজ থেকে শতবছর পূর্বেও মানুষের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ছিল নদীপথ। কর্ণফুলী নদী চট্টগ্রামের অস্তিত্ব ও প্রাণ। কর্ণফুলী নদী বাঁচলে; বাঁচবো আমরা বেঁচে থাকবে চট্টগ্রাম শহরের সুস্থ সুন্দর পরিবেশ।

আজ কর্ণফুলী নদীর অস্তিত্ব সংকটে। নদীর দুই পাড় দখলের রাজত্বে ও নদীর পানি দূষণের কারণে পরিবেশ বিপন্ন। প্রধান তিনটি কারণেই কর্ণফুলী নদী আজ বিপর্যস্ত। প্রথমত, দুই পাড়ের দখলদার, দখলদাররা আর কেউ নয় আমাদের সুপরিচিত।

দ্বিতীয়ত, নদী দূষণ হচ্ছে বর্জ্য, গৃহস্থালির আবর্জনা ও পয়ঃবর্জ্য। এই নদীর দূষণের জন্য জনগণও কম দায়ী নয়। তৃতীয়ত, নদীর নাব্যতা হারানোর জন্য দায়ী অবৈধ দখলদার এবং আমাদের অসচেতনতায় প্লাস্টিক পণ্যের আবর্জনা শহরের খালগুলোতে ফেলে তা আবার নদীতে গিয়ে জমাট বেঁধে পূর্ণ হয়ে যায়। যার ফলশ্রুতিতে নদীর জলপ্রবাহ বিঘœ ঘটে। এক গবেষণায় উঠে এসেছে বর্তমানে কর্ণফুলী নদীপাড়ের ১৩৩টি কারখানা এই দূষণের জন্য দায়ী এবং দখলদারদের তালিকায় রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। নদী দূষণের কারণে প্রায় ৪৫ প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। দীর্ঘ ৫০ বছর আগে চট্টগ্রাম শহরের ১২টি খাল মানচিত্র থেকে মুছে যাওয়া এবং কর্ণফুলী নদী দখলের কারণে চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ। কর্ণফুলী নদী বাঁচলে মিঠাপানির মাছের বংশবিস্তার হালদা নদীও বাঁচবে। তাই কর্ণফুলী নদী বাঁচাতে হলে দুইপাড়ের অবৈধ দখল অবশ্যই উচ্ছেদ করতে হবে। চট্টগ্রাম শহরের খালগুলো পুনরুদ্ধার করা এবং শিল্প কারখানার বর্জ্য, গৃহস্থালি এবং পয়ঃবর্জ্য নদীতে না ফেলা। যেখানে সেখানে প্লাস্টিকের বর্জ্য না ফেলা এর ব্যবহার কমিয়ে আনা। নদী দখল ও নাব্যতা হারানো যেমন বছরের পর বছর অব্যবস্থাপনার কারণে সৃষ্টি হয়েছে ঠিক তেমনি উচ্ছেদ অভিযান ও ড্রেজিং পদ্ধতি সারা বছর চলমান থাকা জরুরি। যৌথভাবে কঠোর পদক্ষেপ নিলে কর্ণফুলী নদী তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে। আগামী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য চট্টগ্রাম গড়তে হলে অবশ্যই কর্ণফুলী নদীকে বাঁচাতে হবে।

শ্রীধর দত্ত
মেলঘর, পটিয়া, চট্টগ্রাম।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট