চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

কুর্দি গ্রামে তুরস্কের সামরিক অভিযান : প্রসঙ্গকথা

অধ্যাপক শাব্বির আহমদ

১৮ অক্টোবর, ২০১৯ | ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ

সাহসী ও যোদ্ধা জাতি হিসেবে সেই বাল্যকাল থেকেই কুর্দি জাতিদের বীরত্বগাঁথা সম্পর্কে কতইনা রূপকথার কাহিনী শুনেছি।

সৈয়দ মোজতবা আলী রচিত “দেশে-বিদেশে” নামক ভ্রমণকাহিনী যারা পড়েছেন তাদের নিশ্চয়ই মনে থাকার কথা নয়নাভিরাম কুর্দিস্তানের প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ণনার পাশাপাশি অত্যন্ত সুদর্শন কুর্দি পুরূষ আর অনিন্দ্য সুন্দরী ললনাদের জীবনকাহিনী। বাংলায় ডাবিংকৃত একাধিক সিরিয়ালে কুর্দি বংশোদ্ভূত ক্রুসেড জয়ী সুলতান সালাহ উদ্দিন আইয়ুবীর জীবনকাহিনী ও বীরত্বগাঁথা সম্পর্কে অনেক ধারণা লাভ করি। তাছাড়া রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে কুর্দি জাতিগোষ্ঠী সম্পর্কে প্রচুর লেখাপড়ারও সুযোগ হয়। সবমিলিয়ে সেই ছাত্রাবস্থা থেকেই কুর্দিস্তান ও কুর্দি জাতি সম্পর্কে বিশেষ কৌতূহলের সৃষ্টি হয়।
মধ্যপ্রাচ্যে আরব, তুর্কি এবং পারসিকদের পরেই কুর্দিরা চতুর্থ বৃহৎ জাতিগোষ্ঠী। কুর্দিরা শত শত বছর ধরেই সিরিয়া এবং মেসোপটেমিয়ার সমতল এবং পাহাড়ি ভূমিতে বসবাস করে আসছে। আধুনিক তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বে, সিরিয়ার উত্তর-পূর্বে, ইরাকের উত্তরে, ইরানের উত্তর-পশ্চিমে এবং আর্মেনিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ৩ লক্ষ বর্গ কিলোমিটারের বিশাল এলাকা জুড়ে আছে কুর্দিস্তান। কুর্দিস্তান হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রবিহীন জাতির আবাসভূমি। এর অধিবাসীদেরকে বলা হয় কুর্দি। এসব এলাকায় প্রায় তিন কোটি কুর্দি জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। এছাড়া কুর্দিস্তানের বাইরেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরো কয়েক লক্ষ কুর্দি বসবাস করে।

পাশাপাশি পাঁচটি দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও কুর্দিরা মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের আলাদা পরিচয় তৈরি করেছে নিজেদের স্বতন্ত্র ভাষা-সংস্কৃতি দিয়ে। ফলে তাদের খুব সহজেই পার্শ্ববর্তী তুর্কি ও আরবদের থেকে আলাদা করা যায়। তবে ইরানিদের সাথে সংস্কৃতিগত মিলের কারণে কুর্দিদের ইরানি মহাজাতির অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

তুরস্কের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০% কুর্দি। ইরাকে ১৫%, ইরানে ১০% এবং সিরিয়ায় ১০% জনসংখ্যা কুর্দি। কুর্দিরা মূলতঃ সুন্নি মুসলিম। সুন্নি মুসলিমরা সংখ্যায় প্রায় ৮০%। এছাড়া ১৫% কুর্দি শিয়া মুসলিম। আর বাদবাকি ৫% খ্রিশ্চিয়ান, ইয়াজিদি, জরথুস্ত্র। কুর্দিরা ধর্মপ্রসঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদি এবং পরমতসহিষ্ণু। সুন্নি এবং শিয়া উভয় ভাগের মুসলিমদের মধ্যে সুফিবাদের ব্যাপক প্রভাব লক্ষণীয়। দীর্ঘদিন ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রের অধীনে ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আন্দোলন করতে গিয়ে প্রতিটি অঞ্চলের কুর্দিদের রাজনৈতিক এবং সামাজিক বৈশিষ্ট্য ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বিকশিত হয়েছে। ফলে তাদের মধ্যে অনেক বিষয়ে ভিন্নতাও সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ কুর্দি জাতীয়তাবাদীই বৃহত্তর স্বাধীন কুর্দিস্তানের স্বপ্ন দেখে, কিন্তু তাদের রাজনীতিবিদরা তাদের এসব ভিন্নতা সম্পর্কে অবগত থাকায় স্বাধীনতার পরিবর্তে অধিকতর অধিকার এবং স্বায়ত্ত্বশাসনের পক্ষপাতী।

এখন কথা হচ্ছে, সমৃদ্ধ ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক-বাহক হয়েও বিরাট কুর্দি জনগোষ্ঠী কেন প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি স্বাধীন-সার্বভৌম কুর্দিস্তান। কেন দশকের দশক ধরে তারা নির্যাতিত-নিষ্পেষিত এবং বিভাজিত একাধিক রাষ্ট্রযন্ত্রের হাতে। এসব কিছুর উত্তর পেতে হলে ফিরে যেতে হবে একটু অতীত ইতিহাসের পাতায়।

আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসে নিঃসন্দেহে কুর্দিরা অন্যতম বঞ্চিত এবং নির্যাতিত জাতিগোষ্ঠী। কুর্দিদের জন্মই হয়েছে যেন প্রতারিত হওয়ার জন্য। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছিল। যুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধিত্বকারী তুর্কির ওটোমান (ওসমানীয় খেলাফত) সা¤্রাজ্য বৃটিশ সা¤্রাজ্যবাদের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা মিত্র শক্তির বিরুদ্ধে জার্মানির পক্ষাবলম্বন করে। আজকের মধ্যপ্রাচ্যের সবক’টি রাষ্ট্র, মধ্যএশিয়া ও ইউরোপের বলকান অঞ্চলের অধিকাংশ রাষ্ট্র ওসমানীয় খেলাফতের অধীনে ছিল। ওসমানীয় খেলাফতের পড়ন্ত বিকেলে যুদ্ধে জড়ানো ছিল মারাত্মক ভুল। আর এই সুযোগটি পুরোপুরি গ্রহণ করেছিল বৃটিশরা। ওসমানীয় খেলাফতের অধীন আঞ্চলিক শাসকদের বৃটিশরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যুদ্ধে মিত্রশক্তিকে সহযোগিতা করলে যুদ্ধের পর সম্ভাব্য সব ছোট বড় রাষ্ট্রই স্বাধীনতা পাবে। পক্ষান্তরে বৃটিশ শাসনাধীন ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানরা তুর্কির নেতৃত্বাধীন ওসমানীয় খেলাফত রক্ষাকল্পে মাওলানা মুহাম্মদ আলী-শওকত আলী ভ্রাতৃদ্বয়ের নেতৃত্বে খেলাফত আন্দোলন শুরু করে দিলে সুচতুর বৃটিশরা ভারতীয় মুসলমানদের আশ্বস্ত করে, যুদ্ধে মুসলমানরা বৃটিশদের সহযোগিতা করলে ওটোমান সা¤্রাজ্যের কোন ক্ষতি করা হবে না। যুদ্ধজয়ী বৃটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের দেওয়া অঙ্গীকার রক্ষা করেনি।

যুদ্ধে জার্মান পক্ষ পরাজিত হলে বৃটিশের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা মিত্রশক্তি ওটোমান সাম্রাজ্যের অধীন অঞ্চলসমূহকে বিশেষত বৃটেন ও ফরাসিরা নিজেদের মধ্যে ভাগ-ভাটোয়ারা করে নেয় এবং কিছুদিন শাসন-শোষণের পর আস্তে আস্তে স্বাধীনতা দিতে থাকে। এভাবেই আজকের মধ্যপ্রাচ্য, মধ্যএশিয়া ও বলকান অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলো স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯২০ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বৃটিশদের সহযোগিতায় কুর্দিরা কুর্দিস্তান নামে সার্বভৌম রাষ্ট্র গড়ে তুলতে তৎপর হয়ে উঠে। সিদ্ধান্ত হয়েছিল “ট্রিটি অফ সেভরাস” নামে পরিচিত এক চুক্তির দ্বারা অপরাপর আরব রাষ্ট্রের ন্যায় কুর্দিস্তানেরও স্বাধীনতা দেওয়া হবে। কিন্তু এর তিন বছরের মাথায় কুর্দিদের সেই স্বপ্নে জল ঢেলে দেওয়া হয়েছিল। ১৯২৩ খ্রীস্টাব্দে ‘লুসান’ চুক্তির দ্বারা যখন তুরস্কের সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছিল, তখন কুর্দি রাষ্ট্রের জন্য কোন ব্যবস্থা রাখা হলো না। ফলে চাপা পড়ে যায় কুর্দিদের স্বাধীনতা বা স্বায়ত্ত্বশাসনের স্বপ্ন এবং শুরু হয় এক দীর্ঘস্থায়ী সংকট। ব্রিটিশ এবং ফরাসীরা বৃহৎ কুর্দিস্তান এলাকাকে ইতোপূর্বে স্বাক্ষরিত “সাইকস-পিকো” চুক্তির মাধ্যমে সৃষ্ট একাধিক রাষ্ট্রের মধ্যে ভাগাভাগি করে তাদের মধ্যে কৃত্রিম সীমারেখা টেনে দেয়। তখন থেকেই শুরু হয় কুর্দিজাতির ট্র্যাজেডি। সমগ্র কুর্দিজাতি বিভাজিত অবস্থায় বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী হিসেবে রয়ে গেল। আর তারপরে ৯০ বছর ধরে তারা কোন ধরনের স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের পাঁয়তারা করলে তা নির্মমভাবে দমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ বিজয়ী বৃটিশ সা¤্রাজ্যবাদীশক্তি মধ্যপ্রাচ্যের অপরাপর জাতিগোষ্ঠীকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি মোটামুটি রক্ষা করলেও কুর্দিদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি সরে এসে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা মোতাবেক কুর্দি জাতিকে চিরতরে পঙ্গু করে রাখার মানসে কুর্দিস্তানকে পাশাপাশি পাঁচটি রাষ্ট্রের মাঝে ভাগাভাগি করে দেয়, যাকে ক্রুসেডের যুদ্ধে কুর্দি বীর গাজী সালাহ উদ্দিন আইয়ুবীর কাছে ইউরোপীয়দের লজ্জাজনক পরাজয়ের মধুর প্রতিশোধ বলে অনেক ঐতিহাসিক মনে করে থাকেন। উল্লেখ্য, মুসলমানদের প্রথম কিবলা (ইহুদী-খ্রীস্টানদের কাছেও সমান পবিত্র) জেরুজালেমের বায়তুল মোকাদ্দাস দখলে নিতে সম্মিলিত ইউরোপীয় খ্রীস্টানশক্তি ১০৯৫-১২৯১ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় দুইশত বছর ধরে তাদের ভাষায় যে পবিত্র যুদ্ধ ‘ক্রুসেড’-এ অবতীর্ণ হয়েছিল সে যুদ্ধে সম্মিলিত খ্রীস্টশক্তির জেরুজালেমের সন্নিকট হাত্তিনের যুদ্ধে মুসলিম সেনাপতি মহাবীর সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর কাছে চূড়ান্ত পরাজয় ঘটেছিল। আজকের ইরাকের তিরকিত-মসুলের মাঝামাঝি বারিন কেল্লায় ১১৩৭ খ্রীস্টাব্দে এক কুর্দি পরিবারে মহাবীর সুলতান সালাহ উদ্দিন আইয়ুবীর জন্ম। তিনি এখনো ইউরোপিয়ানদের কাছে মূর্তিমান এক আতঙ্ক। ইউরোপীয় লেখকগণ তাঁকে ‘সালাদিন’ হিসেবে সম্বোধন করে থাকে। ভারতীয় উপমহাদেশের লোকদের কাছে মঙ্গোলীয় বীর চেঙ্গিস খান যেমন মূর্তিমান আতঙ্কের নাম, ইউরোপীয়দের কাছে মহাবীর সুলতান সালাহ উদ্দিন আইয়ুবীর নামও ঠিক তেমনিই। ফলে স্বাভাবিক কারণে ইউরোপীয়দের কাছে কুর্দি জাতিগোষ্ঠী সম্পর্কে চরম বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব ক্রিয়াশীল ছিল যুগযুগ ধরে, যারই চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ছয়শত বছর ধরে মুসলিমজাহানের প্রতিনিধিত্বকারী অটোমান সা¤্রাজ্য ধ্বংসের পাশাপাশি সাহসী ও যোদ্ধা জাতি হিসেবে খ্যাত কুর্দিদের মাতৃভূমি কুর্দিস্তানকে খন্ড-বিখন্ড করে কুর্দি জাতিগোষ্ঠীকে একাধিক দেশের হাতে সঁপে দিয়ে গোলামীর জিঞ্জিরে আবদ্ধ থাকার ব্যবস্থা করে দেয়ার মধ্যে।

কুর্দি জাতিই সম্ভবত সবচাইতে বড় জাতি যারা নিজেদের বিশাল জনগোষ্ঠী ও ভূমি নিয়েও অন্যের অধীনে পরাধীন হয়ে আছে যুগের পর যুগ। এই বৃহৎ জাতিগোষ্ঠীকে পরিকল্পিতভাবে বিভক্ত করে রাখা হয়েছে। কুর্দিদের জন্মই হয়েছে যেন প্রতারিত হওয়ার জন্য। কুর্দিরা একত্র হয়ে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করতে না পারলেও বিচ্ছিন্নভাবেই তারা তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে যুগের পর যুগ। কুর্দিরা প্রধানত চারটি দেশে ভাগে ভাগ হয়ে যাবার পর থেকে তারা আর একক কুর্দি জাতি সত্তার পরিচয় বহন করতে পারছে না। তাদেরকে আজ আলাদা আলাদা পরিচয়ে পরিচিত হতে হচ্ছে। যারা তুরস্কে আছে তাদেরকে তুর্কি-কুর্দি। যারা ইরাকে আছে তাদেরকে ইরাকি-কুর্দি। যারা ইরানে আছে তাদেরকে ইরানী-কুর্দি ও যারা সিরিয়াতে আছে তাদেরকে সিরীয়-কুর্দি পরিচয় নিয়ে ঘুরতে হয়।

প্রথমেই আসা যাক তুর্কি-কুর্দিদের প্রসঙ্গে। ১৯২৩ সালে কুর্দিরা বিভক্ত হবার পর সবচেয়ে বেশি কুর্দিদের ঠাঁই হয় তুর্কিতে। শুরু থেকেই তুর্কিরা কুর্দিদের ভাষা-সংস্কৃতিকে কঠোর হস্তে দমন করার জন্য সক্রিয় হয়ে উঠে। এমনকি জোর করে তাদের কুর্দি পরিচয়ের স্থলে তুর্কি পরিচয়কে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালানো হয়। কুর্দি নাম এবং সংস্কৃতিতেও আনা হয়েছিলো নিষেধাজ্ঞা, কুর্দিদের ভাষা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছিল এবং কুর্দিদের কুর্দি নামে না ডেকে ডাকা হতো পার্বত্য তুর্কির মানুষ বলে। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত কুর্দিদের মাতৃভাষা তুরস্কে নিষিদ্ধ ছিল। এই সময়ে কুর্দিরাও বসে ছিল না। ১৯২৩ সালের পর থেকে স্বাধীন কুর্দিস্তান প্রতিষ্ঠার দাবীতে কুর্দিরা বেশ কয়েকটি বিদ্রোহ করে, কিন্তু তুর্কি শাসকরা তা কঠোর হাতে দমন করে। ১৯৭৮ সালে কুর্দি নেতা আব্দুল্লাহ ওকালান কুর্দিস্থান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) গঠন করে তুরস্কের অভ্যন্তরেই এক স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে। এতে প্রায় ৪০ হাজার লোকের প্রাণহানি হয়। ১৯৯০ সালে পিকেকে তাদের স্বাধীনতার দাবি থেকে পিছিয়ে আসে তুর্কি সরকারের সাথে শান্তি আলোচনায় বসে। কুর্দিরা তাদের দাবি পাল্টে বলে, তারা এমন একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রদেশ চায় যেখানে থাকবে তাদের নিজেদের সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক ক্ষমতা। তুর্কি সরকার এই দাবী মেনে নিলে ১৯৯১ সালে সম্পাদিত হয় কুর্দি আর তুরস্ক সরকারের মাঝে ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি। অবসান হয় দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংঘাতের। পিকেকে তুর্কির মূল স্রােতে একিভূত হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং বর্তমানে তুর্কিপার্লামেন্টে তাদের উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধিত্বও রয়েছে। কিন্তু তারপরও নিজ দেশের কুর্দিদের নিয়ে তুর্কি সরকারের ভয়ের যেন শেষ নেই। (চলবে)

অধ্যাপক শাব্বির আহমদ শিক্ষক ও কলামিস্ট

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট