চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আইন প্রয়োগের পাশাপাশি আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি দরকার

১০ অক্টোবর, ২০১৯ | ১:০৬ পূর্বাহ্ণ

মানুষ সামাজিক জীব। প্রত্যেকটি মানুষ সমাজে সংঘবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। মানব সৃষ্টির আদিকাল থেকে বর্তমান অব্ধি এর ব্যত্যয় ঘটেনি। কিন্তু এই সংঘবদ্ধ হয়ে চলতে গিয়ে মানুষের মাঝে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয়ে মতের বিরোধ ঘটে। ফলশ্রুতিতে ঠুনকো ব্যাপার থেকে সংগঠিত হয় বড় ধরনের অপরাধ।

বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে সকল অপরাধকে দুভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। দেওয়ানি প্রকৃতির অপরাধ ও ফৌজদারি প্রকৃতির অপরাধ। সেই সাথে অপরাধের প্রকৃতি অনুযায়ী শাস্তির বিধানও প্রচলিত আইনে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে । আমাদের দেশের আইনে বহুল ব্যবহৃত ল্যাটিন টার্ম ওমহড়ৎধহঃরধ লঁৎরং হড়হ বীপঁংধঃ অর্থ – আইন জানে না এটা কোন অজুহাত হতে পারে না। অর্থাৎ ১৫২ অনুচ্ছেদে আইনের সংজ্ঞা অনুযায়ী যদি কোন আইন পাশ করা হয় তাহলে এটি ধরেই নেয়া হয় যে, পাশকৃত আইনটি সম্পর্কে দেশের সর্বস্তরের মানুষ জ্ঞাত। আমাদের বাংলাদেশে যেখানে সাক্ষরতার হার ৭২.৯ শতাংশ, প্রায় ২৮ শতাংশ মানুষ অক্ষরজ্ঞানহীন। এমতাবস্থায় দেশের সর্বস্তরের মানুষ আইন জানেন এটা ধরে নেয়া সম্পূর্ণ সঠিক নয়। এছাড়াও অনেক জরিপে দেখা গেছে যে, শুধু নিরক্ষর জনগোষ্ঠী নন অনেক শিক্ষিত বা অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন মানুষ ও প্রচলিত আইন সম্পর্কে পূর্ণভাবে জ্ঞাত নন।

একজন ব্যক্তি যদি আইনের বিধান না জানেন তাহলে তার অন্তরে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং আইন ভঙ্গ করার যে শাস্তির বিধায় রয়েছে সেই বিধান সম্পর্কে ভীতি জন্মাবে কিভাবে? এইভাবে চলতে থাকলে অপরাধ প্রবণতা লাগামহীন হয়ে যাবে।

এমতাবস্থায় অপরাধ প্রবণতা হ্্রাস করতে হলে সর্বস্তরের নাগরিকের মাঝে প্রচলিত আইন সম্পর্কে অবগত করা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। আর এই কাজগুলো বাস্তবায়নের জন্য আইন বিষয়ক সংগঠনগুলোকে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। সর্বস্তরের মানুষের মাঝে আইন সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ইভটিজিং, মাদক, যৌনহয়রানিসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রচলিত আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সেমিনার, সিম্পোজিয়াম করা যেতে পারে।

এছাড়াও ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোও জনসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যকরী স্থান হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এসব গণসচেতনতা যদি অব্যাহত রাখলে আশা করা যায় দেশের অপরাধ প্রবণতা আর বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে। বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষেই একটি সোনার বাংলাদেশে পরিণত হবে।

ফয়সাল মাহমুদ আল-মারজান
শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট