চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

জাতির পিতার ছবির মর্যাদা রক্ষা

৮ মে, ২০১৯ | ১:২১ পূর্বাহ্ণ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি যত্রতত্র, যেভাবে-সেভাবে ব্যবহার করতে দেখা যায়। মহান নেতার ছবি যেনতেনভাবে প্রচার কাজে কিংবা নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ হাসিলে ছাপা হয়। বিভিন্ন মিডিয়ায় যেমন- ব্যানার, পোস্টার, লিফলেট, ফেস্টুন তা সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার হচ্ছে না। সঠিক পরিচর্যার অভাবে বঙ্গবন্ধুর ছবিকে অমর্যাদা করা হচ্ছে। জাতির পিতার ছবিকে অমর্যাদা করা মানে জাতির পিতাকে অমর্যাদা করারই শামিল। অনেক দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা সংগঠন তাদের সাংগঠনিক কর্মকা- ছাড়াও জাতীয় অনুষ্ঠান ও অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার করে আসছে। এটা যত্নসহকারে সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ করলে জাতির পিতার সম্মান সমুন্নত থাকে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধুর ছবি হেলাফেলায় যেনতেনভাবে ব্যবহার করে মর্যাদার স্থলে অমর্যাদাই করা হচ্ছে, যা আদৌ কাম্য নয়।
নিজের বা নিজেদের কোনো নির্বাচনি প্রচার কাজে নিম্নমানের ছাপা দিয়ে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার দুষ্কর্মের শামিল। অনেক সময় এমনও দেখা যায়, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবিসংবলিত ব্যানার, পোস্টার মাটিতে পড়ে থাকে। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অতি সহজে তার ছবি ব্যবহার করার কারণে ধুলায় লুটায়। এমনকি পরিত্যক্ত অবস্থায় রাস্তায় যেখানে-সেখানে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পথচারীর অবচেতনে পায়ের তলায় পদদলিত হয়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও গর্হিত কাজ বলে আমি মনে করি। যে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে কিংবা ছবিতে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে ফুল বা ফুলের তোড়া দিয়ে শ্রদ্ধাচিত্তে সম্মান জানাই, সে ছবি অবহেলা, অযত্ন ও অসচেতনতার কারণে ধুলায় লুটিয়ে পদদলিত হবে- এটা সহজে মেনে নেওয়া যায় না। বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার করতে হলে প্রথমে বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান দিতে হবে, তারপর তার ছবি ব্যবহার করতে হবে। তাতেই শুধু তার মর্যাদা বলবৎ থাকবে, অন্যথায় নয়। সস্তা কাগজে অস্পষ্ট ছাপা সন্নিবেশিত করে নির্বাচনি কাজে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার করে নিজে বা নিজেরা মর্যাদার আসনে বসবেন, আর বঙ্গবন্ধুর ছবির সেই লিফলেট ধুলায় লুটাবে এবং পদদলিত হয়ে অমর্যাদা করা হবে- এমন দৃশ্য বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহারকারীর হৃদয় ছুঁয়ে যেতে না পারে; কিন্তু অগণিত বঙ্গবন্ধু প্রেমিক বা অনুরাগীর হৃদয় ভাঙে; কষ্ট পায়। আর এ কষ্ট দেওয়ার অধিকার কারও নেই।
এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করা যেতে পারে। যারা আইনের রক্ষক, এমনকি আইন দিয়ে ন্যায়-অন্যায়কে বিচার করে থাকেন- এমন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর দ্বারা অন্তত বঙ্গবন্ধুর ছবি তাদের নির্বাচনি কাজে ব্যবহারের মাধ্যমে অপদস্থ হবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। বঙ্গবন্ধুর ছবি সন্নিবেশিত করে প্রচার কাজ জোরদার করা ভালো কথা; কিন্তু জোরদারের নামে বেপরোয়া বা অদায়িত্বশীল হওয়া ভালো নয়। আশা করি সামনের দিনগুলোতে যে কেউ প্রচার কাজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহারে দায়িত্বশীল হয়ে নিয়মনীতি পালন করে চললে বঙ্গবন্ধুর ছবির মর্যাদা রক্ষা পাবে এবং জাতির ভাবমূর্তিও সমুন্নত থাকবে।

জাহাঙ্গীর কবির
কবি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট