চট্টগ্রাম বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

কাউসাং সিটির সৌন্দর্য : অনন্য উচ্চতায়

ডা. মো. ওমর ফারুক

৮ মে, ২০১৯ | ১:২১ পূর্বাহ্ণ

আলোচনা শেষে কাউসাং সিটি ট্যুরে বের হই। সরাসরি ইন্দোনেশিয়ান ফুড রেষ্টুরেন্ট-এ ঢুকি। ষরহমুধ জেলার লরধহরুঁহ রোডে অবস্থিত ওহফড়হবংরধ ভড়ড়ফ ৎবংঃড়ৎধহ-এ দুপুরের লাঞ্চ সারি। তাইওয়ানি খাবার খেতে খেতে এ ক’দিন অতিষ্ঠ হয়ে উঠি, এ খাবারের মধ্য দিয়ে যেন বাঙালিপনা খাবার খুঁজে পেয়েছি। আমরা ডেলিগেট সবাই উচ্চকিত আনন্দে ভেসে বেড়াই। সবাই বেশ প্রশংসা করলেন ইন্দোনেশিয়ান খাবারের। ভিন্ন আমেজ, ভিন্ন স্বাদের দেশে যেন ঢুকলাম। ওখান থেকে শধড়ংরঁহম ড়িৎষফ মধসবং ংঃধফরঁস পরিদর্শন। এই ংঃধফরঁস-টি ২০০৯ সালের ১৬ জুলাই ড়িৎষফ মধসবং হোস্ট করেছিল, এটি আইওসি দ্বারা স্পন্সরকৃত স্পোর্টস ইভেন্ট, যার মধ্যে রয়েছে সরকারি অলিম্পিক প্রোগ্রামের অংশ নয় এমন প্রতিযোগিতা অন্তর্ভুক্ত। ংঃধফরঁস-টি জাপানী স্থপতি টিও ইটো এবং তার কর্মীদের দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছিল। ংঃধফরঁস-টিকে বিখ্যাত করে তোলে একটি বিশেষত্ব, যাতে পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণগুলোর সাথে এটি তৈরি করা হয়েছে এবং এটি একটি ড্রাগন আকৃতির। পরিচালিত হয় ছাদের উপর অবস্থিত সৌর প্যানেলগুলো থেকে প্রাপ্ত সৌর শক্তি দ্বারা।
ওখান থেকে বুড্ডিষ্ট টেম্পল পরিদর্শন। ফো গুয়াং শান মন্দির দক্ষিণ তাইওয়ানের সবচেয়ে সুপরিচিত বৌদ্ধকেন্দ্র এবং তাইওয়ান বৃহত্তম বৌদ্ধ মঠ। এই মন্দিরের উপরে স্থিত মূর্তিটি সবচেয়ে লম্বা ব্রোঞ্জ বসা মূর্তি। বৌদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রটির অধীনে রয়েছে বৌদ্ধের দাঁত সমগ্র এবং বিভিন্ন দেশ থেকে দানকৃত বৌদ্ধ প্রত্নতাতিœক বস্তু। এটি বিশ্বের বৃহত্তম বৌদ্ধ শিল্প ভান্ডার।
১৯৯৭ সালে ফো গুয়াং শান মন্দিরটি জনসাধারণকে ধ্যান ও অন্যান্য বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের জন্য প্রার্থনার সুবিধার্থে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ১৯৯৮ সালে মাস্টার হসিং ইউন আন্তর্জাতিক ট্রিপল প্ল্যাটফর্ম পূর্ণ অর্ডিনেশনের জন্য ভারতের বুদ্ধগায়া ভ্রমণ করেন। তাঁর সফরকালীন তিব্বতি বৌদ্ধ নেতা গঙ্গকার উক্ত মন্দিরে বৌদ্ধের দাঁত রাখার জন্য মাস্টার হসিং ইউন-কে দান করেন।
বৌদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্রের নির্মাণ কাজটি ২০১১ সালে সম্পন্ন হয়েছিল। এই চূড়ান্ত নকশাটির সামনে ৮টি পাগোদা, পেছনে একটি বড় বৌদ্ধমূর্তি, দক্ষিণে মাউন্ট এবং উত্তরে একটি পার্কের অবস্থান নিশ্চিত করে। এটি একটি চমৎকার ব্যাকগ্রাউন্ড। জাদুঘরের পিছনে অবস্থিত বৌদ্ধমূর্তি বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ব্রোঞ্জ বৌদ্ধমূর্তি, যা অচিরেই দক্ষিণ তাইওয়ানের একটি বিখ্যাত ল্যান্ডমার্ক হয়ে উঠে। এদিনের সর্বশেষ পর্যটনস্থল উবধস সধষষ। এটি তাইওয়ানের বৃহত্তম শপিংমল এবং পূর্ব এশিয়ায় বৃহত্তম। এটি টুনচেনগ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন দ্বারা নির্মিত এবং পরিচালিত, এটি তাইওয়ানের বৃহত্তম খাদ্য সংগঠন ইউনিটি-রাষ্ট্রপতি এন্টারপ্রাইজ কর্পোরেশনের একটি সহায়ক সংস্থা যা অন্যান্য অনেক শিল্পে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এটি আন্তর্জাতিক স্থাপত্য সংস্থার জঞকখ দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছিল, এটি বাল্টিমোর, মেরিল্যান্ড ভিত্তিক। এখানে একটি বিনোদন পার্কসহ রেষ্টুরেন্ট, সিনেমা থিয়োটার, জিম এবং বিনোদন সুবিধা রয়েছে। সধষষ-টি ৮ তলা বিশিষ্ট বিশাল ভবন, দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়।
আমরা বাংলাদেশি ডেলিগেটরা ব্যস্ত হয়ে পড়ি কেনাকেটার জন্য।
কারো দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই-সবাই যার যার মতন কেনাকেটা সারছেন। মনে হয় গোটা কাউসাং-ই বাংলাদেশে নিয়ে আসবেন। দু’ঘন্টা কেনাকাটা শেষে ইন্দোনেশিয়া রেস্টুরেন্ট এ রাতের খাবার। কাউসাং এর একমাত্র মসজিদ, যা ইন্দোনেশিয়ান রেস্টুরেন্টের পাশে-মাগরিব ও এশার নামাজ আদায়।
১০ ডিসেম্বর রাজধানী তাইপে- এর উদ্দেশ্যে আমরা কাউসাং ছাড়ব। তাই তড়িঘড়ি ব্রেকফাস্ট শেষে দ্রুতগতিতে গাড়িতে উঠে পড়লেন ঝটপট সবাই। পৌনে ৮’টায় গাড়ি ছেড়ে যাবে, বেলায়েত স্যার আর কামরুল স্যারের জন্য গাড়ি ছাড়তে কিঞ্চিত দেরি হয়ে গেল। সোয়া ৮’টায় গাড়ি ছেড়ে দিল। পথে যাত্রা বিরতি ষধসঁহমধহ নামক স্থানে। পথিমধ্যে ংঁহ সড়ড়হ ষধশব ভ্রমণ করি আমরা সবাই।

লেখক: সভাপতি, রাউজান ক্লাব, জুনিয়র কনসালটেন্ট (ইএনটি), জেনারেল হাসপাতাল, রাঙ্গামাটি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট