চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

প্রাণের ভাষায় মনের কথা

সরকারের শুদ্ধি অভিযান

শ্রীধর দত্ত

২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১২:৫২ পূর্বাহ্ণ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলাকে সুন্দরভাবে সাজাতে গিয়ে ঘাতকদের হাতে নিহত হন। ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর আশেপাশে ছিল। দেশ স্বাধীনের পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করার মাশুল বঙ্গবন্ধুকে গুনতে হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেষ্টা করে যাচ্ছেন পিতার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করে যাতে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। যুদ্ধপরবর্তী বিপথগ্রস্ত দলীয় কর্মীদের কারণে বঙ্গবন্ধুর সুনাম ক্ষুণœ হয়েছিল। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচরে অনেক অনিয়ম আনা হয় না। দৃষ্টিগোচর হলে তিনি সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। যেমন তিনি এখন শুরু করেছেন দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে অভিযান। নিজ দলের শুদ্ধি অভিযান জনগণের দীর্ঘদিনের আকাক্সক্ষা।

রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের সেবা করা। তাই প্রধানমন্ত্রী নিজের জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দে মনোযোগ না দিয়ে দিনরাত জাতির কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। অথচ দলের কিছু অসাধু কর্মী দলকে নিজেদের স্বার্থের হাতিয়ার বানাচ্ছে। পূর্বে রাজনীতিবিদরা দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে কয়েকজন ছাড়া সবাই জনগণের সেবা নয়, নিজের পকেটের সেবা করছেন। এসব বিবেচনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শুদ্ধি অভিযান যথার্থ বলতে হবে।

পুঞ্জিভূত অপরাধপ্রবণতা মানুষকে হিং¯্র জানোয়ার হায়েনার দলে পরিণত করে। বর্তমানে রাজধানীর ক্যাসিনোগুলো হচ্ছে অন্যায় ও অসামাজিক কার্যকলাপের দুর্গস্থান। আর এগুলো পরিচালিত হচ্ছে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়। পুলিশ প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় কাজগুলো বছরের পর বছর চলে আসছে। ঢাকার দক্ষিণের যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদকে আটকের পর সব তথ্য বেরিয়ে আসে। এই খালেদ একসময় ফ্রিডম পার্টি এবং ছাত্রদল সর্বশেষ যুবলীগে যোগ দিয়েছেন। দলের জন্য যারা নিবেদিতপ্রাণ তাদেরকে বঞ্চিত করে দলছুট অন্য দলের কর্মীকে দলে স্থান দেওয়া মানে নিজের পায়ে কুড়াল মারার শামিল। তাঁর সহযোগী এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীমকে দেহরক্ষীসহ কোটি টাকা ও কোটি টাকার এফডিআর, গোলাবারুদ ও বিদেশি মদসহ আটক করা হয়। তথ্য উঠে আসে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের টেন্ডারবাজি এদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এটা শুধু রাজধানীর চিত্র এইভাবে সমগ্র বাংলাদেশ বিভিন্নভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। কিছুদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শোভন ও রাব্বানীকে পথ থেকে প্রধানমন্ত্রী বহিকার করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ছাত্রলীগকে ধরেছি এখন যুবলীগকে।

এই অভিযানগুলো শুধু ঢাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না, সমগ্র বাংলাদেশে চালাতে হবে। কারণ দলের অসাধু কর্মীরাই আজ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। অভিযান চালাতে হবে দুর্নীতিবাজ আমলাদের বিরুদ্ধে, যাদের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। কারণ তারা নানাভাবে লুটপাটের রাজত্বে রাজ করে। আর এসব অভিযান যেন ফটোসেশন ও লোক দেখানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট