চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

উদারতা মহত্তের লক্ষণ

২৬ আগস্ট, ২০১৯ | ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ

রাস্তার পাশে বটগাছটি দাঁড়িয়ে আছে। কর্মক্লান্ত কৃষক দুপুরের টাটকা রোদে একটু শান্তির খোঁজে গাছটির নিচে এসে বসে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা এই গাছটির চারপাশে লুকোচুরি খেলে। গ্রীষ্মের গরম আর তাপ থেকে একটু মুক্তির আশায় রাস্তার পথিক গাছটির নিচে দাঁড়িয়ে থাকে। সন্ধ্যা যখন নামে পাখিরা কিচিরমিচির শব্দ করতে করতে এই গাছটিতে ফিরে আসে। পাখিগুলো সারা রাত নিশ্চিন্তমনে গাছটিতে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত যখন শেষ হয় গাছটি অক্সিজেন দেওয়া শুরু করে। একদিন দেখলাম গ্রামের গরীব মহিলাটি গাছের শুকনা পাতাগুলো নিয়ে যাচ্ছে। কারণ মহিলাটি পাতাগুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করবে। সেদিন খুব বৃষ্টি হচ্ছিল। গাছের একটা ঢাল ভেঙে মাথার ওপর দিয়ে বাড়িতে চলে গেলাম। গাছটির কাছে যখন যাই তখন মনে মনে ভাবি এই গাছটির জীবনীশক্তি যদি আমি পেতাম তাহলে মানুষের অন্তরে দ্রুত পৌঁছে যেতাম। প্রতিদানের প্রত্যাশা না রেখে ঐ গাছটির মত মানুষের সেবা করতাম। আমরা অনেকে তো আছি সবকিছুতে প্রতিদানের আশা করি। কোনো মানুষের বিপদে ২০০ টাকা দিলাম। কিন্তু এই টাকার প্রশংসা এমনভাবে চারদিকে প্রচার করি যেন অনেক অনেক টাকা দিয়ে ফেলেছি। সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে যারা কোনো কিছু প্রাপ্তির আশা না রেখে মানুষের জন্য আজো করে যাচ্ছে। তারা ধর্ম বুঝে না, বর্ণ বুঝে না, তারা বুঝে মানুষ। মানুষের উপকারের মধ্যে তারা তাদের চিন্তা চেতনাকে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ করছে। অনেকগুলো স্কুল কলেজ রয়েছে যেগুলোর প্রতিষ্ঠাতাদের নামও আমরা জানি না। এই সম্মানিত লোকগুলো জানত মানুষের মঙ্গল সাধনের মধ্যে যে প্রাপ্তি সেটাই আনন্দের। যারা মানুষের জন্য কাজ করেছেন অথচ নিজের আত্মপ্রচারে লিপ্ত ছিলেন না সেই মানুষগুলোকে সম্মান জানানো আমাদের দরকার। বট গাছটি আমাকে শিক্ষা দেয় শুধু নিজে বেঁচে থাকার জন্য জীবন নয়। সম্মানী ব্যক্তিদের সম্মান দেওয়ার পাশাপাশি সমাজ আর দেশের জন্য কিছু করব। প্রতিদানের প্রত্যক্ষ আশা না করেই আমরা কাজ করব। সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাব শান্তির সুশীতল গাছের ছায়ায়। যেখানে থাকবে উদারতা। পারস্পরিক স্নেহ,মমতা আর ভালবাসার নতুন মেলবন্ধন।

রূপম চক্রবর্ত্তী
চট্টগ্রাম।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট