চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

আধুনিক চীনের ঐতিহ্যের প্রতীক ফরবিডেন সিটি

ডা. মোহাম্মদ ওমর ফারুক

২৬ আগস্ট, ২০১৯ | ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ

ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব চায়না এর উল্টো দিকে রয়েছে ঈযরহবংব ঢ়ধৎষরধসবহঃ। এটি চীনা রাষ্ট্রশক্তির সর্বোচ্চ সংস্থা এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জাতীয় আইনী প্রতিষ্ঠান। ২০১৮ সালের সংস্থাটিতে সদস্য সংখ্যা ছিল ২,৯৮০-যেটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ সংখ্যক সদস্য দ্বারা গঠিত বৃহত্তম পার্লামেন্ট বডি। সংসদটি প্রতিবছর দু’বার অধিবেশনে বসে। সদস্যগণ প্রতিবছর দু’সপ্তাহ ব্যাপী ফুলসেশন অধিবেশনে অংশ নেন। উক্ত সংসদের সদস্যরা আইনের বিভন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশের ভোটাভুটিতে অংশ নেয় এবং তারা খন্ডকালীন আইনপ্রণেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এজন্য তাদেরকে কোন আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হয় না।

ন্যাশনাল পিপল্স কংগ্রেস এর অধিকাংশ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত হয় কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটি কর্তৃক, যে কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত রয়েছেন ১৭০ জন আইন প্রণেতা। যখন ন্যাশনাল পিপল্স কংগ্রেস এর পূর্ণ সেশন অনুষ্ঠিত হয় না তখন উক্ত আইন প্রণেতাগণ চলতি সেশনে মিলিত হন। এনপিসি সদস্যগণ সংসদসদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সরকার এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির বিভিন্ন পদ-পদবীও সংরক্ষণ করেন। এনপিসি সদস্যদের মধ্যে চীনা রাজনীতির সিনিয়র কর্মকর্তাগণ রয়েছেন। পাশাপাশি এনপিসির স্থায়ী কমিটির সদস্যগণ সরকারী বিচার বিভাগ অথবা অন্যকোন নির্বাহী পদ-পদবীতে জড়িত থাকার অধিকার রাখেন না।

ঈযরহবংব ঢ়ধৎষরধসবহঃ বা ন্যাশনাল পিপল্স কংগ্রেস এর উল্টো দিকে রয়েছে ঋড়ৎনরফফবহ পরঃু বা নিষিদ্ধ নগরী-যেটি চীনা সা¤্রাজ্যিক প্রাসাদ, যা মিং রাজবংশ থেকে কিং রাজবংশের শেষ পর্যন্ত ছিল (১৪২০-১৯১২), এটি চীনের বেইজিং শহরের মাঝে অবস্থিত। বর্তমানে এটি একটি প্রাসাদ জাদুঘর-প্রায় ৫০০ বছর ধরে এটি স¤্রাটদের এবং তাঁদের পরিবারের পাশাপাশি চীনা সরকারের আনুষ্ঠানিক এবং রাজনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে আসছে। নগরীটির অবস্থান হল ৪ ঔরহমংযধহ ঋৎড়হঃ ঝঃ, উড়হমপযবহম ছঁ, ইবরলরহম ঝযর, চীন। নিষিদ্ধ নগরীটি সরহম ধহফ ছরহম ফুহধংঃরবং- এর সময়কার চব্বিশ রাজার প্রাসাদ ছিল এবং এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ প্রাচীন স্থাপত্যকলার আধার। নগরীটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৪০৬ সালে এবং নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৪২০ সালে। কমপ্লেক্সটিতে ৯৮০টি ভবন রয়েছে এবং আয়তন ১৮০ একর জুড়ে। ঋড়ৎনরফফবহ পরঃু ১৯৮৭ সালে ডড়ৎষফ যবৎরঃধমব ংরঃব হিসাবে আবির্ভূত হয় এবং কাঠের নির্মিত প্রাচীন স্থাপনার মধ্যে পৃথিবীতে সর্বোচ্চ সংগ্রহশালার জন্যে ইউনেস্কো-তে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। ১৯২৫ সাল থেকে ঋড়ৎনরফফবহ পরঃু চায়না প্রাসাদ মিউজিয়ামের অধীনে চলে যায়।

যেটির প্রচুর সংগ্রহ মিং এবং কিং রাজবংশের সময়কার থেকে ছিল। মিউজিয়ামটির পূর্বে সংগ্রহের কিছু অংশ তাইওয়ানের রাজধানী তাইপে এর ঘধঃরড়হধষ ঢ়ধষধপব সঁংবঁস এ সংরক্ষিত আছে। উভয় মিউজিয়াম একই কেন্দ্র থেকে আবির্ভূত হয়েছে, চাইনীজ গৃহযুদ্ধের পরে তার বিক্ষিপ্তভাবে চলে যায়। ২০১২ সালে ঋড়ৎনরফফবহ পরঃু পরিদর্শন করেছে ১৫ মিলিয়ন পর্যটক এবং তা ২০১৬-২০১৭ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ মিলিয়ন পর্যটক। এই সিটির অপরনাম ঋড়ৎনরফফবহ ঢ়ধষধপব। এই নগরীর বৈশিষ্ট হল: রাজার অনুমতি ছাড়া কেউ এই নগরীতে ঢুকতে বা বের হতে পারবেন না। এটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৪০৬ সালে এবং নির্মাণ প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লেগেছে ১৪ বছর এবং ১ মিলিয়নের বেশি শ্রমিক নির্মাণ কাজে জড়িত ছিল।

ঋড়ৎনরফফবহ পরঃু এর মূল ভবনগুলোর ফ্লোর তৈরি হয়েছে গোল্ডেন ইট দ্বারা। ১৪২০ থেকে ১৬৪৪ সাল পর্যন্ত এটি মিং রাজবংশের অধীনে ছিল। ১৬৪৪ সালের এপ্রিলে এটি ষর ুরপযবহম এর অধীনে চলে যায়। ১৮৬০ সালে দ্বিতীয় অপিয়াম যুদ্ধকালীন সময়ে ঋড়ৎনরফফবহ পরঃু ধহমষড়-ভৎবহপয পরাশক্তির কাছে চলে যায় এবং তা যুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকে। ১৯১২ সালে ঋড়ৎনরফফবহ পরঃু চায়নার রাজনৈতিক কেন্দ্র হিসাবে পরিচিতি পায়। ১৯৪৯ সালে ঢ়বড়ঢ়ষব’ং ৎবঢ়ঁনষরপ ড়ভ ঈযরহধ প্রতিষ্ঠার পর ঋড়ৎনরফফবহ পরঃু কিছু ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ২০১৭ সালের ৮ নভেম্বর শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঋড়ৎনরফফবহ পরঃু-তে মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেয়।

লেখক : সভাপতি, রাউজান ক্লাব
জুনিয়র কনসালটেন্ট (ইএনটি),
জেনারেল হাসপাতাল, রাঙ্গামাটি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট