চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

ঈদুল আজহার প্রার্থনা

সাইমুম চৌধুরী

১০ আগস্ট, ২০১৯ | ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ

আরবী জিলহজ¦ মাসের ১০ তারিখ ১২ আগস্ট/১৯ দেশের সকল মুসলমান এদিন আল্লাহর রাহে পশু কোরবানীর মাধ্যমে ঈদুল আজহা পালন করবে। ১০, ১১ ও ১২ জিলহজ্জ যে কোনো একদিন সূর্য উদয়ের পর থেকে দুপুর ১২ টার মধ্যে ঈদুল আজহার ২ রাকাত ওয়াজিব নামাজ (মসজিদ বা ঈদগাহে) ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে ছয় তকবীরের সহিত আদায় করতে হয়। আর্থিকভাবে সামর্থবান প্রত্যেক মুসলমান নরনারী পশু (গরু, ছাগল, ভেড়া, উট, দুম্বা) কোরবানী দিতে হয়। উল্লেখ্য যাদের জন্য যাকাত দেয়া ফরজ এবং ঈদের দিনে সেই মুসলমান নরনারীর নিকট সেই পরিমাণ মাল বা অর্থ জমা থাকে, তার জন্য কোরবানী ওয়াজিব।
চট্টগ্রাম মহানগরী সহ দেশের নগর মহানগরে এমনকি কোনো কোনো জেলা এবং উপজেলা সহরে কোরবানী পশু জবাইয়ের পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এমত অবস্থায় কোরবানী দাতাগণ সড়ক মহাসড়কের পাশেই কোরবানীর পশু জবাই করে থাকেন। তাদের প্রতি অনুরোধ কোরবানীর কাজ সমাপ্তের সাথে সাথে ওই স্থান পর্যাপ্ত পানি ঢেলে পরিষ্কার করবেন। মনে রাখবেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ঈমানের একটি অংশ।
পশুর চামড়া হলো দেশের বৈদেশিক মুদ্রা লাভের একটি খাত। তাই কোরবানী পশুর চামড়া ছাড়ানোর সঠিক পদ্ধতি জানা লোক নিয়োগ করা সবার নৈতিক দায়িত্ব। এতে কোরবানী দাতাদের কিছু অর্থ বেশি খরচ হলেও দেশ লাভবান হয়। সাথে সাথে চামড়ার দামও বেশি পাওয়া যায়। অন্যদিকে চামড়া বিক্রির টাকা বেশি সংখ্যক গরীব মানুষেরা পেয়ে থাকে। উল্লেখ্য কোরবানী দেয়া পশুর চামড়া বিক্রির অর্থ হলো গরীবের হক। তাই চামড়া বিক্রির টাকা গরীবদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া কোরবানী দাতাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাই প্রত্যেক কোরবানী দাতাদের প্রতি অনুরোধ, আনাড়ি লোক দিয়ে নয় অভিজ্ঞ লোকদের দিয়ে কোরবানী পশুর চামড়া ছাড়ানোর কাজে নিয়োজিত করবেন।
ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদুল আজহার কোরবানীর পশু পেয়ে পরিবারের শিশুদের মধ্যে আনন্দের আর শেষ থাকে না। তাই প্রায়ই দেখা যায় কোরবানীদাতাদের শিশু কিশোরেরা কোরবানীর পশু (গরু, ছাগল, ভেড়া) পেয়ে তাদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।
শিশুরা গাছের পাতা, শুকনো ঘাস হাতে নিয়ে পশুর মুখের সামনে বাড়িয়ে দেয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় পরিবারের কোনো কোনো যুবক কোরবানীর পশু নিয়ে মাঠে বা মুক্ত এলাকায় অন্যান্য পশুর সাথে লড়াই লাগিয়ে দেয়। বিষয়টি অমানবিক। কারণ এতে পশুটি আঘাত (পশুর সিং-এ) প্রাপ্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। তাই সংসারের বড়দের নজরে রাখা প্রয়োজন যাতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে। একটি বিষয় কোরবানী দাতাদের নজরে রাখা প্রয়োজন কোরবানীর পশু হতে হবে নিখুত। আপনি নিখুত পশু বাজার থেকে নিয়ে এলেন। কিন্তু আপনার সন্তানরা আনন্দ পেতে ওই পশুকে অন্য একটি পশুর সাথে লড়াই লাগিয়ে দেয়ায় পশুটির শরীর ক্ষত হলো। ক্ষত হবার দরুন সেই পশুটি কোরবানী দেয়া সিদ্ধ হবে না। পাড়া মহল্লার মসজিদের ঈমাম সাহেবদের প্রতি অনুরোধ আপনারা উপস্থিত নামাজীদের মধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করবেন, যাতে কোরবানী পশু নিয়ে লড়াইয়ে কেউ সম্পৃক্ত না হয়। আজ আমরা এমন একটা মুহূর্তে কোরবানী করতে যাচ্ছি যখন দেশের একটা বিরাট অংশ বন্যা কবলিত।
সন্ত্রাস, ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম আমাদের অধিকাংশকে গ্রাস করে নিয়েছে। আসুন আমরা সবাই আল্লাহর বিধাননুযায়ী চলার প্রতিজ্ঞবদ্ধ হই। ঈদুল আজহার দিনে সকল পাপাচার থেকে মুক্ত হয়ে দেশ ও জাতি গঠনে আমাদের ভেতরের পশুটাকে বিনাশ করে দিই চিরতরে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট