চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

গ্রীষ্মের ফুল

আমিন কাদেরী

৪ মে, ২০১৯ | ১:০৯ পূর্বাহ্ণ

বৈশাখী দমকা হাওয়ায় গ্রামীণ বাংলায় ধূলাবালি উড়ে যায়। নেড়া বৃক্ষের ডালপালা ভেঙ্গে আরো নেড়া হয়। বৃষ্টিতে মৃত্তিকা সিক্ত হয়। ধূলায় ধূসরিমা প্রকৃতি একটু একটু নির্মল হয়। তখন উজ্জ্বল হলুদ আলোর বন্যা নিয়ে সোনাইল গাছের ডালে ডালে ঝুলে থাকে প্রস্ফুটিত মঞ্জরী। পথচলা পথিক থমকে দাঁড়ায়। কেউ কেউ ক্যামেরা হাতে নিয়ে ছবি উঠায়। কবিরা অপলক দৃষ্টিতে আনমনা হয়ে তাকিয়ে থাকে। অনেকে আপন মনে গুনগুন করে গান গেয়ে যায়-
চোখ ফেরানো যায় গো সখি; মন ফেরানো যায় না!
এ গাছের বৈশিষ্ট হলো তার ঝুলন্ত দীর্ঘ মঞ্জরী। হলুদ। সোনালী হলুদ। ফুলে ফুলে ডাল ছেয়ে যায়। শাখা দেখা যায় না। সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে রাজকীয় বৃটিশরা নাম রেখেছে ‘গোল্ডেন শাওয়ার’। সোনালু ফল ধূসর। গোল। লম্বা। দেখতে লাঠির মতো পাতা, ফুল ও ফল বানরের প্রিয় খাদ্য। হয়তো এসব বিবেচনায় গ্রাম বাংলায় নাম তার বান্দরের লাঠি। মাঝারি ধরনের বৃক্ষটি প্রাকৃতিকভাবেই জন্মায়। কষ্ট সহিষ্ণু। উঁচু অনুর্বর জমিতে যেমন বেড়ে উঠে তেমনি ভিটা বাড়ীর আঙ্গিনায়, পুকুর পাড়ে, গ্রামীণ রাস্তার ধারে নিচু জমিতে অবাধে বেড়ে উঠে। সোনালু ছায়াঘন নয়। তাই ছায়াতরু হিসাবে উদ্যান উন্নয়ন বিভাগ, বনবিভাগ, সড়ক ও জনপদের কাছে তরুটি গুরুত্ব বহন করে না। বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি’তে তালিকাভুক্ত নয়। ফলের শাঁস বাত রোগ উপশম করে। বমনোদ্রেক এবং বিশেষ সময়ের মহিলা রোগেও উপকারী। অনাদরে অবহেলায় তরুটি আজো বেঁচে আছে। পরিবেশ ও প্রকৃতির পক্ষ থেকে বিগত কয়েক বছর ধরে আমরা (প্রকৃতির সদস্যরা) বিভিন্ন স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সোনালু তরু রোপণ করে আসছি বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার আশায়।
হে প্রস্ফুটিত সোনালু তরু !
তুমি বেঁচে থাকো সোনালী স্বপ্নে
চিরদিন বৃষ্টিমেঘে
বাংলাদেশের পথে প্রান্তরে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট