চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

ইনসাইড হেল

ষড়যন্ত্র

খোলামেলা সংলাপ

ফজলুল হক

৩০ জুলাই, ২০১৯ | ১:২২ পূর্বাহ্ণ

ষড়যন্ত্রকারীরা মনে করে, তারা খুব শক্তিশালী, তাদের হাত লম্বা, তাদের প্রভাব উপর থেকে নীচে- সর্বত্র বিস্তৃত। ষড়যন্ত্রকারী আমাকে বা আপনাকে তার ষড়যন্ত্রের জালে ফাঁসাতে পারে। সরকারকে নাকানি চুবানি খাওয়াতে পারে। আমার খুব কষ্ট হয়, যখন বুঝতে পারি কেউ তার কাজ আদায় করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। যে কোন মানুষ চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে চায় না। পরাধীনতা ও দাসত্ব মেনে নিতে চায়না। কেউ নিজ আত্মসম্মান জলাঞ্জলি দিতে চায় না। এমন মানুষ আছে, যে ক্ষমতার জোরে, বুদ্ধির জোরে অন্যকে কব্জা করতে চায়। কখনো তারা ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়। ষড়যন্ত্রকারীরা দুনিয়াকে দোজখ বানিয়ে ছাড়ে।
আমি যখন চট্টগ্রামের সরকারী হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করি, তখন আমার এক সহকর্মী আমাকে বলেন, স্যার, টেলিফোনের জন্য চাকুরী করতে পারবেন না। আমি বলি, টেলিফোনের দোষ কি? উনি বল্লেন, উপর থেকে টেলিফোন আসবে, আপনি উপরের অনুরোধ রক্ষা করতে করতে ব্যতিব্যস্ত হবেন, সাংবাদিকরা আপনার পেছনে লাগবে, আপনার ঘুম হারাম হবে। আমি তাকে বলি, আমি “চাপ-প্রুফ” নই। তুমিও “চাপ-প্রুফ” নও। তুমি শুনেছ, আমাকে চট্টগ্রাম সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। শুরু হয় ষড়যন্ত্র। নীচের ষড়যন্ত্রকারীরা এত শক্তিশালী ছিল যে, সে সরকার আমার নিয়োগ বাতিল করে। ষড়যন্ত্রকারীরা আত্মগোপনে থাকে এবং কাউকে না কাউকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে। উপরের চাপ সামাল দেয়ার জন্য আপনি কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। আমি উপরের চাপ সামাল দিতে দিতে চাকুরী জীবন পার করেছি। কিন্তু নীচের চাপ ছিল বিপর্যয়কর। কেউ ফোনে পরিচয় দিচ্ছে, আমি অমুক “বড় ভাই”, অমুক “সন্ত্রাসী”, অমুক “গ্যাং লিডার”- আমি ভর্তির জন্য লোক পাঠাচ্ছি। কাজ করে দিবেন। আমি বলি, সরকারী কলেজে ভর্তি নিয়ম মাফিক হয়। আমি নিয়ম ভাংতে পারব? সে বলে, আপনার সহকর্মীরা আমার কাজ করে দেবে। আপনি চুপ থাকবেন। ট্যারা কিছু করলে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেবো। ভাল মন্দ খেয়ে নিয়েন। আমার ধারনা, এসব টেলিফোন কল ফেইক। খুনী- খুন করে। সন্ত্রাসী ত্রাস সৃষ্টি করে। হুমকি দেয়না। আমি এসব টেলিফোন হুমকিকে পাত্তা দিতাম না। আরো অনেক রকমের ফোন আসত। অনেকে পরিচয় দিত, আমি অমুক মন্ত্রী স্যারের এপিএস। মন্ত্রীর স্টাফের ফোন অগ্রাহ্য করা যায় না। বলতেন, স্যারের কাছে লোকজন আসে। স্যার, রাজনীতিবিদ, নিজ দলের কর্মীদের না বলতে পারেন না। আপনার কাছে একটা তালিকা পাঠাচ্ছি। আমি বলতাম, আমি নিয়মের রশিতে আষ্টে পৃষ্টে বাঁধা। আমি পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা তালিকা বানাই। আমি কি করে নিয়ম ভঙ্গ করব? (তখন অন লাইন ভর্তি প্রক্রিয়া ছিল না।) আমাকে দয়া করে নিয়ম ভাংতে বলবেন না। এপিএস বলতেন, স্যারের কথা না শুনলে উনি রাগ করবেন। আপনাদের মতো অনেকে মন্ত্রীর কাছে তদবির করতে আসে না? মন্ত্রীর ক্ষমতা সম্পর্কে জানেন না? যেদিন পদ থাকবে না, সেদিন বুঝবেন? আফসোস, যারা মন্ত্রী হন, উনারা নির্বাচনের সময় ভোটারের কাছে যান। ভোটার ভোট না দিলে তিনি এমপি হতে পারতেন? সরকারের কাজ হলো জনগণকে সেবা দেওয়া। সেবক হতে চেয়ে কখন উনি প্রভু বনে যান? আওয়ামী লীগ, বিএনপি যে দলের মন্ত্রী আপনি হোন না কেন, আপনারা দয়া করে ভাববেন, আপনারা জনগণের প্রতিনিধি এবং সেবক। আপনারা আপনাদের পার্সোনাল স্টাফ্দের নিয়ন্ত্রণে রাখেন না কেন? এ যুগে জনগণ অত্যাচারিত হওয়া পছন্দ করে না। বড় বড় কর্তাদের ব্যক্তিগত স্টাফদের আচরণ কোন কোন সময় কষ্টদায়ক হয়। ২০০৬ সালে আমি বাংগালোরের বমেসন্দ্রেতে অবস্থিত নারায়না হৃদয়ালয়া হাসপাতালে গিয়েছিলাম ডা. দেবী শেঠিকে দেখানোর জন্য। যাওয়ার সময় মহিউদ্দিন ভাই বলেছিলেন, আমার কাছ থেকে চিঠি নিয়া যাও। আমি সেখানে হার্টের চিকিৎসা করাই। শেষ পর্যন্ত আমি এনজিওগ্রাম করানোর জন্য দেবী শেঠির হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। আমি মহিউদ্দিন ভাইয়ের চিঠি নিই নি। ভেবেছিলাম নরমালি দেখাব। তখন আমার ভাগনি মুনমুন বাংগালোরে একটি কলেজে পড়ে। সে আমার জন্য বাংগালোর সিটিতে অরবিন্দ আশ্রমে একটি রেস্ট হাউস বুক করে। ব্যোমেসন্দ্রে নারায়না হৃদয়ালয়াতে গিয়ে প্রাথমিক টেস্ট করাই। জেনারেল ফিজিশিয়ান আমাকে দেখেন। সেখান থেকে ডা. দেবী শেঠির সাথে এপয়েন্টমেন্ট করে ঠিক হয় যে পরদিন আমি সকাল সাড়ে আটটায় এসে দেখা করব ডা. সাহেবের সাথে। যথারীতি যথাসময়ে বাংগালোর সিটি থেকে বোমেসন্দ্রেতে আসি। ডাক্তারের অপেক্ষায় বসে থাকি। যতবার কাউন্টারে যাই, একটাই জবাব পাই, শেঠি সাব কা পিএস আভি কুরসি পর নেহি হ্যায়। ক্যন্টিনে গিয়ে কার্ড রাইস খেয়ে এসে বসে থাকি। নিরীহ মানুষ, আমার কি করার আছে। আমার পাশে সাঈদা নামে এক পাকিস্তানী মহিলা বসে ছিল। সাঈদা আমাকে বলে, জনাব গোস্তাখী মাফ কি জিয়ে, আপ্ হামারা সাথ্ আওতো জেরা? আমরা কাউন্টারে গিয়ে বল্লাম, “সুরজ ঢল গিয়া, শেঠিকা মোলাকাত কব্হোগা?” উত্তর একটাই, পিএস কুরসি পর নেহি হ্যায়। সাঈদা আগুনের মতো উত্তপ্ত হয়ে বলে, ক্যায়া কাহা তোমনে? ক্যায়া কাহা? আই ক্যান ওয়েট আওয়ারস টু গেদার ফর ডা. শেঠি- বাট আই ক্যান নট ওয়েট ফর হিস্ পিএস। তোম কানুন কা বাত করো। সে ধমকে কাজ হয়েছিল। বাংলাদেশে আমরা মন্ত্রীর ধমক খাইনা, কিন্তু এপিএসদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য সহ্য করি। সব এপিএস তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে সেটা আমি বলছি না। কেউ কেউ করে। মন্ত্রী বা মেয়র যখন নির্বাচনের প্রাক্কালে ভোটের জন্য আমাদের কাছে আসেন, আমরা আনন্দিত হই। উনাদের পেছনে হাঁটি। উনাদেরকে নিজের ঘরে নিয়ে যাই। এমন আচরণ করি, যেন উনারা আমাদের আত্মীয়। আমাদের কাছে যে কেউ আসতে পারে। ভোটারের তো আর এপিএস নাই। কিন্তু উনি মন্ত্রী হওয়ার পর, মেয়র হওয়ার পর আমি উনার কাছে গেলে আমি আর পাত্তা পাই না। এপিএসের শরণাপন্ন হতে হয়। চাকুরী জীবনে অনেক চাপ সহ্য করতে হয়েছে। অনেক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়েছে। ছিল নীচের চাপ, উপরের চাপ, ভেতরের ষড়যন্ত্র এবং বাহিরের ষড়যন্ত্র। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাক-পবিত্র, কখনো কখনো মনে হতো, আই এম ইনসাইড হেল।
সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ থাকার সময় উপরের চাপ আমাকে বিব্রত করেছে, নীচের চাপ করেছে বিপর্যস্ত। সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ টাউটরা আমাদেরকে উপরের লেভেলের ভয় দেখাত। নীচের চাপ জীবন বিপজ্জনক করে তোলে। দু’একজন আসতেন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে। খবর নিয়ে জানতাম, তারা হয়ত নামসর্বস্ব পত্রিকার সাংবাদিক অথবা আদৌ সাংবাদিক নন। তাদের চাপ ছিল অসহ্য। এখন অনেকে অনলাইন পোর্টালের কথা বলে। ফেসবুকে লিখে এমন অনেকে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেয়। এখন আসল সাংবাদিকের চাইতে সাংবাদিক পরিচয় দানকারীর সংখ্যা বেশী।
কিছু তরুণ হাতে “বোম্বা” নাড়াতে নাড়াতে আসত। সাংবাদিকদের সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় খুব ভাল। গণমাধ্যমকে আমি পার্লামেন্টের মতোই গুরুত্বপুর্ণ বলে মনে করি। সাংবাদিকরাই মানুষের কন্ঠস্বর জোরালো করে। সাংবাদিক ছাড়া দেশ কল্পনা করা যায় না। “বোম্বা” হাতে তরুণ সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলে, আমার কথা না শুনলে নিউজ করব। চাইলে নেগেটিভ নিউজ করতে পারি। আমি অসহায়। কিন্তু তার কথা শুনে তো আমি অবৈধ ভর্তি করাতে পারবো না? অনেকে গুজব ছড়ায়। প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। স্থাপনার বিরুদ্ধে। পদ্মা সেতুতে “কল্লা” লাগবে- এই কথা সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচার বা ভাইরাল করেছে কারা? এটা ষড়যন্ত্র নয়? যখন আমরা চারদিকে অন্ধকার দেখি, তখন ভাবি, সাংবাদিক ভাই এগিয়ে আসবেন। যখন সাংবাদিক নামধারী কেউ প্রতারণা করে, তখন খুব কষ্ট পাই। যখন ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তৃত হয়, তখন ধারণা করি, সাংবাদিকরা ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করতে পারেন। সত্যিকার সাংবাদিক তাই করেন। যখন দেখি, কোন সাংবাদিক স্বার্থের পেছনে ছুটছেন, খুব খারাপ লাগে।
এখন পদ্মা ব্রীজে মানুষের “কল্লা” লাগবে “রক্ত” লাগবে, এমন গুজব ছড়িয়ে কারা পথে প্রান্তরে “ছেলেধরা”, “কল্লা কাডনি” অপবাদ দিয়ে গনপিটুনির উস্কানী দিচ্ছে? আমার মনে হয় এটা এক গভীর ষড়যন্ত্র। ষড়যন্ত্রকারীদের আসল রূপ উদঘাটিত হওয়া উচিৎ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের কেউ কেউ হয়ত এর সাথে সামিল আছে। অনলাইন নিউজ পোর্টাল নামক অনলাইন মাধ্যমে থাকা তথাকথিত সাংবাদিকও এর সাথে থাকতে পারে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই ভাল সাংবাদিক। আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতু বানাচ্ছে- এটা কারো কারো পছন্দসই না হতে পারে। আওয়ামী লীগ যখন সরকারে থাকে তখন নানা ষড়যন্ত্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়ন করছে, এতে হয়ত কারো মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
আমাদের তরুণ রাজনৈতিক কর্মীরা প্রায় সকলেই শিক্ষিত। তাদের কাছে তাদের নিজ নিজ দলের অতীত ইতিহাস আশা করি ভাল ভাবে জানা আছে। আওয়ামী লীগ এদেশের প্রবীনতম রাজনৈতিক দল। পাকিস্তান আমলে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারে শাসন ক্ষমতায় ছিল। সে অতীতের কিছু কথা বলি, যাতে আপনারা বুঝতে পারেন যে, কি গভীর ষড়যন্ত্র তখন আওয়ামী লীগকে অক্টোপাশের মতো জড়িয়ে ধরেছিল। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী আবুল মনসুর আহমদের বই “আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর” থেকে নেয়া:- “পুর্ব পাকিস্তানে এই বিরোধে বাতাস করিয়া (সোহরাওয়ার্দী বনাম মাওলানা ভাসানী) একশ একজন, একশ এক উপলক্ষে উহা বাড়াইবার চেষ্টা করিত। কিন্তু কেন্দ্রে যিনি এটা করিতেন তিনি একাই একশ। ইনি স্বয়ং প্রেসিডেন্ট ইসকান্দর মির্জা। আমি এটা বুঝিলাম (আবুল মনসুর আহমদ) যেদিন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী আমাকে গোপনে বলিলেন, প্রেসিডেন্ট মির্জা মাওলানা ভাসানীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করিবার জন্য তার সোহরাওয়ার্দীর) উপর চাপ দিতেছেন। আমি (আবুল মনসুর আহমদ) স্তম্ভিত হইলাম, আমরা মন্ত্রীত্ব করিব, আর আমাদের সভাপতিকে গ্রেপ্তার করিব আমরাই? লিডার আমার ভাব দেখিয়া বলিলেন, বিস্ময়ের কিছু নাই। সিক্রেট ফাইল দেখিলে তুমিও প্রেসিডেন্টের সাথে একমত হইবে। অনেক কথা কাটাকাটি হইল। অবশেষে তিনি (সোহরাওয়ার্দী) আমাকে (আবুল মনসুর আহমদ, সোহরাওয়ার্দীর মন্ত্রী সভার মন্ত্রী) একটা বিশাল ফাইল গছাইলেন। বলিলেন, পড়িয়া দেখ।”
আসলে ওই ফাইলে তেমন কিছু ছিল না, এই মর্মে সোহরাওয়ার্দী ও আবুল মনসুর আহমদ একমত হলেন। কিন্তু পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইসকান্দর মির্জা চান আওয়ামী লীগ সরকার (যুক্তফ্রন্ট) তাদের পুর্বপাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতিকে গ্রেপ্তার করুক। এটা ছিল ভাসানী ও সোহরাওয়ার্দীর মধ্যে বিরোধ বাধাইবার একটা চাল। আওয়ামী লীগে ভাঙন আনাই ছিল ইসকান্দর মির্জার উদ্দেশ্য। কিন্তু সোহরাওয়ার্দীকে দিয়া মির্জা, ভাসানীকে আক্রমণ করাইতে পারলেন না। এবার মাওলানাকে দিয়া শহীদ সাহেবকে আক্রমন করানোর কৌশল নিল মির্জা। কোথা দিয়া কি হইল বোঝা গেল না। হঠাৎ মাওলানা ভাসানী আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিলেন। মাওলানা সাহেবের ঘনিষ্ট বলিয়া পরিচিত দুই আওয়ামী লীগ নেতা, একজন পূর্বপাকিস্তানী শিল্পপতিসহ ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট মির্জার সাথে দেখা করিয়া গিয়াছেন। কেন তখন আওয়ামী লীগে ভাংগন ধরেছিল তা বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। হয়ত মাওলানা সাহেব ভেবেছিলেন, তিনি সোহরাওয়ার্দীবিহীন আওয়ামী লীগে নেতৃত্ব দিবেন। কিন্তু ভাঙনের ফল ভাল হয়নি। পরবর্তী ইতিহাস আপনাদের জানা। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছে, তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে, ষড়যন্ত্র হতে পারে। কিন্তু আমরা যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকুরী করি আমাদের ধারে কাছে ষড়যন্ত্র আসবে কেন? আমাদের না কোন রাজনীতিবিদের সাথে স্বার্থের দ্বন্দ্ব আছে, না কোন সাংবাদিকের সাথে স্বার্থের দ্বন্দ্ব আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সকল প্রকার দ্বন্দ্ব সংঘাত ও ষড়যন্ত্রের উর্দ্ধে রাখা দরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ষড়যন্ত্রের যায়গা নয়। চাপের কাছে নতি স্বীকারের যায়গাও নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নলেজ ক্রিয়েশন, নলেজ ডিসিমিনেশন এবং নলেজ এপ্লিকেশনের কাজে পথ দেখানোর মতো প্রতিষ্ঠান। ডোন্ট মেক্ ইট এ হেল। একে নরকে রূপান্তরিত করবেন না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঠিক থাকলে আমরা নলেজ বেইজ্ড সমাজে প্রবেশ করতে পারবো।

লেখকঃ সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। ভধুষঁষযড়য়ঁবথ৭@ুধযড়ড়.পড়স

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট