চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

তৈরি পোশাকশিল্পে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার প্রয়োজন

২৩ জুলাই, ২০১৯ | ১:০৫ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প। গত তিন দশকের অধিক সময় ধরে তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশ্ব বাজারে পোশাকের চাহিদা দিন দিন বেড়ে যাওয়া এ শিল্পকে সমৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে। নানা উত্থান-পতনের মাঝে বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠা হলেও বিংশ শতাব্দীতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। কারণ আধুনিক যুগে তীব্র প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেসব কারণে পোশাকশিল্প কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-প্রযুক্তির ব্যবহারে বাংলাদেশ পিছিয়ে, ফ্যাশনের দ্রুত পরিবর্তন, আন্তর্জাতিক বাজারে পোশাকের দাম নিম্নমুখী, বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া, পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধির নি¤œমুখী ধারা, বিশ্ব বাজারে ব্যাপক প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়া, সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি, কারখানার পরিবেশ অনুকূল না হওয়া, সংস্কারের অতিরিক্ত চাপ, ব্যাংকের অতিরিক্ত সুদ। এছাড়াও মাঝে মাঝে শ্রমিক অসন্তোষ, বিদ্যুৎ সংকট আর চলতি অর্থ বছরে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়াই যা পোশাকশিল্পের জন্য অশনি সংকেত।
আধুনিক বিশ্বে তৈরি পোশাকশিল্প প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যে জায়গায়টায় বাংলাদেশ অনেক বেশি পিছিয়ে। একজোড়া জিন্স সেলাই করতে এখন গড় ১৯ মিনিট সময় লাগে, যা মোট উৎপাদনের সময়ের চেয়ে অর্ধেক বেশি। তবে রোবট ব্যবহার করলে এর সময় ৪০ থেকে ৯০ ভাগ কমে আসবে। সেই কথা মাথায় রেখে আধুনিক বিশ্ব রোবট নিয়ে গভীর পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে। এমনকি ইতোমধ্যে এর ব্যবহারও শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতার ফলে অন্যান্য দেশ পোশাকের দাম কমার ফলে ও বাংলাদেশের মুদ্রার হার কমিয়ে যাওয়ার কারণে তৈরি পোশাক শিল্পের চ্যালেঞ্জটা আরো বেশি বাড়িছে।
বর্তমান বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মসংস্থানে ৫০ লাখ লোক ছাড়িয়েছে। যার মধ্যে ৮০% অধিক নারী। দেশীয় কর্মসংস্থানে প্রায় ৬৫% তৈরি পোশাক শিল্প। শুধুমাত্র তাই নয়, বৈদেশিক আয়ের ৮১ শতাংশ আসে এই বৃহৎ শিল্প থেকে।
সুতরাং আগামী বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প তীব্র প্রতিযোগিতার মাঝে সুনামের সাথে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। পাশাপাশি ফ্যাশন দুনিয়ার সাথে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া, কারখানা অভ্যন্তরীণ পরিবেশ ঠিক রাখা, গ্যাস ও বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করা, রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অন্যথায়, বিশ্ব বাজারে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।

মো. রাশেদ আহমেদ
কুষ্টিয়া ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট