চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

হজ্বের ইতিহাসে চট্টগ্রামের অবস্থান ও নিবেদন

আহমদুল ইসলাম চৌধুরী

১ জুলাই, ২০১৯ | ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ

ব্রিটিশ ভারতে হজ্বযাত্রীগণের একমাত্র পথ ছিল মুম্বাই হয়ে সাগরপথে। পরবর্তীতে করাচি-কলকাতা বন্দর হয়ে হজ্বে গমনের ইতিহাস রয়েছে। বস্তুতঃ ভারতবর্ষে ইসলামের প্রারম্ভ থেকে হজ্ব কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল বলতে প্রথমে মুম্বাই অতঃপর চট্টগ্রাম। মুম্বাইর পাশপাশি চট্টগ্রামও হজ্ব কার্যক্রম নিয়ে গর্ব করতে পারে। তার মূলে ভৌগোলিক অবস্থান, কর্ণফুলী নদী ও প্রাচীনকাল থেকে বিশ্বের কাছে পরিচিত চট্টগ্রাম বন্দর। আরবীয়গণ হলেন বণিকপেশার লোক। প্রাচীনকাল থেকে দূরত্বের যোগাযোগে সাগর মহাসাগর ছিল অন্যতম মাধ্যম। ফলে আরবের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের যোগাযোগ সেই প্রাচীনকাল থেকে। সাহাবা তাবেঈন তবে তাবেঈন বা পরবর্তী যুগ থেকে নবদীক্ষিত মুসলমানরা পালতোলা জাহাজে করে চট্টগ্রাম থেকে হজ্বে গমন করাকে অস্বীকার করা যাবে না।
দিল্লি সুলতানী আমল থেকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পালতোলা জাহাজে করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় হজ্বযাত্রী পরিবহনের কথা জানা যায়। ঐ সময় বাংলার রাজধানী সোনারগাঁও এর সুলতান ছিলেন গিয়াস উদ্দিন আজম শাহ। বিহারের বিখ্যাত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব হযরত মোজাফ্ফর শাহ বলখী (ইনি হযরত ইয়াহিয়া মানেরীর অন্যতম খলিফা) সুলতান গিয়াস উদ্দিন আজম শাহের নিকট চিঠি লিখেন, তাঁকে যেন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে হাজীদের প্রথম জাহাজে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ঐ সময় বাংলার অপর দুই বিখ্যাত শহর ঢাকা ও কলকাতার অস্তিত্ব ছিল না। ঢাকা প্রতিষ্ঠা লাভ করে মুঘল স¤্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে। অপরদিকে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজুদ্দৌলার পরাজয়ের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী কর্তৃক কলকাতা নগরী প্রতিষ্ঠা লাভ করে। চট্টগ্রাম থেকে সুলতানী আমল ও তারও আগে থেকে পালতোলা জাহাজে হজ্বযাত্রী যাতায়াতের ব্যবস্থা ছিল।
মুঘল আমলের শেষের দিকে বা তারও আগে চট্টগ্রাম চলে যায় আরাকানের মগদের হাতে। অবশ্য চট্টগ্রাম দখল নিয়ে আরাকানের রাজা ও ত্রিপুরার রাজার মধ্যে যুদ্ধবিগ্রহের ইতিহাস রয়েছে। ভ্রাতৃকলহ ও যুদ্ধবিগ্রহে শাহ সুজার আরাকানে পলায়ন ও নির্মম পরিণতি হয়। এতে ভ্রাতা বাদশাহ আওরঙ্গজেবের নির্দেশে বাংলার নবাব শায়েস্তা খান কর্তৃক শাহ সুজার হত্যার প্রতিশোধ নিতে চট্টগ্রাম দখলে নিলে এ চট্টগ্রামের গৌরব পুনঃ ফিরে আসে এবং তা আর কোন সময় ব্যাহত হয়নি।
মুম্বাই কর্তৃক হজ্বযাত্রী পরিবহনের ইতিহাসে তেমন ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হওয়ার বিষয় না। তবে মুঘল ও ব্রিটিশ আমলে হজ্বযাত্রী পরিবহনে চট্টগ্রামকে গুরুত্ব না দিয়ে মুম্বাইকে এককভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়। এদিকে ভারতবর্ষের পূর্বাংশে ব্রিটিশরা বাংলার বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে কলকাতা বন্দরকে অত্যধিক গুরুত্ব দেয়। কিন্তু ভারতবর্ষের হজ্বযাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে ব্রিটিশরা মুম্বাইয়ের উপর এককভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখে। ফলে বিশাল ভারতবর্ষে প্রতিকূল যোগাযোগ হওয়া সত্বেও হজ্বযাত্রীগণ সুদূর মুম্বাই হয়ে হজ্বে গমন করতে বাধ্য হতেন। মুম্বাই থেকে হজ্বযাত্রী পরিবহনে জাহাজের কোন নিয়ম শৃংখলা ছিল না। জাহাজ পাওয়ার জন্য মুম্বাই বন্দরে হজ্বযাত্রীগণকে অনির্দিষ্টকাল অপেক্ষায় থাকার বহু ইতিহাস রয়েছে।
এমনি প্রতিকূল পরিন্থিতিতে বাংলাসহ ভারতবর্ষের পূর্বাংশের হাজীরা যাতে কলকাতা বন্দর দিয়ে হজ্বে গমন করতে পারে সে লক্ষে দাবি ওঠে। এ ভূমিকায় চট্টগ্রামের বাঘা বাঘা নেতাগণের মধ্যে চট্টগ্রামের তখনকার বিভাগীয় কমিশনার এম এ মোমেন এবং ভারতীয় হজ্ব কমিটির সদস্য ও ব্রিটিশ পার্লামেন্ট মেম্বার আমিরুল হজ্ব খান বাহাদুর বদি আহমদ চৌধুরীর নানান দেন দরবারের প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সরকার একটি তদন্ত তথা যাচাই বাছাই কমিটি গঠন করে। এ কমিটির সভাপতি ছিলেন গজ. ঐ.ই. ঈখঅণঞঙঘ। কমিটির সেক্রেটারী ছিলেন গজ. গ.ও. ঐটক। তিনি আমিরুল হজ্ব খান বাহাদুর বদি আহমদ চৌধুরীর কাছে ১৫ জুলাই ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা থেকে চিঠি লিখেন। উল্লেখ্য বদি আহমদ চৌধুরী ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বার ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বদি আহমদ চৌধুরীর বরাবরে কলকাতা বন্দর দিয়ে হজ্বযাত্রী পরিবহনে মতামতসহ যৌক্তিকতা উপস্থাপন করার জন্য বলেন। বদি আহমদ চৌধুরী যৌক্তিকতা উপস্থাপন করার পাশপাশি চট্টগ্রামের কৃতি পুরুষ আবদুল বারী চৌধুরীর (প্রাক্তন মন্ত্রী ও শিল্পপতি এ,কে খানের শ্বাশুর) সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেছিলেন ব্রিটিশ সরকার অনুমতি দিলে তিনি তাঁর শিপিং লাইন থেকে হজ্বযাত্রী পরিবহনে জাহাজ প্রদানে সম্মত থাকার জন্য। তারপরেও ব্রিটিশ সরকার কলকাতা বন্দর দিয়ে ভারতবর্ষের পূর্বাঞ্চলীয় হজ্বযাত্রী হজ্বে যেতে সম্মতি প্রদানে সহজে রাজি হচ্ছিল না। বদি আহমদ চৌধুরীসহ অবিভক্ত বাংলার বাঘা বাঘা ব্যক্তিগণের অনেক দেন দরবারের পর ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার সম্মতি দানে বাধ্য হয়। তৎ অনুযায়ী ভারতে পূর্বাঞ্চলীয় বঙ্গ (বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ), আসাম, বার্মা (মায়ানমার) হজ্বযাত্রীগণ কলকাতা বন্দর দিয়ে হজ্বে গমন করবেন। মুম্বাই বন্দর দিয়ে ভারতবর্ষের অন্যান্য অঞ্চলের হজ্বযাত্রীগণ হজ্বে গমন করবেন। সে লক্ষে আবদুল বারী চৌধুরীর ইংলিশতান জাহাজে করে ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বন্দর দিয়ে হজ্বযাত্রী পরিবহন শুরু হয়।
এদিকে চট্টগ্রামেরই দুই দানবীর চাঁন মিয়া সওদাগর ও ইসলাম খান পবিত্র মক্কায় ও পবিত্র মদিনায় নিজ অর্থে দু’টি মুসাফিরখানার ব্যবস্থা করেন। যাতে হজ্ব ও যেয়ারতকারীগণের কল্যাণ হয়। দুষ্ট লোকের হাতে পড়ে পবিত্র মক্কায় মুসাফিরখানা দু’টি বেদখল হয়ে গেলেও পবিত্র মদিনায় মুসাফিখানা দু’টি আজও বহাল রয়েছে।
ভারতীয় হজ্ব কমিটির সদস্য চট্টগ্রামের খান বাহাদুর বদি আহমদ চৌধুরী ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় হজ্বযাত্রীর প্রতিনিধি তথা আমিরুল হজ্ব হিসেবে মুম্বাই থেকে হজ্বে গমন করেন। ঐ বছর সৌদি বাদশাহ আবদুল হজ্বের সময় পবিত্র মক্কায় ছিলেন। এতে বদি আহমদ চৌধুরী বাদশাহ আবদুল আজিজের সাথে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেন হজ্বযাত্রীগণের কল্যাণে।
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের আগস্টে ব্রিটিশরা বিদায় নেয়। ভারতবর্ষ ভাগ হয়ে যায়। এতে বাংলার এ অঞ্চল পূর্ব পাকিস্তানে (আজকের বাংলাদেশ) দীর্ঘ যুগ পরে হলেও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পুনরায় হজ্বযাত্রী শুরু হয়। সে লক্ষে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে সামনে রেখে পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্প নির্মিত হয়। পাহাড়তলীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল লাইন সংলগ্ন রেল স্টেশন রয়েছে। ফলে সারা দেশের হজ্বযাত্রীরা রেলে বা গাড়িতে করে পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্পে পৌঁছতে সহজতর হত।
৯ একর ৩৫ শতক বিশাল এরিয়া নিয়ে এ হাজী ক্যাম্প হজ্বযাত্রীগণের নানান সুযোগ সুবিধায় ভরপুর ছিল। রমজানের ঈদের সাপ্তাহখানেক পরে পর পর দু’টি জাহাজ এবং মাসখানেক ব্যবধানে এ জাহাজ দু’টি জেদ্দা থেকে ফিরে এসে অপর দুই ট্রিপ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জেদ্দা গমন করত। সে লক্ষে জাহাজ ছাড়ার ক’দিন পূর্বে হজ্বযাত্রীগণ পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্পে রিপোর্ট করে অবস্থান করতেন। ফলে পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্প এরিয়ায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করত। তেমনিভাবে হাজীগণকে বিদায় জানাতে চট্টগ্রামবাসী চট্টগ্রাম বন্দরে জমায়েত হতেন। এ সময় আল্লাহ পাকের মেহমান হজ্বযাত্রীগণকে বিদায় জানাতে গিয়ে হাজার হাজার চট্টগ্রামবাসীর “নারায়ে তাকবীর-আল্লাহ আকবর” গগনবিদারী স্লোগানে চট্টগ্রামবাসী উৎসব আমেজের পাশপাশি আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়তেন।
কর্ণফুলীতে দিনের জোয়ারে জাহাজ ছাড়া হত। কর্ণফুলী নদীর দীর্ঘ পথে নৌবাহিনীসহ সমস্ত জাহাজ হরণ বাজিয়ে হাজীগণকে বিদায় জানাতে থাকে। পাকিস্তান আমলের শেষ দিকে এসে প্রতি জাহাজে প্রায় ১৩ শত হজ্বযাত্রী পরিবহনে থাকত ছফিনায়ে-এ-আরব ও ছফিনায়ে-এ-আরাফাত। এ দু’টি জাহাজে দুই ট্রিপ করে হজ্বযাত্রী পরিবহন করা হত। ৭ শত যাত্রী বহনকারী ক্ষমতা সম্পন্ন শামছ (চট্টগ্রাম বন্দর থেকে করাচি বন্দরে নিয়মিত যাত্রী বহনকারী জাহাজ) চট্টগ্রাম বন্দর থেকে হজ্বযাত্রী নিয়ে করাচি বন্দরে পৌঁছে দিত। করাচি থেকে ৪ হাজার হাজীর ক্ষমতা সম্পন্ন ছফিনায়ে-এ-হুজ্জাজে করে পূর্ব পাকিস্তানের ৭ শত জন এবং পশ্চিম পাকিস্তানের ৩ হাজার ৩ শত হজ্বযাত্রীকে জেদ্দা পৌঁছে দিত।
তখন হজ্ব করতে ডেক শ্রেণীর (ততৃীয় শ্রেণীর ) ভাড়া ছিল ১৯১৯ টাকা। তৎমধ্যে পবিত্র আরব ভূমিতে থাকা খাওয়া ১ হাজার টাকা। অপর ৯১৯ টাকার মধ্যে খাওয়াসহ জাহাজ ভাড়া ও সরকারি আনুষঙ্গিক খরচ। জাহাজের দ্বিতীয় শ্রেণীর ভাড়া পড়ত আরব ভূমিতে থাকা খাওয়াসহ ৪ হাজার ৫ শত টাকার কিছু কম বা বেশি। জাহাজে প্রথম শ্রেণিতে সর্বমোট ভাড়া পড়ত ৭ হাজার টাকার কিছু বেশি। করাচি থেকে বিমানে হজ্ব করতে ভাড়া পড়ত ৬ হাজার টাকার কিছু বেশি। ১৯৪৮-১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধকালীন পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের হজ্বের যাবতীয় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ হত চট্টগ্রাম পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্প থেকে। এর নিয়ন্ত্রক থাকত হজ্ব অফিসার।
স্বাধীন সার্বভেীম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর ভারতের মুহাম্মদী জাহাজে করে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এবং ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমানে হজ্বযাত্রী পরিবহনে হজ্বযাত্রী পরিবহন শুরু হয়। তখন মাত্র ৩ হাজার জন হজ্বযাত্রীগণকে লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করে বিমানে ঢাকা থেকে হজ্বে প্রেরণ করা হত। ভারতীয় মুহাম্মদী জাহাজ ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের পর মেয়াদ উত্তীর্ণ বিধায় আর ব্যবহৃত হয়নি। মধ্যখানে ৪ বছর পর সরকার সাগরপথে হজ্বযাত্রী পরিবহনের জন্য হিজবুল বাহার নামক জাহাজটি ক্রয় করে। এটিও ছিল অতী পুরাতন। ২-৩ বছর পর একটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে হস্তান্তর করা হয়। তারা জাহাজের নামকরণ করেন শহীদ সালাহ উদ্দিন। বাংলাদেশ নৌবাহিনী এ জাহাজে দুই-এক বছর হজ্বযাত্রী পরিবহন করে মেয়াদ উত্তীর্ণ বিধায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে সীতাকুন্ড শীপ ইয়ার্ডে স্ক্রাপ হিসেবে কেটে ফেলা হয়।
ঢাকা থেকে হজ্ব ফ্লাইট পরিচালিত হলেও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ আমলে প্রায় দশ বছর যাবৎ চট্টগ্রাম পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্পের হজ্ব অফিস থেকে সারা দেশের হজ্ব কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ হত। পরবর্তীতে দেশের হজ্ব কার্যক্রম চট্টগ্রাম পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্প থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্প তার জৌলুস হারিয়ে পরিত্যক্ত বিরানভূমিতে পরিণত হয়। দেশে দ্রুততার সাথে হজ্বযাত্রীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। বর্তমানে হজ্বযাত্রীর সংখ্যা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। কেবলমাত্র চট্টগ্রাম বিভাগের হজ্বযাত্রীর সংখ্যা ২৬% (ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে) অর্থাৎ ২৬ হাজারের অধিক।
ভারতের রাজধানী দিল্লি। কিন্তু হজ্ব নিয়ন্ত্রিত হয় মুম্বাই থেকে। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ। কিন্তু হজ্ব কার্যক্রম পরিচালিত হয় করাচি থেকে।
হজ্ব কার্যক্রম নিয়ে চট্টগ্রামের গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। এ কার্যক্রম রাজধানী বিধায় ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। অন্ততঃ চট্টগ্রাম বিভাগের হজ্ব কার্যক্রম চট্টগ্রামকে ফিরিয়ে দেয়া হউক,যাতে চট্টগ্রামের হজ্ব এজেন্সী ও তাদের কর্মচারীদের ঢাকায় দৌঁড়াদৌড়ি করতে না হয়। যাতে চট্টগ্রাম বিভাগের বিশাল অংকের হজ্বযাত্রী ও তাদের নিকট আত্নীয় হজ্বে গমন উপলক্ষে বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে না হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের হজ্বযাত্রীর সংখ্যা অত্যধিক। এখানে রয়েছে স্থায়ী হাজী ক্যাম্প ও আন্তজার্তিক বিমান বন্দর। আরও রয়েছে শতের মত হজ্ব এজেন্সী।
অতএব দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি নিবেদন থাকবে : পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্পে চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-হজ্ব অফিস খোলা হোক। ধর্মমন্ত্রণালয় থেকে কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী এখানে বদলি করা হোক। ২৬% তথা দেশের হজ্বযাত্রীর কোটার চার ভাগের এক ভাগ চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-হজ্ব অফিসকে দেয়া হোক। চট্টগ্রাম বিভাগীয় হজ্ব এজেন্সীগণকে ঢাকায় গমন না করে চট্টগ্রামে হজ্বের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়া হোক। চট্টগ্রাম আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর দিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় হজ্বযাত্রীগণের পরিবহনের নির্দেশ দেয়া হোক।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট