চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

৩০ এপ্রিল, ২০১৯ | ১:১২ পূর্বাহ্ণ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মানুষের মধ্যে যোগাযোগের অন্য এক মাত্রা যোগ করেছে। এর মাধ্যমে খুজে পাওয়া সম্ভব হচ্ছে অনেক পুরোনো বন্ধু বা আত্মীয়ের। চ্যাট বা ভিডিও কলের মাধ্যমে কথা বলা যাচ্ছে বিশ্বের যে কোন প্রান্তের মানুষের সাথে।
যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কল্যাণে জানা যাচ্ছে দেশ বা বিশ্বের প্রতি মুহূর্তের খবর এমন কি ফেইসবুক লাইভ এর মাধ্যমে সম্প্রচার করা হচ্ছে অধিকাংশ চ্যানেলের প্রতি ঘণ্টার সংবাদ এবং চ্যানেলগুলোর ফেইসবুক পেইজে আপডেট দেয়া হচ্ছে প্রতি মুহূর্তের সংবাদ। ফেইসবুক লাইভ অপশন এর মাধ্যমে পড়াশোনার অনেক জটিল সমীকরণ সহজ করে দেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একইসাথে ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছে লাখ শিক্ষার্থী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আজকের এই সমাজকে নিয়ে গেছে বহুদূর।
তারপও প্রশ্ন থেকে যায়, এই মাধ্যমগুলো কি আমাদের প্রিয়জনদের কাছ থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে? বিভিন্ন সহিংসতার সূত্রপাত কি এই যোগাযোগ মাধ্যম? এই যোগাযোগ মাধ্যম কি আমাদের ব্যক্তিগত জীবনকে অনিরাপদ করে তুলছে? যখন বিভিন্ন গবেষণায় উঠে আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অতিরিক্ত আসক্তি বিবাহ বিচ্ছেদের কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম, রামু কিংবা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মূল কারণ ফেইবুকের একটি পোস্ট এবং ফেইসবুক ব্যবহারকারীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ অনলাইনে উত্যক্তের শিকার তখন প্রশ্নগুলো খুব বেশি অপ্রাসঙ্গিক নয় বরং আরো বেশি মাত্রায় প্রাসঙ্গিক। সাম্প্রতিক সময়ে বিবাহ বা প্রণয় বিচ্ছেদের হার আশঙ্কাজনক ভাবে বাড়ছে। ধারণা করা হয় বিভিন্ন সম্পর্ক অস্থিতীশীল বা ভাঙনের মূল কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো। আবার সম্পর্ক গড়েও উঠে ফেইসবুকে তবে সেটা ভাঙনের তুলনায় খুব বেশি নয়।
নিজেদের সময় দেয়ার চেয়ে আমরা আজ এসব মাধ্যমগুলোতে সময় দিতে অধিক পছন্দ করি। সুখে থাকার চেয়ে সুখে আছি দেখাতে আমরা বেশি ব্যস্ত। দূরের মানুষদের খবর নিতে গিয়ে আমরা কাছের মানুষ গুলোর খবর নিতেই ভুলে যাই।
মূলত এই কারণেই বিভিন্ন সম্পর্ক ভাঙনের উপক্রম হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় দিতে গিয়ে যেন কাছের মানুষ গুলোকে অবহেলা না করি সে দিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমদের দৈনন্দিন জীবনকে অনেক গতিশীল করেছে এখানে দ্বিমত করার কোন সুযোগ নেই পাশাপাশি এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করার ব্যপারে আমাদের আরো সচেতন হতে হবে। স্যোসাল সাইট গুলো ব্যবহার করতে গিয়ে যাতে কাছের মানুষদের দূরে ঠেলে দেয়া না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। নির্মাতাদের লক্ষ রাখতে হবে যেন নাটক বা মুভির গল্প বাস্তবতার সাথে প্রাসঙ্গিক হয়। এর মাধ্যমেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো যথাযথ সামাজিকীকরণের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।

ফাহিম আহমেদ
চতুর্থ বর্ষ, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ,
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট