চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রাণের ভাষায় মনের কথা

বাংলার নারীরা এখন সাফল্যের শিখরে

ফারিহা হোসেন

৩০ এপ্রিল, ২০১৯ | ১:১২ পূর্বাহ্ণ

এখন বাংলাদেশে নারীদের জয় জয়কার অবস্থা বিরাজ করছে। এক সময় নারী শুধু গৃহের বৃত্তে বন্দী ছিলেন। এখন নারী গৃহকোণ থেকে বেরিয়ে শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি, ছাত্র রাজনীতি থাকা উচিত-অনুচিত এ দিগন্ত বিস্তৃত কর্মে নিজেদের অবস্থান শক্ত করে নিচ্ছে। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র এমনকি বিশ্ব পরিমন্ডলে বাংলাদেশের নারী মর্যদার আসনে অধিষ্ঠিত। এটা শুধু আমাদের মা বোনদের জন্যই গর্বের, সম্মানের, মর্যাদার নয় একই সাথে পুরো জাতির জন্য গর্বের এবং সম্মানের। বাংলাদেশের নারীরা এখন ঘরে, বাইরে, বিশ্বে দুনিয়াতে নেতৃত্বে, কর্মে সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে অবস্থান করছে। সদ্য চালু হওয়া রাইড শেয়ারিংসহ হেন কাজ নেই যেটাতে নারীর অবস্থান সগৌরবে রয়েছে। এক কথায় জুতা সেলাই থেকে চন্ডিপাঠ সর্বত্রই নারীর অবস্থান চোখে পড়ার মতো। শিক্ষকতা, নার্সিং, চিকিৎসা, বিজ্ঞানী, পাইলট, পুলিশ, নৌ-বিমান, সেনা বাহিনী, ব্যবসা, বাণিজ্য, প্রশাসন, রাজনীতি, রাষ্ট্র পরিচালনা, ট্রেন চালনা, গবেণষায় সর্বত্রই দোদন্ডপ্রতাপে দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে নারী।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী, স্পিকার নারী, সংসদের উপনেতা নারী, ইতোপূর্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিল নারী, বর্তমানে শিক্ষামন্ত্রী নারী, আওয়ামী লীগ, বিএনপির প্রধানও নারী। মোবাইল অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবা থেকে শুরু করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’ উড়িয়ে হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিচ্ছেন নারীরা। রাজনীতি, বিচারাঙ্গন, অর্থনীতি, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যম, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে সরব উপস্থিতি তাদের। এভারেস্ট বিজয়ী হয়ে বাংলার নারী আরোহণ করেছেন সাফল্যের শিখরে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম প্রকাশিত বৈশ্বিক লিঙ্গবিভাজন সূচক (গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স) ২০১৮ অনুযায়ী, বিশ্বে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে বাংলাদেশের অবস্থান। এ সূচকে বিশ্বের ১৪৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৪৮তম। ২০১৭ সালের তুলনায় ২৮ ধাপ অগ্রগতি। প্রতিবেদনে বলা হয়, এমনটা সম্ভব হয়েছে অর্থনৈতিক সুবিধা ও অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায়।
চিকিৎসা শিক্ষা ও সেবার ক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা পুরুষকে ছাড়িয়ে গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজে চলতি শিক্ষাবর্ষে ২২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। তার মধ্যে ১৩৬ জন ছাত্রী, ছাত্র মাত্র ৮৪ জন। আবার ১০ বছরে পুরুষের তুলনায় এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জনকারী নারীর সংখ্যাও প্রায় ৩ হাজার বেশি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, এ বছর মেডিকেল কলেজগুলোয় ১০ হাজার ২২৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। তার প্রায় ৬০ শতাংশ ছাত্রী। জাতিসংঘের শান্তি মিশনের সদস্য হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংঘাত পূর্ণ অবস্থা থেকে উত্তরণে বাংলাদেশের আইন-শৃংখলা বাহিনী, সেনা, নৌ-বিমান বাহিনীর নারী কর্মকর্তারা অত্যন্ত দক্ষতা, যোগ্যতা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তি মিশনে অংশ নিয়ে আমাদের নারী নিখুঁত ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন এবং এ জন্য তারা প্রশংসিতও হচ্ছেন। আমাদের প্রত্যাশা নারীরা দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি, অগ্রযাত্রা, কল্যাণে ঘরে বাইরে,দেশে-বিদেশে আরো বেশী সক্রিয়,কর্মব্যস্ত, কর্মে জড়িত হবেন ভবিষ্যতে। তবেই দেশ, জাতির, পরিবারের, সমাজের মঙ্গল হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট