চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বাজেট প্রতিক্রিয়া ঃ কি আশায় বাঁধি খেলাঘর বেদনার বালুচরে !

নাওজিশ মাহমুদ

২৩ জুন, ২০১৯ | ১:০১ পূর্বাহ্ণ

২০১৯-২০ সালের বাজেট ঘোষিত হলো। নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের অধীনে এই বাজেট প্রস্তুত হলো। আগে ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী। একসময় বাংলাদেশে ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের প্রেসিডেন্টও ছিলেন। আইসিসির ও প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। ভারতীয়দের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পদত্যাগ করতে হয়েছে। কিন্তু পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে সফল বলা যায়। নতুন নতুন মেগা প্রজেক্ট করে তিনি দেশবাসীকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন। মুহিতের পরে এই মোস্তফা কামালকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন। নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে এই বাজেটে প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে কতটুকু সফল এখনও বলা যাবে না। তবে, বাজেট চুড়ান্তভাবে পাশ না হওয়া পর্যন্ত এটাকে খসড়া বাজেট ধরা যেতে পারে। জনগণের প্রতিক্রিয়ার পর অনেক কিছুই সংশোধন হবে।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ একটি নতুন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সেটা হলো উন্নয়শীল দেশ হিসেবে জাতিসংঘের প্রাথমিক স্বীকৃতি পেয়েছে। চূড়ান্ত স্বীকৃতি পেতে হলে তাঁকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এটা করতে হবে ২০২৪ সালে সালের মধ্যে। ২০২১ সালে আবেদন করতে হবে। শর্তসমূহ হচ্ছে মাথাপিছু আয় ১,২৬০ ডলারের উপরে থাকতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১,৭৫৪ ডলার । মানবসম্পদ ৬৬ বা তার উর্ধ্বে থাকতে হবে এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুর সূচক ৩২-এর নীচে নামলে চলবে না। সুতরাং একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। মুহিতের রেখে যাওয়া অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেমন আছে, তেমনি মুহিতের সময় ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ এবং লুটপাটের পরিমাণ যে বেড়েছে, তা সামাল দিতে হবে। আরো চ্যালেঞ্জ হলো, ক্রমবর্ধনশীল অর্থনীতির স্বাভাবিক গতিকে ধরে রেখে ছোট অর্থনীতির দেশ থেকে বড় অর্থনীতি দেশে রূপান্তরের কাঠামো ও মন-মানসিকতাকে তৈরী করা এবং অর্থনীতির চোরাগলি অর্থাৎ লুটপাটের ছিদ্র বন্ধ করে সহনীয় পর্যায়ে দুর্নীতিকে কমিয়ে আনা। অর্থমন্ত্রী হয়তো সামষ্টিক অর্থনীতির গতিকে দক্ষতা দিয়ে এগিয়ে নিতে পারবেন। দুর্নীতির মুক্ত অর্থনীতির জন্য প্রয়োজন একটি রাজনৈতিক সততা এবং সদিচ্ছা। এটা অর্থমন্ত্রীর উপর নির্ভর করে না। নির্ভর করে প্রধানমন্ত্রী এবং জনপ্রশাসনের উপর। জনাব মুহিতের ব্যক্তিগত সততা নিয়ে কারো কোন প্রশ্ন ছিল না। সজ্জন হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তবু, দুর্নীতি কমিয়ে আনতে পারেন নি, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনের উপর নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণে।
মুহিতের অবসরের পর এই বাজেট ছিল নতুন অর্থমন্ত্রীর প্রথম বাজেট। বিশেষজ্ঞদের মতে উপস্থাপনায় চমক থাকলেও বাজেটে অতীতের মূল কাঠামোর ধারাবাহিকতা বজায় থেকেছে। আয়তনে বাজেট এখন অনেক বড়। কিন্তু গুণগত দিক কতটুকু এগিয়েছে এটাই দেখার ব্যাপার। আমাদের বাজেট প্রণয়নের সময় তিনটি শ্রেণীকে বিবেচনায় এনে বাজেট পেশ করতে হয়। একটি ব্যবসায়ী শ্রেণী, যারা বাজেটের মূল অর্থ সরাসরি যোগান দেন করের মাধ্যমে। আর, এই কর বা অর্থ যোগান আসে সম্পত্তি বৃদ্ধি থেকে। সম্পত্তি বৃদ্ধিতে শ্রম শক্তি দিয়ে মূল ভূমিকা রাখেন আমাদের শ্রমিক শ্রেণী। ভোটের বাজারের জন্য প্রয়োজন মধ্যবিত্ত এবং কৃষক। মধ্যবিত্ত সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাঁদেরকে সন্তুষ্ট না রাখলে বিপদ। রাষ্ট্র ও সমাজে ভারসাম্য নষ্ট হলে সরকার জনপ্রিয়তা হারায়। সরকারের অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানিতে পড়েবে। কৃষকশ্রেণী আমাদের মূল খাদ্য যোগায় এবং সংখ্যায় অধিকহারে হওয়ায় ভোটের বাজারে তাঁরা নিয়ামক শক্তি হিসেকে কাজ করে। যদিও তাঁদের জনমত ধরতে গেলে মধ্যবিত্তের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়। সুতরাং বাজেট যখন প্রণয়ন করা হয় তখন এই শ্রেণিসমূহকে সন্তুষ্ট করা যেমন বিবেচনায় রাখতে হয়, তেমনি সরকারের অর্থ-প্রবাহ যাতে অক্ষুণœ থাকে সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে হয়।
বাজেট ঘোষিত হয়েছে ১৩ জুন ২০১৯ সালে পার্লামেন্টের অধিবেশনে। অর্থমন্ত্রী অসুস্থ থাকায় প্রধানমন্ত্রী নিজে এই বাজেট পেপার পড়েন। ঘোষিত বাজেটের ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লক্ষ ২৩৪ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। আর আয়ের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৩,৮১,৯৭৮ কোটি টাকা। ঘাটতি ১, ৪১,২১২ কোটি টাকা। আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তাও আদায় হবে কিনা সন্দেহে আছে। তবে, বাজেটে বলা হয়েছে ঘাটতি পূরণে তিনটি উৎস – সঞ্চয়পত্রে বিক্রি, ব্যাংক থেকে ঋণ এবং বৈেিদশিক সাহায্য থেকে অর্থ সংগ্রহ করবেন। যদি বৈদেশিক সাহায্য না আসে, তা হলে সঞ্চয় এবং ব্যাংক থেকে মিটানো হবে। এমনিতে ব্যাংকে তারল্য সংকট আছে, তারপর সরকার ঋণ নিলে এই সংকট আরো বাড়বে। সঞ্চয়পত্রের সুদ দিতে গিয়ে আমাদের বাজেটের বিরাট অংশ বেরিয়ে যাচ্ছে। বলা যায়, বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি ঝুঁকির মধ্য দিয়ে পার হচ্ছে।
পুঁজিবাদী সমাজে বিনিয়োগের কারণে কর্মসংস্থান বাড়ে। কর্মসংস্থান বাড়লে বাজারে ভোক্তার সংখ্যা বাড়বে। ভোক্তার সংখ্যার বাড়লে পণ্য বিক্রয় বাড়বে। পণ্য বিক্রয় বাড়লে উৎপাদন বাড়বে। উৎপাদন বাড়লে কর বাড়বে। কিন্তু বিনিয়োগের বাড়ার জন্য দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগকে কিভাবে আনা যায় তার জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পর্যাপ্ত পরিমানে না দিলে, তাঁর বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত আসার নিশ্চয়তা না দিলে, কেউ বিনিয়োগ করতে চাইবে না। বিশেষ করে আমাদের প্রবাসীদের প্রচুর টাকা অলস পড়ে আছে। অর্থ ফেরতের নিশ্চয়তা না থাকার কারণে এই অর্থ বাংলাদেশে বিনিয়োগ হচ্ছে না। সরকার পরিবেশ সৃষ্টি করলে এর সুফল পেতে পারে। রেমিট্যন্সের জন্য প্রণোদনা একটি ভালো উদ্যোগ। রেমিটেন্সের টাকা বিনিয়োগ হয় না। অধিকাংশই ভোগবিলাসে ব্যয় হয়। রেমিটেেিন্সর টাকা সরাসরি বিনিয়োগে আনা যায় কী-না ভেবে দেখা দরকার। এর জন্য প্রয়োজন সুশাসন। সুশাসনে এবং স্থিতিশীল সরকার এই শর্ত পূরণ করতে পারে। আমাদের দেশে বিগত ১০ বছর ধরে স্থিতিশীল সরকার আছে। দীর্ঘসূত্রিতা এবং দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে পারলেই কেবল বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব। আমাদের যে হারে জিডিপি বেড়েছে সে হারে কর আদায় অপ্রতুল। অর্থাৎ আমাদের জনগোষ্ঠীর বিশাল অংশ কর প্রদান করেন না। বিশেষ করে আয়কর সেক্টরে। বছরে আড়াই লক্ষ টাকার আয়ের সীমা অতিক্রম করলেই করের আওতায় চলে আসার কথা। কিন্তু সে হিসেবে করদাতার সংখ্যা একবারে নগণ্য। বিশাল জনগোষ্ঠীর আয়কর আওতার বাইরে থাকার অর্থই হলো আমাদের কর কাঠামো বর্তমান বাজেট বাস্তবায়নের জন্য অনুপযোগী।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত আছে। এই নিয়ে অর্থনীতিবিদরা নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছেন । সৎ করদাতাদের প্রতি সরকার বিমাতাসুলভ আচরণ বলছেন। কিন্তু বিদেশে পাচার হওয়ার চেয়ে দেশে টাকা বিনিয়োগ টানতে সরকার এই ছাড় দিতে হচ্ছে । তবে, কালো টাকার উৎস সম্পর্কে আরো স্বচ্ছ থাকার দরকার ছিল। কালো টাকার উৎস হচ্ছে ঘুষ, তদবীর, চাঁদবাজি, মাদক ব্যসায়ীদের আয় এবং অপ্রদর্শিত আয়। এটা সুশাসনের জন্য অন্তরায়। উকিল এবং ডাক্তারদের আয় অপ্রদর্শিত থাকতে পারে। অপ্রদর্শিত আয় ও অবৈধভাবে উপার্জনকারী ঘুষগ্রহণকারী, চোরকারবারী, মাদক ব্যবসায়ী চাঁদাবাজীকে একই শ্রেণীতে ফেলে কালো টাকাকে আরো উৎসাহিত করা হয়েছে। যা দুর্নীতি প্রতিরোধের প্রধান অন্তরায়।
সঞ্চয়পত্রের মুনাফার উপর সুদের হার বাড়িয়ে সরকার মধ্যবিত্তের চাপ সৃষ্টি করছে। সরকারে এই ক্ষেত্রে সুষ্ঠু নীতিমালা না থাকায় ঢালাও ভাবে সকলে এই সুযোগ নিচ্ছে। এর ক্ষেত্রে লাগাম টেনে ধরা দরকার। বিধবা নারী, জ্যেষ্ঠ নাগরিক, পেনশনভোগী রেমিট্যোনস আহরণকারীদের শুধু ছাড় দিয়ে নীতিমালা হলে সুযোগ সন্ধানীরা সঞ্চয়পত্র অপব্যবহার করতে পারতো না। অনলাইন এবং টিন প্রদান বাধ্যতামূলক করে এখানে কালোবাজারের টাকা যাতে বিনিয়োগ না হয় সে ব্যাপারে সচেষ্ট হয়েছে। তবে, সঞ্চয়ের মুনাফার উপর সুদ হার কমিয়ে একে আরো সুনির্দিষ্ট করে উচ্চবিত্তরা ও কালোটাকার মালিকেরা যাতে সুযোগ নিতে না পারে তার জন্য নীতিমালা আরো কঠোর করা যায় কি-না ভেবে দেখা যেতে পারে।
বাংলাদেশ অর্থনীত সমিতি বিকল্প বাজেট পেশ করেছে। সমিতির সভাপতি প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারাকাত রাজধানীর সিরডাম সম্মেলন কক্ষে ১২ লাখ ৪০ হাজার ৯০ কোটি টাকার বিকল্প বাজেটের রূপরেখা দিয়েছেন। রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১০ লাখ ২ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। ৬৯ শতাংশ প্রত্যক্ষ কর বা আয়কর এবং ৩১ শতাংশ পরোক্ষ কর। অর্থাৎ মোট বাজেটের ৮১ শতাংশ সরকার যোগান দিবে ১৯ শতাংশ বন্ড, সঞ্চয় এবং দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিবে। জনাব বারকাত অর্থপাচার রোধ, কালো টাকা উদ্ধার, ও সম্পদকরসহ ২০টি নতুন উৎস থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় সম্ভব বলে দাবী করেছেন। তিনি ব্যক্তি পর্যায়ে করহার ৩% থেকে ১০ % সীমাবদ্ধ রেখে ১ কোটি টাকা বছরে আয় করে এমন ৫০ হাজার ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকেসমূহকে খুঁজে বের করে আয়করকে আরো সুবিন্যস্ত করার সুপারিশ করেছেন। ৯ লাখ ভ্যাট নিবন্ধনকারীর মধ্যে মাত্র ১ লাখ ভ্যাট দেয়। বাকীদের ব্যাপারে অনুসন্ধান করে হয় বাতিল অথবা মিনিমাম ভ্যাট প্রদানের পদ্ধতি চালু করে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি সম্ভব।
অর্থনৈতিক সমিতির প্রস্তাব লোভনীয় কিন্তু বাস্তবায়ন কঠিন। কারণ, আমাদের বর্তমান রাজস্ব কাঠামোর যে দুর্বলতা আছে তা কাটিয়ে না উঠলে কখনও সঠিক রাজস্ব আদায় সম্ভব নয় । অদক্ষতা এবং দুর্নীতি যেমন সমস্যা তেমনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো, রাষ্ট্রব্যবস্থাপনা এবং কর ব্যবস্থাপনা কোনটাই আমাদের বড় অর্থনৈতিক রাষ্ট্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। প্রকৃত রাজস্ব অর্থনৈতিক সমিতির প্রস্তাবের তুলনায় অনেক বেশী। কিন্তু বর্তমান কাঠামো দিয়ে তা অর্জন করা সম্ভব নয়। এখনও রাজস্ব বিভাগ কাজ করে লক্ষ্যমাত্রা ধরে। এখানে লক্ষ্যমাত্রা থাকবে কেন? লক্ষ্য থাকবে শতভাগ রাজস্ব আদায়ে। এর জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্র, সমাজ এবং ব্যক্তির সকলের মন-মানসিকতার আমূল পরিবর্তন এবং স্বতঃস্ফূর্ত কর প্রদানের পরিবেশ গড়ে তোলা। জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রাজস্ব প্রশাসন এবং বিচার বিভাগসহ সকলে স্তরে আন্তরিকতা স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। শুধু রাজস্ব বিভাগ সৎ আর বাকীরা অসৎ থাকলে, রাজস্ব বিভাগের পক্ষে কি সঠিক কর আদায় সম্ভব হবে? তবে, আয়কর বিভাগ এবং পুলিশ বিভাগ চাইলে দেশ দুর্নীতি মুক্ত করা কোন কঠিন কাজ নয় যদি আইন বিভাগ এবং বিচার বিভাগ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার পাশাপাশি রাজনৈতিক সদিচ্ছা যদি পুরাপরি থাকে। সেই সাথে কর-ব্যবস্থাপনা এবং পুলিশ ব্যবস্থাপনা শতভাগ সৎ হয় দক্ষ এবং জনবান্ধব হয়।
এই বাজেটে ঋণখেলাপী ও ব্যাংক লুটেরাদের প্রতিরোধ করার কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই। নেই কৃষকদের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার নিশ্চয়তা। উৎপাদন খরচের তুলনায় বাজারে যদি কৃষিপণ্যের দাম কম থাকে তা হলে কষ্ট করে ও পয়সা খরচ করে উৎপাদনে যাবে কেন? আশার কথা, রেল কর্তৃপক্ষ কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে। কৃষকদের মূল্য সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে না পারলে সমাজে যে অস্থিরতা দেখা দিবে দেখা দিবে, তার থেকে কেউ মুক্তি পাবে না। বহুদেশে কৃষকদের হয় ভর্তুকী, নতুবা সরকার ন্যায্য দামে কৃষকদের কাছ থেকে কৃষিপণ্য সরাসরি কিনে নেয়। বাজেটে এই ব্যাপারে কোন বক্তব্য নাই। প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জন্য সর্বজনীন পেনশনের কথা বাজেটে বলা হয়েছে। এর সুফল প্রবীণরা পাবে তো? তবে, বাজেটে অনেক আশার কথা শুনানো হলেও বাস্তবে কতটুকু বাস্তবায়ন হবে, তা অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আশ^স্ত হওয়া যাচ্ছে না। বাজেট ঘোষণার পর দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তবু আমরা আশা করবো, প্রত্যাশা যেন – “কি আশায় বাঁধি খেলাঘর বেদনার বালুচরে” – পরিণত না হয়।

লেখক : রাজনীতি বিশ্লেষক ও কলামিস্ট।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট