চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

বাজেটে শুল্ক বৃদ্ধি, দাম বাড়িয়ে কি কমানো যাবে ধূমপান?

ইমরান এমি

১৬ জুন, ২০১৯ | ১:২৫ পূর্বাহ্ণ

২০১৯-২০ অর্থ বছরের ঘোষিত বাজেটে তামাকজাত পণ্য ও বিড়ি সিগারেটের উপর নি¤œতম স্তরের সিগারেটের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৭ টাকা বা তার চেয়ে বেশি। সেখানে সম্পূরক শুল্ক ধরা হয়েছে ৫৫ শতাংশ। মধ্যম স্তরের ১০ শলাকার সিগারেটের মূল্য হবে ৬৫ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক হবে ৬৫ শতাংশ। উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার সিগারেটের মূল্য হবে ৯৩ টাকা ও ১২৩ টাকা। এখানে সম্পূরক শুল্ক হবে ৬৫ শতাংশ। এছাড়াও ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকার প্যাকেটের দাম ১৪ টাকা এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকার প্যাকেটের দাম ১৫ টাকা থেকে ১৭ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে করও যুক্ত থাকবে।
এই দাম ১ জুন থেকেই কার্যকর করা হবে। অন্যদিকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিড়ি সিগারেটের মত ভয়াবহ আরেকটি পণ্য হলো জর্দা ও গুল। তাই এর ব্যবহার কমানোর জন্য প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার দাম ৩০ টাকা ও প্রতি ১০ গ্রাম গুলের দাম ১৫ টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি দুটোরই সম্পূরক শুল্ক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বাজেটের চেয়ে এবারের বাজেটে তামাকজাত পণ্য দাম বাড়ানোর কারণ দেশে ধূমপায়ী ও তামাকসেবীদের সংখ্যা কমানো প্রত্যেক বাজেটে তামাক পণ্যের দাম বাড়ানো হয়।
বিগত সময়ের তুলনায় যেমন এবার তামাক পণ্যের দাম যেমন বেশি বাড়ানো হয়েছে তেমনি বিগত সময়ের তুলনায় এবার মানুষের মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে। সিগারেট বিড়ির দাম বাড়িয়ে কখনো ধূমপায়ী ও তামাকসেবীদের সংখ্যা কমানো যাবে না। ধূমপানে আসক্তরা এটা ছাড়তে পারবে ।
এক ব্যক্তি শিক্ষা জীবনের শুরুতেই ধূমপান বা তামাক সেবনের প্রচুর বিরোধী ছিল। এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার আগে বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে সে আসক্ত হয়ে পড়ে সিগারেটের প্রতি। পরবর্তী সময়ে দেখা যায় পরীক্ষা চলার সময়ে স্কুলের পাশের সিগারেটের দোকান থেকে সে সিগারেট পান করে আবার পরীক্ষার হলে গিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। তারপর সে যখন কলেজে যায় তখন পুরোপুরিই সিগারেটে আসক্ত। সকালে ঘুম থেকে উঠে, নাস্তা-চা খেয়ে, দুপুরে ভাত খেয়ে, রাতে খাবার খেয়ে তার সিগারেটে টান দিতে হয়। সিগারেট না হলে নাকি তার কিচ্ছু হজম হয় না। শুধু তাই নয় সে যখন প্রাকৃতিক ডাক সাড়তে যায় তখনও তাকে সিগারেট টানতে হয়। না টানলে নাকি তার দিন ভালো যায় না।”
এভাবে এক একজন ধূমপান বা তামাক সেবনে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। ধূমপান থেকে মাদক নেশা, মাদক নেশা থেকে ইয়াবাসহ নানা ধরনের নেশায় আসক্ত হয়ে যায় তরুণসমাজ। বর্তমান সরকার আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ধূমপানমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। সে ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে হলে, বাংলাদেশকে তামাকসেবী মুক্ত করতে প্রকাশ্যে তামাক সেবন ও বিক্রি নিষিদ্ধ করতে হবে। তামাক চাষ বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে সিগারেটের দোকান বন্ধ করতে হবে। হোটেল বা রেস্টুরেন্টের পাশে পান ও সিগারেটের দোকান নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
এছাড়াও প্রকাশ্যে ধূমপানকারীদের জেল-জরিমানার বিধান করতে হবে। তামাক সেবনে সমস্যাগুলো পাঠ্য বইয়েও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। শৈশবের পাঠ থেকেই তামাক সেবনের ক্ষতিকর দিকগুলো জানলে অনেকেই বিরত থাকবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট