চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

শিক্ষা ব্যবস্থা বদলাতে হবে

২৯ মে, ২০১৯ | ১:৪৩ পূর্বাহ্ণ

কয়েকদিন আগে পত্রিকায় একটি রিপোর্ট পড়ে আঁতকে উঠলাম। আমাদের দেশে শিক্ষাখাতে যে খরচ অভিভাবকদের বহন করতে হয় তা নাকি যুক্তরাষ্ট্র বা আমেরিকার চাইতে বেশি! আমি একজন অভিভাবক হিসেবে রিপোর্টটি মুল্যায়ন করে দেখলাম শতভাগ ঠিক। আমার নিজের ইনকামের ৩০-৪০% টাকা খরচ হয় সন্তানদের শিক্ষার খরচের পেছনে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আর বেরিয়ে আসতে গেলেই সরকারকে শিক্ষাব্যবস্থা বদলাতে হবে এবং জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিতে হবে অথবা ইউনেস্কোর সুপারিশ অনুযায়ী ২০% বরাদ্দ রাখা যেতে পারে।
স্বাধীনতার পর হতে এপর্যন্ত যেকটি শিক্ষা কমিশন হয়েছে প্রতিটি শিক্ষা কমিশন ছিলো পক্ষপাতদুষ্ট, অকর্মমূখী এবং বিশ্বের সাথে সামঞ্জস্যহীন। যা হোক বর্তমান সরকার যেহেতু চেষ্টা করছে তাই আসছে বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রেখে সুষ্ঠু বণ্টন করে কিছু পরিবর্তন আনা যেতে পারে। সরকারি নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করতে না পারলেও প্রত্যেক সরকারি এবং এমপিওভুক্ত প্রাইমারী স্কুল, হাই স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটিগুলো, মেডিকেল কলেজগুলো দুই/তিন শিফটে ক্লাস নিলে শিক্ষার নামে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো অনেকাংশে গুটিয়ে যাবে এবং শিক্ষায় অভিভাবকদের খরচ অনেক কমে যাবে। অবশ্য গভঃ হাই স্কুলগুলোতে ২ শিফট চালু আছে। পাশাপাশি নতুন বিল্ডিং করতে হচ্ছেনা, নতুন জায়গা লাগছেনা। এখন যা আছে তার তিন গুণ শিক্ষকের চাকুরী হবে। বেকারত্ব কমবে। কোচিং ব্যবসা করে গরীব মেধাবী অনেকটা বেকাররা। সরকার কোচিং ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের চেয়ে সরকারি কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়মিত ক্লাস নেওয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে। বন্ধ করতে হবে বেসরকারি কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট টিচার হিসেবে যাওয়ার সুযোগ।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স ডিগ্রী বা উচ্চশিক্ষার হার আরো অনেক কমাতে হবে। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি এবং মেডিকেল কলেজ বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে যে সমস্ত বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে সেখানে অথবা প্রান্তিক পর্যায়ে বা জেলা শহরগুলোর ছোট বড় মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অষ্টম শ্রেণি থেকে ইন্টার্নশীপ করার সুযোগ দিলে কাজও শিখবে পাশাপাশি লেখাপড়াও শিখবে। সে যখন পাশ করে বের হবে চাকুরী অথবা ব্যবসা নিশ্চিত করেই বের হবে। দেশে হোক আর বিদেশে হোক। তৈরী হবে একটি দক্ষ জনগোষ্ঠী। দেশে যেরকম উচ্চ শিক্ষিত চাকুরীর চাহিদা কমে গেছে তেমনি বিদেশে অশিক্ষিত অদক্ষ শ্রমিকের চাহিদাও কমে গেছে। দেশে হোক আর বিদেশে হোক চাকুরী বা ব্যবসার বাজার দক্ষ বা কর্মমূখী শিক্ষিতদের দখলে। সরকার যদি বাস্তবমুখী এবং কর্মমূখী শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে পারে বা করে তাহলে এমনিতেই ২০-৩০% বাজেটে বরাদ্দ রাখতে হবেই। তাহলেই সম্ভব সরকার যে উন্নত দেশ গড়বার স্বপ্ন দেখছে তার বাস্তব রূপ। অন্যথায় প্রত্যেক বছর উচ্চ শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়বে এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বাড়বে।

মোহাম্মদ শফিউল আলম
খাজা রোড, চান্দগাঁও, চট্টগ্রাম।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট