চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে দেশকে রক্ষা করুন

২৫ মে, ২০১৯ | ১:১৭ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ। স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ের অর্থনৈতিক মন্দা, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, সামাজিক দৈন্যদশা কাটিয়ে বর্তমানে সাবলীলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাচ্ছে অনন্ত সম্ভাবনা আর সমৃদ্ধির দিকে। বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুর তনয়া শেখ হাসিনা নতুন করে দেশের মানুষকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, যেমনটি দেখিয়েছিলেন স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাবার দেখানো পথেই যেন হাঁটছেন তার যোগ্য কন্যা। দেশ দ্রুত উন্নয়নের পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে প্রতিটা সেক্টরে যেন দুর্নীতি চরমভাবে প্রবেশ করছে। দেশের এমন কোন সরকারি ক্ষেত্র নেই যেখানে দুর্নীতি নেই। দুর্নীতির বিপরীতে অন্য কোন উদারপন্থা বা নীতি আমাদের সামনে থাকতে পারে তা ক্রমান্বয়ে ভুলতে বসেছি। অথচ সরকার এই দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য কত না পদক্ষেপ নিয়েছেন! বিগত আমলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, মন্ত্রী-এমপিরা যাতে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে না পড়ে সেজন্য বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি দ্বিগুণ করা হয়েছে। আর সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি আমলাদের জন্য উৎসব ভাতা বৃদ্ধি, আধুনিক বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয়, আবাসন সমস্যা নিরসনে নানা প্রকল্পসহ তাদের সার্বিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণে প্রতি বছর বাজেটের একটা বড় অংশ বরাদ্দ দেন। তারপরেও অবস্থার আপাতদৃষ্টে কোন পরিবর্তন আসছে বলে মনে হয় না। যে লাউ সেই কদু। মনে হচ্ছে, দুর্নীতি আগের তুলনায় বহুগুণে বেড়েছে।
অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনা বিশ্লেষণ করলেই আমরা বুঝতে পারবো, কি পরিমাণ দুর্নীতি এদেশের উপর জেঁকে বসেছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্রিনসিটি হাউজিং প্রকল্পের যে দুর্নীতির চিত্র বেরিয়ে এসেছে তা দেখে বিস্মিত পুরো দেশবাসী। একটি বালিশের মূল্য এবং তা ফ্ল্যাটে উঠানোর খরচ দেখে অবাক বিস্ময়ে তাকায় বাংলাদেশ! সেখানে প্রতিটি বালিশ কেনায় খরচ পড়েছে ৫,৯৫৭ টাকা। আর প্রতিটি বালিশ ফ্ল্যাটে উঠাতে খরচ হয়েছে ৭৬০ টাকা। প্রতিটি খাট কেনায় খরচ হয়েছে ৪৩,৩৫৭ টাকা। আর উঠানোর ব্যয় ১০,৭৭৩ টাকা। প্রতিটা বিছানা কেনায় ব্যায় দেখানো হয়েছে ৫,৯৮৬ টাকা। ফ্ল্যাটে ওঠানোর ব্যয় দেখানো হয়েছে ৯৩১ টাকা। একেকটি বৈদ্যুতিক চুলা কেনার খরচ পড়েছে ৭,৭৪৭ টাকা। আর ওই চুলা ওঠাতে ব্যয় হয়েছে ৬,৬৫০ টাকা। এমনকি একটা ফ্যান কিনতে দেখানো হয়েছে লক্ষাধিক টাকারও বেশি খরচ। এভাবে সবিস্তারে লিখে শেষ করা যাবে না। এ তালিকা দীর্ঘ। এছাড়াও সেখানকার মালির ও রাধুনির বেতন যথাক্রমে প্রায় ৮০,০০০ টাকা এবং গাড়ি চালকের বেতন প্রায় ৯২,০০০ টাকা। শুধু কি রূপপুরে এমন চিত্র? অবশ্যই, না। সারাদেশের প্রকল্পসমূহে এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে। এভাবে সারাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পে ইচ্ছেমতো বিল তৈরি করে লুটে নেয় হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
আমরা নতুন প্রজন্ম এমন চিত্র আর দেখতে চাই না। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির সুচারু বাস্তবায়ন দেখতে চাই।

আব্দুল্লাহ্-আল-মামুন
শিক্ষার্থী সমাজকর্ম বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট