চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

রমজানের রোজা পালন

সাইমুম চৌধুরী

২৪ মে, ২০১৯ | ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ

রোজাদার ব্যক্তিদের মধ্যে কাউকে কাউকে সাংসারিক বা কর্মক্ষেত্রের তাগিদে নিজস্ব স্থায়ী বাসস্থান ছেড়ে অন্যত্র যেতে হয়। যাওয়ার পথে ওই রোজাদার ব্যক্তির সেহেরী গ্রহণে বিঘœ ঘটতে পারে। আবার, কোনো রোজাদার ব্যক্তি অসুস্থ বা পীড়িত হয়ে যেতে পারেন এমনভাবে যে তাঁর পক্ষে রোজা পালন সম্ভব নয়।
এমন রোজাদার ব্যক্তিদের জন্য আল্লাহর নির্দেশনা হলো, “আর তোমাদের যারা পীড়িত থাকবে বা ভ্রমণে থাকবে, তবে অন্য সময়ে তা এর সমপরিমাণ সংখ্যায় পূর্ণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, তিনি তোমাদের প্রতি কঠিন করতে চান না যাতে তোমরা আল্লাহর মাহাত্ম্য ঘোষণা করো যে, তিনি তোমাদের হিদায়েত দিয়েছেন সে জন্য এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও।” (সুরা-২ বাকারা আয়াত ১৮৫)।
রমজান মাসে প্রত্যেক সক্ষম নারী ও পুরুষদের রোজা পালন ফরজ। রোজা পালনের শর্ত হলো। রোজা পালনকারী স্বাভাবিক জ্ঞান সম্পন্ন হওয়া, সাবালক হওয়া, সুস্থ ও সক্ষম হওয়া, সফরে না থাকা, নারীগণ পবিত্র অবস্থায় থাকা। আরবী বর্ষপঞ্জীর রমজান মাসে রোজা পালন সক্ষম মুমিন নারী ও পুরুষের জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ ফরজ করেছেন।
আল্লাহ বলেন, সিয়াম বা রোজা নির্দিষ্ট একমাস। তোমাদের মধ্যে যারা এ সময়ে পীড়িত বা ভ্রমণে থাকবে অন্যসময়ে সমপরিমাণ রোজা পালন করে পূর্ণ করবে। অসুস্থতা হেতু যারা রোজা পালনে অসমর্থ তারা এর পরিবর্তে ফিদইয়া দেবে একজনের মিসকিনের খাবার। যে ব্যক্তি অধিক দান করবে তা অধিক উত্তম। যদি তোমরা পুনরায় ওই রোজা পালন কর, তবে তা তোমদের জন্য অধিক উত্তম। (সুরা-২ বাকার, আয়াত ১৮৪)।
আল্লাহ মানুষকে বিধান দিয়েছেন। মানুষ সেই বিধান অনুযায়ী নিজের কল্যাণের জন্য আল্লাহর ইবাদত করবে। আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, ‘আল্লাহ কোনো সত্তাকে তার সামর্থ্যরে অধিক দায়িত্ব চাপান না।: (সুরা-২ বাকারা আয়াত-২৮৬)। যখন কোরআনে এই আয়াত নাজিল হলো- ‘ হে মুমিনগণ তোমরা আল্লাহকে যথাযথরূপে ভয় করো। (সুরা-৩ আল ইমরান আয়াত ১০২)। তখন সাহাবায়ে কিরাম অসহায়ত্ব ও অপারগতা প্রকাশ করে নবীজি (সা.) এর দরবারে আবেদন করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.) মহান আল্লাহ পাকের শান মতো তাঁকে যথাযথরূপে ভয় করা আমাদের পক্ষে কীভাবে সম্ভব, আমাদের তরফ থেকে আল্লাহর দরবারে এটি সহজ করার আবেদন করুন।
তখন আল্লাহ পাক নাজিল করলেন, “তবে তোমরা তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আল্লাহকে ভয় করো আর তোমরা শোনো ও আনুগত্য করো।”(সুরা-৬৪ তাগাবুন আয়াত ১৬)।
একজন রোজাদার ব্যক্তি সফরে, বা ভ্রমণে থাকলে তিনি সম্ভব হলে রোজা পালন করবেন, এটাই উত্তম। আর সম্ভব না হলে রোজা ছেড়ে দেবেন। তবে, এই ছেড়ে দেয়া রোজা পরে কাজা হিসেবে পূরণ করে দিতে হবে।
ঠিক একইভাবে মুসাফির ব্যক্তির জন্য চার রাকাত ফরজ নামাজ কসর (সংক্ষিপ্ত) অর্থাৎ ২ রাকাত আদায় করবে। সুন্নতগুলো নফলের পর্যায়ে চলে যাবে। আদায় করলে সুন্নতের সওয়াব পাবে, ভরক করলে নফল তরক হবে। যদি কোন প্রাপ্ত বয়স্ক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি অসুস্থতা হেতু এবং পুনরায় সুস্থ হবার সম্ভাবনা না থাকে, এ অবস্থায় ওই ব্যক্তির রোজার জন্য একটি সদকাতুল ফিতরার সমপরিমাণ ফিদইয়া আদায় করবেন।
ফিদইয়া’র বাংলা অর্থ হলো মূল্য, বিনিময়, মুক্তিপণ, বিকল্প, প্রতিদান।
আসুন, আমরা প্রতিটি মুসলমান নর নারী রোজার হক পালনে সচেষ্ট হই এবং মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর দেয়া জীবন বিধান মেনে চলি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট