চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রসঙ্গ চিকিৎসকদের পেশা পরিবর্তন

চিকিৎসা শ্রমিকের দিনলিপি

ডা. হাসান শহীদুল আলম

৪ মার্চ, ২০২০ | ১:৪৩ পূর্বাহ্ণ

পর্ব দুই। মাঘের শেষ সপ্তাহ। ১৪২৬ বঙ্গাব্দ। পটিয়াস্থ চেম্বার। প্রথমেই বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত সম্পর্কে প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য সম্মানিত পাঠক সমীপে পেশ করছি। দেশে জিডিপি-এর আকার বাড়লেও স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ কমেছে : বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী স্বাস্থখাতে জিডিপি এর কমপক্ষে ৫ শতাংশ ব্যবহার করা উচিৎ। সে অনুযায়ী এ বছরের ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ দেয়া উচিৎ ছিলো ১২৬৮০৮ কোটি টাকা। কিন্তু বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র ২৫৭৩২ কোটি টাকা।

স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ ক্রমান্বয়ে কমছে : ২০০৮-৯ অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় মোট বাজেটের ৫.৭ শাতংশ ছিলো। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিলো ৫.১৬ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিলো ৫.০৩ শতাংশ। এবারের ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪.৯১ শতাংশ। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় স্বাস্থ্যখাতে সবচেয়ে কম ব্যয় করে থাকে বাংলাদেশ।
এবারে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের সম্পর্কে প্রয়োজনীয় কিছু তথ্যাদি পাঠক সমীপে পেশ করছি।
নিবন্ধনকৃত চিকিৎসকের সংখ্যা : বিএমডিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত চিকিৎসকের সংখ্যা ৯৩৭৬৩। তাদের মধ্যে এমবিবিএস ৮৫৬৩৩ এবং বিডিএস ৮১৩০।

প্রতি বছর কতজন চিকিৎসক পাশ করে বেরুচ্ছে : দেশে বর্তমানে ৩১টি সরকারী মেডিকেল কলেজ ও ৭৫টি বেসরকারী মেডিকেল কলেজ এবং বিভিন্ন ডেন্টাল কলেজ ও ইউনিটসমূহ থেকে প্রতি বছর প্রায় ১০০০০ চিকিৎসক পাশ করে বেরুচ্ছে।
সরকারী খাতে অপর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগ : দেশে বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বিশ^ব্যাংক নিরূপিত এক দশমিক শূন্য এক শতাংশ (১.০১ শতাংশ) ধরে বিআইডিএস একটি গবেষণা কর্ম পরিচালনা করেছে। এতে প্রতি বছর ২৫২২ জনের বিপরীতে একজন করে চিকিৎসক ধরা হয়েছে। বর্তমানে সরকারী নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ২৫১৫৩ জন। কিন্তু ২৫০০ জনগণের জন্য একজন চিকিৎসক হিসেব করলে বর্তমানে সরকারী নিয়োগ প্রাপ্ত চিকিৎসক থাকা উচিৎ ১৭ কোটি জনগণের জন্য প্রায় ৬৮০০০জন। অর্থাৎ সরকারের উচিৎ আরও ৫১৮৪৭ জন চিকিৎসককে এখনই নিয়োগ দেয়া। পাশাপাশি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত জনসংখ্যার জন্য সরকারকে প্রতি বৎসর চিকিৎসক নিয়োগ দিতে হবে ৬৮৬ জন। অর্থাৎ সরকার এখনই যদি আরও ৪১৮৪৭ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেয় এবং প্রতি বছর ৬৮৬ জন চিকিৎসককে নুতনভাবে নিয়োগ দেয় তবে চিকিৎসক পিছু ২৫০০ জনগণের হিসেবটা মিলবে। এতে পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে যে, সরকারী খাতে নিয়োগকৃত চিকিৎসকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র ৩৮ শতাংশ।
বাংলাদেশে চিকিৎসকের প্রয়োজন কত? বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক নির্দেশনা মতে যে কোন দেশে প্রতি ১০০০-১৫০০ মানুষের জন্য একজন এমবিবিএস চিকিৎসক থাকা উচিৎ।
সে হিসেবে যদি ১৫০০ জনগণের জন্য একজন এমবিবিএস চিকিৎসক ধরা হয় তবে ১৭ কোটি জনগণের জন্য ১ লাখ ১৪ হাজার চিকিৎসক প্রয়োজন। অর্থাৎ বাংলাদেশে এ মুহূর্তে আরও (১১৪০০০-৯৩৭৬৩) বা ২০২৩৭ জন চিকিৎসকের প্রয়োজন। আর যদি কর্মরত চিকিৎসকের সংখ্যা হিসেব করা হয় তবে বাংলাদেশে কর্মরত চিকিৎসকের সংখ্যা সরকারী-বেসরকারী মিলিয়ে ৫০০০০ এর বেশী হবে না। অর্থাৎ বাস্তবে আরও (১১৪০০০-৫০০০০) বা ৬৪০০০ জন কর্মরত চিকিৎসকের ঘাটতি রয়েছে। সে হিসেবে দেখা যাচ্ছে চিকিৎসকদের সরকারী নিয়োগ মাত্র ২৩ শতাংশ। আর সরকারী বেসরকারী মিলিয়ে কর্মরত চিকিৎসক মাত্র ৪৩ শতাংশ।

চিকিৎসকগণ কেন অন্য ক্যাডারে চলে যাচ্ছেন তার কারণ সমূহ : ক) স্বাস্থ্য ক্যাডারের অভ্যন্তরীণ বিশৃংখলা খ) আন্তঃক্যাডার বৈষম্য গ) প্রশাসন, পুলিশ, জুডিশিয়ারী ইত্যাদি ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ ক্ষমতার গর্বে সুযোগ পেলেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে অহেতুক চিকিৎসকদের হেস্তনেস্ত করতে থাকেন স্থানীয় জনগণের কাছে নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য ঘ) কর্মস্থলের দুর্বিষহ যাতায়াত ব্যবস্থা ঙ) কর্মস্থলের দুরবস্থা
চ) কর্মস্থলে সহযোগিতার অভাব ছ) আবাসন না থাকা জ) কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাব ঝ) অপর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দের কারণে চিকিৎসার জন্যে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে হাসপাতালে মানসম্পন্ন চিকিৎসা দিতে না পারার দায় চিকিৎসকের উপর বর্তানো ঞ) কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত কাজের চাপে সৃষ্ট মানসিক চাপ ট) ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেতন-ভাতা সন্তোষজনক ও সম্মানজনক না হওয়া ঠ) অনারারী মেডিকেল অফিসারদের প্রতি অবিচার ড) ক্রমবর্ধমান হারে চিকিৎসক বেকারত্ব বৃদ্ধি পাওয়া ঢ) চিকিৎসকদের ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটা ণ) মিডিয়া কর্তৃক অপপ্রচার ত) সমাজে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণার কারণে চিকিৎসক ও রোগীর মধ্যে দূরত্ব বৃদ্ধি থ) ঢালাওভাবে চিকিৎসকদের দায়ী করা দ) সামাজিকভাবে চিকিৎসকদের অবমূল্যায়ন।
এবারে উল্লিখিত কারণসমূহের পর্যালোচনা করছি।
ক) স্বাস্থ্য ক্যাডারের আভ্যন্তরীণ বিশৃংখলা : ১) স্বাস্থ্য ক্যাডারে ক্যারিয়ার প্ল্যানিং এর অনুপস্থিতি। ২) চাকুরীর ক্ষেত্রে প্রমোশনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অনুপস্থিতি এবং ক্ষেত্রবিশেষে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকার পরও দলীয় আনুগত্যের অগ্রাধিকার। ৩) পদোন্নতি না হওয়া : অনেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জীবনে একটি মাত্র পদোন্নতি নিয়ে, কেউ কেউ পদোন্নতি ছাড়াই স্বাস্থ্যক্যাডারে যোগদানকৃত পদ থেকে অবসরে যান। স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তার চেয়ে সরকারী চাকুরীতে ব্যাংকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে গোডাউন চৌকিদার কিংবা জুনিয়র ক্লার্কের ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল। প্রশাসনের অনেক বিভাগে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী পদোন্নতি পেয়ে পদোন্নতি বঞ্চিত স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তার চেয়ে বড় পদে উন্নীত হচ্ছেন। মেডিকেল কলেজেও কর্মচারীরা পদোন্নতি পেয়ে কর্মকর্তা হচ্ছেন। ৪) পদোন্নতি না হওয়ার ফলে সৃষ্ট প্রশাসনিক বিশৃংখলা : একজন তরুণ কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হন। অন্যদিকে সেই নির্বাহী কর্মকর্তার চেয়ে অনেক সিনিয়র এবং তাঁর চেয়ে মেধা ও যোগ্যতা অনেক বেশী থাকা সত্ত্বেও একজন চিকিৎসক পদোন্নতি না পেয়ে প্রবেশ পদেই থাকেন। জেলা পর্যায়েও একই অবস্থা। এর ফলে প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগটা সম্মানজনক হয় না। ৫) পোস্ট গ্রেজুয়েশন ছাড়া প্রমোশনের সুযোগ না থাকা : হেলথ এডমিনিস্ট্রেশন এর ক্ষেত্রে পোস্ট গ্রেজুয়েশন ছাড়া কেবল প্রশাসনিক ট্রেনিং দিয়েও দক্ষ হেলথ এডমিনিস্ট্রেটর তৈরী ও পদপূরণ সম্ভব। একমাত্র ক্লিনিক্যাল সাবজেক্ট এর সংশ্লিষ্টতা থাকলে হয়তো পোস্ট গ্রেজুয়েশন প্রয়োজন হতে পারে। স্বাস্থ্য ক্যাডার ছাড়া এমন কোন বিসিএস ক্যাডার নেই, যেখানে পদোন্নতির জন্যে নিয়োগের শর্তের যোগ্যতার চেয়ে অতিরিক্ত ডিগ্রি এর প্রয়োজন হয়।

অন্য সব ক্যাডারের মতো বিভাগীয় পরীক্ষা, ফাউন্ডেশন কোর্স, সিনিয়র স্কেল পাশ করলেই স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হয় না। যারা সব কয়টি পদোন্নতি পান এমন সৌভাগ্যবানদের সংখ্যা মোট চিকিৎসক কর্মকর্তাদের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য। স্বাস্থ্য ক্যাডারের আভ্যন্তরীণ বিশৃংখলা দূর না হওয়ায় চিকিৎসকগণ সরকারী চাকুরীতে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছেন। ৬) বাড়তি দায়িত্ব পালনের জন্য কোন প্রণোদনা বা বাড়তি সুবিধা না থাকা : একত্রিশ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা হাসপাতালসমূহ পঞ্চাশ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পরিণত হওয়া সত্ত্বেও পূর্বেকার অরগানোগ্রাম অনুযায়ী দু’জন মেডিকেল অফিসারের পদ থাকছে। কোন জরুরি মেডিকেল অফিসারের পদ রাখা হয় নি। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োজিত মেডিকেল অফিসাররাই আউটডোরে রোগী দেখার পর রাউন্ড দ্যা ক্লক বাই রোটেশান এক একজন ডাক্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ইমার্জেন্সি ডিউটি এর জন্য অনকল থাকেন। কিন্তু এজন্য তাদেরকে কোন রকম প্রণোদনা বা বাড়তি সুবিধা দেয়া হয় না।
৭) গ্রামে মহিলাচিকিৎসকদের চাকুরীতে সমস্যা হওয়া : চিকিৎসকদের গ্রামে থাকতে আগ্রহী করে তোলার জন্য পদায়নের ক্ষেত্রে কিছু অলিখিত নিয়ম অনুসরণ করা হতো : নিজ জেলায় বা জেলায় পোস্টিং, স্বামী-স্ত্রীর একই জায়গায় পোস্টিং।
বর্তমানে এসব নিয়ম অনুসৃত না হওয়ায় বিশেষ করে মহিলা চিকিৎসকগণ দুর্বিষহ অবস্থায় পতিত হচ্ছেন। ৮) নবীন চিকিৎসকদের নিয়োগ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়া : ৩৯তম বিসিএস-এ প্রায় সাড়ে আট হাজার চিকিৎসক লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও তাদেরকে নন কাডার ঘোষণা দিয়ে রাখা হয়েছে। তাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয় নি। এ নন ক্যাডার চিকৎসকগণ কবে কখন ক্যাডারভুক্ত হবেন এবং নিয়োগ পাবেন সেটা স্পষ্ট নয়। তারা যদি ৩৯তম বিসিএস পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে ব্যর্থ হয় তাহলে তাদেরকে ব্যর্থ বলা যাবে, কিন্তু নন ক্যাডার কেন ঘোষণা দেয়া হলো সেটা বোধগম্য হবার নয়। অথচ কর্ম কমিশন ফলাফল ঘোষণায় উল্লেখ করেছে যে, নন ক্যাডারভুক্ত সকল চিকিৎসক লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। পদশূন্য না থাকায় তাদের নিয়োগ না দিয়ে নন ক্যাডার আওতাভুক্ত করে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী থেকে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পর্যন্ত সকলেই জানেন যে, চিকিৎসকদের ব্যাপক পদশূন্য রয়েছে। পরস্পরবিরোধী এ অবস্থানে থেকে নবীন চিকিৎসকদের নিয়োগ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে। ফলাফল ঘোষণায় কর্ম কমিশন থেকে আরও বলা হয়েছে যে, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে শূন্য পদের তালিকা তাদের কাছে আসলে ঘোষিত নন ক্যাডার চিকিৎসকদের মধ্য থেকে ক্যাডারভুক্ত করে নিয়োগ দেয়া হবে।

মন্ত্রী, মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সকলেই এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। কর্ম কমিশনের কাছে শূন্য পদের তালিকা কে পাঠাবে জনপ্রশাসন না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেটা স্পষ্ট হচ্ছে না। অথচ জেলা, উপজেলা হাসপাতাল ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসকের অভাবে রোগীর ভোগান্তি চরমে উঠেছে। ৯) সরকারী হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে রোগী চিকিৎসার প্রয়োজনে ও জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে নূতন পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে না। ১০) অধঃস্থন এর সাথে শেয়ার করে মর্যাদা হানীকরভাবে চাকুরী করা : স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে অফিস শেয়ার করা একজন বিসিএস চিকিৎসকের জন্য মর্যাদাহানীকর। সাবমেন্টার এর হর্তাকর্তা থাকেন ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার ভিজিটর বা এফডাব্লিউভি নামে পরিচিত একজন সরকারী স্বাস্থ্যকর্মী যার সাথে এই চিকৎসকের অফিস শেয়ার করতে হয়।
এফডাব্লিউভি-রা সাধারণত স্বামী-স্ত্রী সহ সাবসেন্টার-এর উপরেই বসবাস করেন। তদুপরি এফডাব্লিউভিরা স্বাস্থ্য অধিদফতর এর কেউ নন। তাঁরা পরিবার-পরিকল্পনা অধিদপ্তর এর আওতাধীন। ফলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিসিএস কর্মকর্তা হিসেবে একজন মেডিকেল অফিসার এফডাব্লিউভিকে কোনকিছুর জন্য অধিকার বা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কিছু বলবেন, সে সুযোগ থাকে না বললেই চলে। আর অব্যবস্থাপনা দেখে চিকিৎসক যদি কোন কিছুর অভিযোগ করেও বসেন সবসময় তার মনোলোভা উত্তর পাবেন তার নিশ্চয়তা নেই।

অথচ একজন এফডাব্লিউভি আমলাতান্ত্রিক হিসেবে সম্ভবত তৃতীয় বা দ্বিতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারী। ১১) দলীয় রাজনীতির যাঁতাকলে বদলিবাণিজ্যের শিকার হওয়া : যখন যে দল ক্ষমতায় যায় তখন সে দলের সর্মথনপুষ্ট পেশাজীবী সংগঠনের পেশাজীবী নেতারা নিজ দলীয় ক্যাডারদের সুবিধা দানের জন্য বিরোধীদল সমর্থনকারী বা রাজনীতি নিরপেক্ষ ডাক্তারদের অপেক্ষাকৃত দূরবর্তী অঞ্চলের মেডিকেল অফিসারের পদসমূহে অথবা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় বা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নাজেহাল হতে হয় এমনি ধরনের সরকারী পদসমূহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আমলাদের সহযোগিতায় বদলি করে থাকে, যাদের মধে অনেক মেধাবী চিকিৎসক এর ভবিষ্যৎ কেরিয়ার করার সুযোগ চিরতরে ধ্বংস হয়ে যায়। অবশিষ্ট কারণসমূহের পর্যালোচনা পরবর্তী লেখায় থাকবে।

ডা. হাসান শহীদুল আলম ডায়াবেটিস ও চর্মরোগে ¯œাতকোত্তর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট