চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মানসিক রোগের প্রকার ও প্রতিকার

অধ্যক্ষ ডা. রতন কুমার নাথ

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ১২:৫৪ পূর্বাহ্ণ

প্রথমেই বুঝতে হবে মানসিক লক্ষণ কি?
হোমিওপ্যাথিতে সকল ওষুধকে চিনবার একটি বিশেষ উপায় আছে। একটি ওষুধকে বহুভাবে চেনা যায়। প্রতিটি ওষুধের কতকগুলি নিজস্ব লক্ষণ আছে, যার দ্বারা প্রতিটি বহুল প্রচলিত ওষুধকে পৃথকীকরণ করা যায়। কেবলমাত্র মানসিক লক্ষণ দিয়ে প্রতিটি ওষুধের এমন সুন্দরভাবে চিত্র অঙ্কন করা যায়, যা কিনা অন্য কোনভাবেই সম্ভব নয়। এবারে আসা যাক মানসিক লক্ষণ- কেন সর্বাগ্রে জানা উচিত? হোমিওপ্যাথি মাত্রই শক্তিকৃত ওষুধ প্রযোজ্য। ওষুধকে যত উচ্চশক্তিতে ব্যবহার করা যাবে, তত দীর্ঘদিন রোগীকে আরোগ্য আরামদায়ক অবস্থায় রাখা যাবে। অন্যদিকে হোমিও ওষুধের প্রুভিংকালে যত উচ্চশক্তি ব্যবহার হবে,ততই সুস্পষ্ট মানসিক লক্ষণ দেখা দেবে। এজন্য বহুল পরীক্ষিত ওষুধে যত মানসিক লক্ষণ আছে, অন্য কোন কম পরীক্ষিত ওষুধে কখনই সুস্পষ্ট মানসিক লক্ষণ পাওয়া যায় না। হোমিওপ্যাথিতে যত মনীষী আছেন তাঁরা প্রত্যেকেই এই মানসিক লক্ষণের গুরুত্ব দিয়ে রোগ ও রোগীকে আরোগ্য করছেন এবং আমাদেরকেও এই মূল্যবান মানসিক লক্ষণের গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করতে বলেছেন। পরীক্ষায় লক্ষ্য করা গেছে মানসিক লক্ষণ নির্ভরশীল ব্যবস্থাপত্র অন্যান্য ব্যবস্থাপত্র অপেক্ষা বোধগম্য এবং রোগীকে দ্রুত আরোগ্য করে। মানসিক লক্ষণ ছাড়া অন্যান্য লক্ষণ গুলি হলো : ক. সার্বদেহিক, খ. আংশিক, পাশির্^ক, আঙ্গিক, গ. রোগনিদান-তাত্ত্বিক ঘ. সহায়ক।

মানসিক লক্ষণের শ্রেণীবিন্যাস কেন প্রয়োজন ?
রোগীর কাছ থেকে যে সকল মানসিক লক্ষণ পাওয়া যায় তাদের গুরুত্ব সমান নয়। গুরুত্ব অনুযায়ী লক্ষণের শ্রেণীবিন্যাস বিশেষ প্রয়োজন। নতুবা লক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে অথবা গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণকে লঘু ভেবে ভুল ওষুধ নির্বাচনের সম্ভাবনা থেকে যায়।
কিভাবে করা হয়?

মহামতি কেন্টের মতে মানসিক লক্ষণকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলি হলো : ক. আবেগ/উচ্ছ্বাস জনিত (ডওখখ অঘউ ঊগঙঞওঙঘ) খ. ভ্রমজনিত (চঊজটঊজঞঊউ টঘউঊজঝঞঅঘউওঘএ) গ. বুদ্ধিভ্রংশ (ওঘঞঊখখঊঈঞ) মানসিক লক্ষণের মধ্যে আবেগজনিত লক্ষণের মূল্য সব থেকে বেশী।
আবেগজনিত লক্ষণের পর যে মানসিক লক্ষণের গুরুত্ব বেশী তা হলো, ভ্রমজনিত। এর মধ্যে পড়ে (অ ইঙঘউঙঘঊউ ঙজ ঋঙজঝঅকঊঘ ঋঊঊখওঘএ, উঊখটঝওঙঘ, ওখটঝওঙঘ, ঐঅখখটঈওঘঅঞওঙঘ, উঊখওজওটগ, চঊজঝঊঈটঞওঙঘ) প্রভৃতি।
তৃতীয় এবং কম গুরুত্বপূর্ণ মানসিক লক্ষণের মধ্যে পড়ে বুদ্ধিভ্রংশতা। মনে রাখতে হবে যে কোন মানসিক লক্ষণ সাধারণ শারীরিক লক্ষণ অপেক্ষা অনেক বেশী মূল্যবান। এছাড়া উল্লেখ করতে চাই রেপার্টরীর রুব্রিক-মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণ ছাড়া কিছুই নয়। কারণ Ñ ঊীঢ়ধহফবফ গধঃবৎরধ গবফরপধ রং জবঢ়বৎঃড়ৎু।

এখানে লক্ষ্য রাখতে হবে রোগী কিভাবে লক্ষণ ব্যক্ত করছে। এক্ষেত্রে লক্ষণের গভীরতা (উঊচঞঐ ঠঊখঙঈওঞণ ঠঙখটগঊ) জানা বিশেষ প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় Ñ ক. রোগীর খুব রাগ খ. অন্যজনের রাগ হলে শরীর কাঁপে বা অজ্ঞান হয়ে যায়। (ক্যামো, নাক্সভমিকা, ফসফরাস, স্ট্যাফ, জেলস) এক্ষেত্রে নিশ্চয়ই দ্বিতীয় গ্রুপের রোগীর মূল্য বেশী।
মানসিক লক্ষণের শ্রেণীবিন্যাস মেটেরিয়া ভিত্তিতে করবার জন্য আমাদের উচিত মেটেরিয়া মেডিকায় যে ওষুধগুলি মানসিক লক্ষণের ভিত্তিতেই ব্যবহৃত হয়, তার একটি তালিকা প্রস্তুত করা এবং ঐ ওষুধের মানসিক লক্ষণগুলি কোন গ্রুপ পড়ে তাকে চিহ্নিত করা। এর ফলে লক্ষণের গুরুত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র দিতে অনেকখানি সুবিধা হয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট