চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে নেতৃত্বের সংকট ও তাজউদ্দীন আহমদ

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

নাওজিশ মাহমুদ

১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ

বিএলএফ কমান্ডে ৪জন থাকলেও শেখ ফজলুল হক মনি এবং সিরাজুল আলম খান এই দু’জনই আধিপত্য করতেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রথমদিকে উভয়ের পরস্পরের প্রতি ছিল সহজাত বন্ধুত্ব এবং আস্থাশীল সম্পর্ক। পরে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বি হয়ে উঠেন। যদিও একজন ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ভাগিনা আরেকজন ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন এবং বিশ^স্ত। কিন্তু আদর্শগতভাবে দু’জনই ছিলেন বিপরীত মেরুতে। বিএলএফ এর প্রশিক্ষণের ব্যাপারে যেহেতু পূর্ব থেকেই নির্ধারিত ছিল। তাই চার যুবনেতা জেনারেল ওবানকে কেন্দ্র করে যুবক ও ছাত্রদের নিয়ে আলাদা একটি প্যরালাল সংগঠন দাঁড় করান। তাঁদের প্রাথমিক লক্ষ্য যদিও ছিলো যুদ্ধ করে দেশকে মুক্ত করা কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁদের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় যাতে যুদ্ধের পরে কিভাবে রাজনৈতিক ক্ষমতায় যাওয়া যায়। সেখানেও মনি ও সিরাজের লক্ষ্য ছিল বিপরীতমূখী। শেখ মনির লক্ষ্য ছিল যদি কোন কারণে বঙ্গবন্ধু ফেরত না আসে, তাহলে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং সামরিক নেতৃত্ব দখল করা। সিরাজুল আলম খানের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযদ্ধকে ব্যাহত না করে সুকৌশলে কাজে লাগায়।

ভারতের লক্ষ্য ছিল বৈরী পাকিস্তানেেক আলাদা করে ভারতের বন্ধু বা অনুগত একটি রাষ্ট্র সৃষ্টি করা। ভারতের প্রশাসনে রুশপন্থী এবং মার্কিনপন্থী দুটি লবি ছিল। এই দুটি লবির ভারসাম্য রক্ষা করে ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেন। তাজউদ্দীন বাঁমঘেষা। স্বাভাবিকভাবে ভারতে রুশপন্থী বামদের সহযোগিতা পেতে বেগ পেতে হয়নি। চিনাদের তিব্বত দখলের পর তিব্বতিদের নিয়ে স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স (এসএফএফ) নামে একটি গেরিলা বাহিনী সংগঠিত হয়েছিল তাঁর দায়িত্ব ছিলেন জেনারেল ওবান। চিনাদের বিরুদ্ধে এই গেলিরা যুদ্ধে প্রধান সহযোগী ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মার্কিন ও চিনের মধ্যে নতুন সখ্য চিন বিরোধী তিব্বতি গেরিলাদের যুদ্ধ মার্কিন সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হয়। চিনের বিরুদ্ধে তিব্বতিদের লড়াইও মার্কিন সহযোগিতা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে মার্কিনিদের সাথে চিনের নতুন বন্ধুত্বের কারণে। ফলে এই তিব্বতি গেরিলাদের প্রশিক্ষণ সুবিধা এবং অস্ত্রসমূহকে বাংলাদেশ যুদ্ধে কাজে লাগাবার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। বিএলএফ এই সুযোগ সুবিধার পুরোটায় ভোগ করে। যার জন্য উন্নতমানের অস্ত্র এবং প্রশিক্ষণের সুযোগ পায়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কাজে লাগায়। চিনও স্বস্তির নিঃশ^াস ফেলে। পাকিস্তান ও ভারত যুদ্ধে চিনের নিষ্ক্রিয়তার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়। বাংলাদেশ সরকারে অধীনে সেনাবাহিনীর কর্তৃত্বাধীন যুদ্ধে সম্পৃক্ত ছিল ভারতীয় সিকিউরিটি ফোর্স বা সংক্ষেপে বিএসএফ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী। অপর দিকে বিএলএফ এর ব্যাপারে দায়িত্ব পড়ে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স এবং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘আইবি’ বা ‘র’ এর উপর। ভারতীয়দের লক্ষ্য ছিল বামঘেঁষা তাজউদ্দীনের সাথে ভারতের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলে বিএলএফকে দিয়ে মোকাবিলা করা। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন জড়িয়ে পড়ায় এবং ভারতের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় পরিস্থিতি সহজে তাজউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন সরকারের সার্বিক কর্তৃত্বে চলে আসে। ওসমানী এবং যুদ্ধরত সেনাবাহিনীর চাপে পড়ে বিএলএফ নিয়ে আপত্তি করলেও তাজউদ্দীন বাড়াবাড়ি না করে দক্ষতার সাথে পরিস্থিতি তার অনুকূলে নিয়ে আসেন।

সমস্যা দেখা দেয় শেখ মনির সাথে তাজউদ্দীনের। কারণ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীনকে মেনে নিতে পারছিলেন না। সেই সাথে খন্দকার মোশতাক, কামারুজ্জান, মনসুর আলিও মেনে নিতে পারছিলেন না। সকলে প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার। কারণ তাজউদ্দীনের দক্ষতা ও কর্মকুশলতার সামনে তাঁদের দাঁড়াবার সুযোগ ছিল না। আর বিএলএফ ও নিউক্লিয়াসের অন্যতম প্রধান সিরাজুল আলম খান ও আবদুর রাজ্জাককে পাশ কাটিয়ে শেখ মনিরও খুব বেশী করার ছিল না। তোফায়েল আহমদ মনে হচ্ছে মনি ও সিরাজের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতেন। ফলে শেখ মনি ব্যাক্তিগতভাবে তাজউদ্দীনের বিরোধীতা করলেও বিএলএফকে তাজউদ্দীনের বিরুদ্ধে পুরাপুরি কাজে লাগাতে পারেননি। মাঠপর্যায়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সেনাবাহিনীর অধীনের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সমন্বয় না থাকার কারণে ভুল বুঝাবুঝির সম্ভাবনা ছিল। তেমনি ২/১ টি সংঘর্ষের ঘটনাও হয়েছে।

তাজউদ্দীনের বিরুদ্ধে খন্দকার মোশতাক গোপনে ষড়যন্ত্র করলেও সফল হননি। “স্বাধীনতা না মুজিব” এই প্রশ্ন তুলে মুক্তিযুদ্ধকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর অগোচরে পাকিস্তানের সাথে যোগাযোগ করেন। মুক্তিযুদ্ধকে বিভ্রান্ত করার জন্য পাকিস্তানের সাথে আপোষ করতে জাতি সংঘে গিয়ে প্রস্তাবের তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় তাঁকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়া হয়। অপর দিকে শেখ মনির উদ্যোগে ১০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেতার ভাষণ বন্ধ করার জন্য ভারতের ইন্দিরা গান্ধীর কাছে ৪২ জন আওয়ামী লীগ সদস্য আবেদন করেছিলেন। মন্ত্রীসভার সকল সদস্য ব্যাক্তিগতভাবে ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সাক্ষাৎকারের প্রচেষ্টা চালান। তারই পেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান সেনাপতিসহ মন্ত্রীসভার সকল সদস্য মে মাসে ইন্দিরা গান্ধীর সাথে দিল্লীতে বসেন। এরপর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর যৌথ সিদ্ধান্তের বাইরে অন্য কারো যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭১ এর জুলাই মাসে শিলিগুড়িতে আওয়ামী লীগের সভায় খন্দকার মোশতাক ও মিজানুর রহমানদের বিরোধীতা সত্ত্বেও তাজউদ্দীনের প্রতি সকলে আস্থা রাখেন। কিন্তু যুদ্ধকালীন সময়ে রনাঙ্গণে এবং জনভিত্তি কোনটায় তাজউদ্দীনকে অপসারণের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। ভারতে আশ্রিত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এবং অধিকাংশ প্রাদেশিক পরিষদ ও জাতীয় পরিষদের সদস্যরা তাজউদ্দীনের প্রতি বিরূপ ছিলেন না। রনাঙ্গণে সেনাবাহিনী যদিও ওসমানীর কর্তত্বাধীন ছিল। তবু যুদ্ধ সংক্রান্ত সভাগুলিতে সেক্টর কমান্ডারসহ ওসমানীর সাথে তাজউদ্দীনও উপস্থিত থাকতেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে ভূমিকা রাখতেন। প্রত্যক্ষ্যদর্শীদের মতে তাজউদ্দিনের যুদ্ধজ্ঞান ও ধ্যান-ধারণা সকলকে চমৎকৃত করতো। যুদ্ধ সংক্রান্ত সভায় তাজউদ্দীনই সভাপতিত্ব করতেন। তাজউদ্দীনের যোগ্যতা নিয়ে কারো প্রশ্ন উঠেনি। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাজউদ্দীনের মেধা ধীশক্তি এবং পরিস্থিতি বিশ্লেষণে দক্ষতার কারণে শ্রদ্ধা এবং সমীহ করতেন।

কিন্তু আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডকে পাশ কাটিয়ে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীরূপে উপস্থাপন এবং পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ হাই কমান্ডকে সাথে নিয়ে সরকার গঠন করে তাজউদ্দীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের দক্ষতা ও কুশলতার পরিচয় দেন। তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সফলভাবে সম্পন্ন হয়। এর মূলে ছিল বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে প্রস্তুতি হিসেব তাজউদ্দীন ভারতীয় কর্তপক্ষের সাথে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে যোগাযোগের দায়িত্বে ছিলেন। তাজউদ্দীন এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যথাযথ মর্যাদাপূর্ণ আচরণ ব্যাতিরেকে ভারতে প্রবেশে অস্বীকার, বিএসএফ এর সহযোগিতায় সরাসরি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ, নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরা, সবকিছুই ছিল একজন রাষ্ট্রনায়কোচিত আচরণ। দ্রুত স্বহস্তে নেতৃত্ব গ্রহণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সফলতার দিকে নিয়ে যান। তাঁর বিরুদ্ধে যত বিরোধীতা এসেছে, সবকিছু তিনি তার ধীশক্তি, মেধা, দক্ষতা ও কৌশলে মোকাবিলা করেন। বঙ্গবন্ধু ফেরত আসা পর্যন্ত তিনি তার নেতৃত্ব ধরে রাখতে সক্ষম হন।

তাজউদ্দীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন, সরকার ও মন্ত্রীসভা গঠন, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বাঙালি সেনাদের নিয়ে সেক্টর গঠন, রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলা, বিদেশী রাষ্ট্র থেকে অস্ত্র অর্থ ও সাহায্য গ্রহণ, কূটনৈতিক তৎপরতা, সফলতার সাথে প্রচার চালানো, শরণার্থীদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ভারতে বসে ভারতীয়দের সাথে স্বকীয়তা ও আত্মমর্যাদার সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে সফলতার সাথে সরকার পরিচালনা সম্পন্ন করেন। প্রশাসনকে দক্ষতার সাথে মুক্তিযুদ্ধের জন্য উপযোগী করে কাজে লাগানো অবশ্যই কৃতিত্বের দাবিদার। যদিও বঙ্গবন্ধুর ভাবমূর্তিকে সামনে রেখে তিনি এই কাজগুলি করেছেন। তাঁর দক্ষতা, মেধা, ধীশক্তি ও কৌশলের মাধ্যমে বাঙালি জাতির রাষ্ট্রগঠনের সফলতা, তাঁকে বাঙালি জাতির ইতিহাসে অনন্য জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। তাজউদ্দীনের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হলো তিনি নিষ্ঠার সাথে সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে দলীয় সংকীর্ণতার উর্দ্ধে ছিলেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এখনও ব্যতিক্রম।
যেহেতেু বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে সোভিয়েতের সহযোগিতা দরকার ছিল তাই তিনি সিপিবি এবং ন্যাপ সংগঠকদের কাছে টানেন। অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ, মনি সিংহ কে নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা কমিটি করেন। মাওলানা ভাসানীকে উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান করে তিনি চিনা পন্থীদের একটি অংশকে আশ^স্থ করেন। ন্যাপ সিপিবি এবং বাংলদেশ কংগ্রেস নিয়ে কমিটি করার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির চেষ্টা করেন। সিপিবি, ন্যাপের গেরিলা বাহিনী, কাজী জাফর-মেননদের গেরিলা বাহিনী গঠনে কোন বাধা দেননি। ফলে বিএলএফ এর বিরোধীতার করার নৈতিক কোন ভিত্তি তাজউদ্দীনের ছিল না। কিন্তু ব্যাক্তিগত অহমিকা, আদর্শগত এবং ক্ষমতার দ্বন্দ্ব তাজউদ্দীন ও শেখ মনি পরস্পরকে প্রতিদ্বন্দ্বি করে তোলে।

সফলভাবে তাজউদ্দীন স্বাধীনতাযুদ্ধের নেতৃত্বে উত্তীর্ণ হলেও বঙ্গবন্ধু মুজিব পাকিস্তান কারাগার থেকে ফেরত আসার পর তাজউদ্দীনের গুরুত্ব হ্রাস পায়। সবকিছু বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। মোশতাকের কূটচাল ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের কাছে তাজউদ্দীন হেরে যান। দেশগঠন প্রক্রিয়ায় তিনি উপেক্ষিত হয়ে পড়েন। তাজউদ্দীনের প্রচ- অভিমান, বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে খন্দকার মোশতাক এবং শেখ মনির বলয় এই বঙ্গবন্ধুর সাথে তাজউদ্দীনের দূরত্ব সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে। সৈয়দ নজরুল, কামারুজ্জামান ও মনসুর আলি কেউই বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দীনের এই দূরত্ব কমানোর কোন চেষ্টা করেন নি। এই ক্ষেত্রে সিপিবি ও ন্যাপের ভূমিকাও রহস্যজনক। বঙ্গবন্ধুর সাথে তাঁর আস্থাভাজন সিরাজুল আলম খানের মতপার্থক্য এই দূরত্বকে আরো বাড়িয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিও কৌশলে তাজউদ্দীনের এবং সিরাজুল আলম খানকে বঙ্গবন্ধুর সাথে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টিতে ইন্ধন যুগিয়েছেন। ফলে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠা বিকল্প নেতৃত্বের সাথে মূল নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে বাংলাদেশকে খেসারত দিতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ’৭৫ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীরা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল করে নেয়। (সমাপ্ত)

নাওজিশ মাহমুদ রাজনীতি বিশ্লেষক ও কলামিস্ট।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট