চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রাতেই ভিড় বেশি সেন্ট্রাল প্লাজায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ মে, ২০১৯ | ২:৪৩ পূর্বাহ্ণ

তখন রাত আটটা। ইফতার শেষে জমজমাট পুরো মার্কেট। তিন, চারজন করে দলে দলে নারী, পুরুষ ও শিশু। তবে পুরুষের চেয়ে নারীদের উপস্থিতিই বেশি। বাবা-মার সাথে আছেন শিশুরাও। তাদেরও যেন উৎসাহের শেষ নেই। বাবা-মার সাথে তারাও এই দোকান, সেই দোকান ঘুরে ঘুরে কাপড় পছন্দ করছে। কিছু দোকানে মেয়েরা বসে কাপড় দেখছে আর দরদাম করছেন। সবগুলো দোকানেই ছিল বেশ ভিড়। ব্যস্ত ছিল বিক্রেতারাও। সব মিলিয়ে বেশ জমে উঠেছে নগরীর জিইসি মোড়ের সেন্ট্রাল প্লাজা। তবে বিশেষ করে থান কাপড়, থ্রি-পিস ও ওড়নার দোকানগুলোতে বেশি ভিড় দেখা যায়। আবার বিভিন্ন জুতা, কসমেটিকস, জুয়েলারি ও শিশুদের কাপড়ের দোকানগুলোতেও ভিড় ছিল বেশ লক্ষণীয়। কেনাকাটায় আভিজাত্যের অনন্য নাম সেন্ট্রাল প্লাজা। মানসম্মত কাপড়, জুয়েলারি, জুতার জন্য বেশ সুনাম রয়েছে এ মার্কেটের। বিশেষ করে মহিলাদের কাছে খুব জনপ্রিয় এই শপিং সেন্টার। ঈদকে ঘিরে তাই মেয়েদের আনাগোনা বেড়েছে সেন্ট্রাল প্লাজায়। গতকাল রবিবার মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতা আকর্ষণের জন্য রঙিন সাজে সেজেছে পুরো মার্কেট। আর ভেতরের দোকানগুলো ক্রেতাদের মনোরঞ্জনে বাহারি সব কালেকশনে ভরপুর। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য মানসম্মত, রুচিশীল আর নান্দনিক পোশাকের সমাহার এখানে। শাড়ি, থ্রি-পিস, থানকাপড়, টেইলার্স, জুতোর দোকান, বোরকার দোকান, জুয়েলারি, লেইস ফিতার দোকান, কিডস আইটেম, ওড়না, ঘড়ি ও ডিজাইনেবল সানগ্লাসের দোকান

রয়েছে এখানে। তিনতলা বিশিষ্ট এই মার্কেটটিতে ১৮৪টি দোকান রয়েছে। নিচের ফ্লোরে থান কাপড়, বোরকা, ওড়না, কসমেটিকসের দোকান। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে জুতা, শাড়ি, কিডস, জুয়েলারির দোকান। তৃতীয় তলায় টেইলার্স, বাহারি লেইস ফিতার কালেকশন।
দোকানগুলোতে বিচিত্র নামের থান কাপড়, থ্রিপিস ও গাউন আছে। যা মেয়েদের আকৃষ্ট করছে। থ্রিপিসের মধ্যে কারিশমা, জয়া, মোহিনি, রাণী কটন, জয় বিজয়, রাকি কটন, মতিজ, পাটোল, নাজির, জোবাইদা, জিসা, ও মটেক্সসহ বাহারি সব নাম। ওড়নার মধ্যে আছে বেনারসী কাতান, পিউর জর্জেট, চিকেন জর্জেট, গুজরাটি কাজের ওড়না, পিন্ট জর্জেটসহ কাপড়ের সাথে বিভিন্ন ডিজাইনের হিজাব ওড়না। এসব ওড়নার দাম আড়াইশ টাকা থেকে আটশ টাকার মতো। থ্রি-পিসের মধ্যে আছে আড়াই হাজার টাকা থেকে পাঁচ, ছয় হাজার টাকা ও গ্রাউন দুই হাজার টাকা থেকে বারো হাজার টাকারও আছে। আছে বিভিন্ন বুটিকসের থ্রি-পিসও। শাড়ির দোকানগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে সুতি, কাতান, জামদানি, বেনারসী, জর্জেট, রাজশাহী সিল্ক, তাঁত, পিউর সিল্কের কালেকশন। এগুলোর দাম ৭শ থেকে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। এখানে শাড়ি ও থান কাপড়ের জন্য বিখ্যাত তমা, কারিশমা, সিক্রেট ওয়্যাল, হাউস ফ্যাশন, নিউ এ হক, কটন মেলা, উর্বশী, কটন গ্যালারি, ম্যাচিং গ্যালারি, মেসার্স সাজ বধূয়া, সুন্দরী, ফ্যাশন বুটিকস ও আজমিরী খাজা কাপড়। ম্যাচিং গ্যালারিতে থ্রি-পিস ও থান কাপড় কিনতে এসেছে আকলিমা বেগম, শারমিন ও তুন্না। তারা জানায়, ঈদের জন্য পোশাক কিনতে এসেছি। আম্মুর জন্য দুইটি শাড়ি নিয়েছি। আমরা কিছু গজ কাপড় নিয়েছি। তবে এখন কাপড়ের দাম অনেক বেড়ে গেছে। এ বিষয়ে দোকানের কর্মীরা বলেন, ঈদ উপলক্ষে কাপড়ের দাম একটু বেড়েছে। কারণ আমরাও ঈদ উপলক্ষে দোকানে নতুন কাপড় তুলেছি। তাই এখন দাম একটু বেড়েছে।
কথা হয় কটন গ্যালারি দোকানের স্বত্ত্বাধিকারী মান্নানের সাথে। তিনি বলেন, রোজার ১৫ দিন আগে থেকেই মোটামুটি বেচাকেনা শুরু হয়েছে। তখন মেয়েরা সেলাই করার জন্য কাপড় কিনেছেন। তবে এখন থান কাপড়ের পাশাপাশি রেডিমেইড কাপড় কিনছে বেশি।
জুতোর দোকানগুলোর মধ্যে দেখা যায় বাটা’র শো-রুমে মেয়েদের খুব ভিড় । এখানে ক্রেতাদের চাহিদার মধ্যে আছে ফ্ল্যাট সোল থেকে হাই হিল, কিংবা জমানো হিল। বাটা জুতার দাম পাঁচশ টাকা থেকে শুরু করে এগারো’শ নিরানব্বই টাকা পর্যন্ত। এখানে জুতার দোকানগুলোর মধ্যে আছে এন্টিক জুতা, নোলক জুতা ও বিজয়া জুতার দোকান। বাটা দোকানের ম্যানেজার মো. হারুনুর রশিদ রাজীব বলেন, ঈদ উপলক্ষে বাটা কোম্পানির পক্ষ থেকে প্রতি জোড়া জুতায় ১০, ২০ ও ৩০ শতাংশ করে ডিস্কাউন্ট চলছে।
কসমেটিকসের দোকানগুলোর মধ্যে এখনো সেভাবে ভিড় দেখা যায়নি। এখানে বিশেষ করে কসমেটিকস দোকানগুলোর মধ্যে আছে মেহেক কসমেটিক কালেকশন, স্মার্ট কালেকশন, বনরূপা, রূপান্তর ও শো-কেস। আরো আছে ঘড়ির দোকান সিকো। এখানে ঘড়ি কিনতে আসেন সজুন ও কেয়া। তারা জানায় ঈদ উপলক্ষে নতুন কাপড়ের সাথে মিলিয়ে ঘড়ি কিনতে এসেছি।
সেন্ট্রাল প্লাজা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন রুবেল বলেন, ক্রেতাদের জন্য সব রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগের চেয়ে সিসি ক্যামরার সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে মার্কেটে। পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশ ও নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী রয়েছে আমাদের। আবার ক্রেতাদের সুবিধার্থেই গাড়ি পার্কিং এর সুব্যবস্থা রয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট