চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘আঁরা কত কষ্টত আছি, কেউ ন বুঝে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ জানুয়ারি, ২০২০ | ৫:৩০ পূর্বাহ্ণ

‘এক মাস আগের কথা, রাইতর ১২টা বাজে আঁর বদ্দার বুকত ব্যথা উইট্যে। কিন্তু ব্রিজ ভাঙ্গার কারনে এম্বুলেন্স আইত ন পারে। তবুও গরর দুয়ারতুন রিকশাত গড়ি ব্রিজের কাছে লই গেই। তারপর ৩/৪ জনে মিলিয়েরে আলগাই ব্রিজ পার গড়ি। আবার আরেক্কান রিকশা লই গলির মুখত যাই সিএনজিত গড়ি মেডিকেলত লই আনি। খানিক্কন দেরি অইলে বদ্দারে বাঁচন ন যাইতো। আঁরা কত কষ্টত আছি, ইয়ান কেউ ন বুঝে’।

আঞ্চলিক ভাষায় এভাবেই নিজেদের যাতায়াতের দুঃখ-দুর্দশার কথাগুলো জানান নগরীর ২৫ নম্বর রামপুরা ওয়ার্ডস্থ মুন্সী পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা আব্দুল মান্নান। মূলত ওই এলাকার কালা মিয়া মুন্সী বাড়ির সামনে থাকা কালভার্ট ভাঙ্গার পর বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা না থাকায় যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।

স্থানীয়রা জানায়, গত বছরের মাঝামাঝিতে সিডিএ’র জলাবদ্ধতা প্রকল্পের আওতাধীন আজববাহার খালের পুনঃ উদ্ধারের সময় কালভার্টটি ভাঙ্গা হয়। কিন্তু ভাঙ্গার প্রায় ছয়মাস পেরিয়ে গেলেও জনসাধারণের চলাচলের জন্য বিকল্প কোন রাস্তার ব্যবস্থা করেনি কর্তৃপক্ষ। যদিও এসব বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে

একাধিকবার যোগাযোগ করেছে। এরপরও কোন ব্যবস্থায় হয়নি। যার কারণে দুর্বিসহ অবস্থায় পারারপর হতে হচ্ছে বাসিন্দাসহ জনসাধারণের।

সরেজমিনে দেখা যায়, খালের আশপাশে থাকা অবৈধ বেশ কিছু স্থাপনা ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে আছে। বেশ কয়েক মাস আগে এসব ভাঙ্গা হয়েছে তা দেখেই বুঝা যায়। যার সাথে ভাঙ্গা হয় কালভাটর্টিও। তবে ভাঙ্গা কালভার্টের স্থানে বেশ কিছু মাটি থাকার দৃশ্য রয়েছে। যদিও মাটিগুলো কয়েকদিন আগে যাতায়াতের জন্য ভরাট করা হয় বলে জানান স্থানীয়রা।

মো. হাসান নামে স্থানীয় বাসিন্দা পূর্বকোণকে বলেন, ‘বাধ্য হয়েই চলাচলের জন্য স্থানীয়রা মাটি ভরাট করেন। কিন্তু গত কয়েকদিন আগের বৃষ্টির পানি জমে তাও সরিয়ে নেয়। এরমধ্যে গত সপ্তাহে পার হতে গিয়ে দুই নারী নালার মধ্যে পড়ে যায়। একজনের আঙ্গুলের নখও ওঠে যায়। অনেক কষ্টেই চলাচল করতে হচ্ছে আমাদের’। রামপুর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এস এম এরশাদ উল্লাহ এসব প্রসঙ্গে পূর্বকোণকে বলেন, ‘শুধুমাত্র মুন্সী পাড়াতেই প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। তারমধ্যে উত্তর আগ্রাবাদের অধিকাংশ মানুষ এই সড়ক দিয়েই যাতায়াত করে । জলাবদ্ধতা প্রকল্পের আওতায় খালের আশপাশের সকল অবৈধ স্থাপনা ভাঙ্গা হয়। কিন্তু এই কালভার্টটি ভাঙ্গার কোন কারণই দেখছিনা। যাতায়াতের কথাও তারা চিন্তা করেনি। বিকল্পও কোন রাস্তা নেই, মানুষ চলাচল করবে। সিডিএ কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিকবার এই বিষয় নিয়ে যোগাযোগ করেছি। তবুও কোন কাজ হয়নি’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট