চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

উত্তর চট্টগ্রাম বাস টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের জট খুলছে

জেলা প্রশাসনে অনাপত্তিপত্র ও ভূমি অধিগ্রহণে ১৩০ কোটি টাকা জমা দিয়েছে চসিক

ইফতেখারুল ইসলাম

২১ জানুয়ারি, ২০২০ | ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ

অক্সিজেনের বালুছড়া এলাকায় আধুনিক বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য প্রশাসনিক জট অবশেষে খুলেছে। দাবি পূরণ হচ্ছে উত্তর চট্টগ্রাম এবং দুই পার্বত্য জেলার যাত্রীদের। গতকাল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কাছে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সংস্থা নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর ও সিডিএ’র অনাপত্তিপত্র এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন পেয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। জেলা প্রশাসনের কাছে এসব অনাপত্তিপত্র এবং ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ১৩০ কোটি টাকা জমা দিয়েছে চসিক।

চসিক সূত্রমতে, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত বাস ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে ১৬ একর জায়গার ওপর। এর মধ্যে আট একর ভূমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রায় ২৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর কুলগাঁওয়ের বালু ছড়ায় নির্মিতব্য এই প্রকল্প এলাকায় সিডিএ’র জায়গা রয়েছে ৮ একর। ভূমি অধিগ্রহণের ২৬০ কোটি ৫ লাখ ৫ হাজার টাকা, জমি উন্নয়ন ব্যয় ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৩৯ হাজার টাকা, বাস-ট্রাক টার্মিনালের অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ ইয়ার্ড নির্মাণে ব্যয় হবে ২৫ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে কয়েকটি ধাপে। প্রথম ধাপে করা হবে ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ আনুষঙ্গিক কাজ। এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ১৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। সেই টাকার সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনকে জমা দেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এই টার্মিনাল থেকে দূর পাল্লার এবং আন্তঃনগর উভয় ধরনের বাস ছেড়ে যাবে। টার্মিনালের মুখে থাকবে চারতলা বিশিষ্ট নান্দনিক ভবন। ভবনটির প্রথম তলায় সিটি বাস টার্মিনাল, আন্তঃনগর বাস টার্মিনালে একটি যাত্রী নামার লেন, ২৫টি যাত্রী উঠার লেন, ১৪টি অতিরিক্ত নামার/অপেক্ষমান লেন, ছাদযুক্ত বৃহদাকার খোলা হল রুম এবং তথ্য কেন্দ্র, তিনটি স্থানে পাঁচটি লিফট, এক জোড়া চলন্ত সিঁড়ি, তিনটি প্রশস্থ সিঁড়ি, প্রতিটি ফ্লোরে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক পৃথক বৃহদাকার ওয়াশ রুম (টয়লেট), ২২টি টিকেট কাউন্টার, ওয়াইফাই সুবিধাসহ যাত্রীদের বসার জায়গা, লাগেজ রুম, ট্যাক্সি বুকিং রুম, প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র, দ্বিতীয় তলায় রেস্তোরাঁ, স্যুভেনীর সভা, এসি বাস যাত্রীদের বসার জায়গা এবং তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় বাস-ট্রাক মালিকদের ব্যবসায়িক অফিস, প্যানোরোমা রেস্টুরেন্ট, বাস কর্মচারীদের আবাসন রুম, কমনরুম ও ওয়াসরুমসহ থাকার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ৩০টি কার এবং ট্যাক্সি পার্ক, পেট্রোলপাম্প, ৬৯টি বাস ডিপো, ১৭টি ওয়ার্কসপ ও সার্ভিসিং সেন্টার, চারটি সার্ভিসিং লাইন, আটটি রক্ষণাবেক্ষণ ওয়ার্কসপ লাইন, সাব স্টেশন এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল সাপোর্ট স্টেশন থাকবে।

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন পূর্বকোণকে বলেন, প্রকল্পটি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যানেও টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তাবনা ছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের প্রতি আন্তরিক বিধায় জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছেন। ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হবে। প্রকল্পের রাস্তা নির্মাণসহ আনুষাঙ্গিক কাজ চলছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নগরী এবং উত্তর জেলা ও দুই পার্বত্য জেলার বিশাল জনগোষ্ঠী নানাবিধ উপকৃত হবেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট