চট্টগ্রাম বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

সাত বছরেও `অজিত’কে খুঁজে পায়নি পুলিশ!

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ জানুয়ারি, ২০২০ | ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সিআরবি জোড়া খুনের মামলার প্রধান আসামি অজিত দাশ ওরফে অজিত বিশ্বাস। জোড়াখুন ছাড়াও পুলিশের ওপর হামলা করার অপরাধেও অভিযুক্ত অজিত। ওই মামলায়ও তার বিরুদ্ধে নগরীর কোতোয়ালি ও বোয়ালখালী থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। সাত বছরের বেশি সময় ধরে পুলিশ তাকে খুঁজে না পেলেও দিব্যি স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন অজিত। ব্যবসা বাণিজ্য, সামাজিক সভা সমাবেশে অংশগ্রহণ-সবকিছুই করছেন স্বাভাবিকভাবে। অজিত বোয়ালখালী উপজেলা দুর্গাপূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি। সর্বশেষ গত ১৪ জানুয়ারি বিকেলে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও- পাঁচলাইশ) সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদকে লালখান বাজারের বাসায় ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলেন খুনের মামলার গ্রেপ্তার পরোয়ানাভুক্ত আসামি অজিত।

রেলের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সিআরবি সাত রাস্তার মাথায় জোড়াখুনের ঘটনা সংঘটিত হয় ২০১৩ সালের ২৪ জুন। যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও সাইফুল ইসলাম লিমনের গ্রুপের মুখোমুখি মারামারিতে সাজু পালিত ও আট বছরের শিশু আরমান গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। ওই মামলায় অজিত বিশ্বাসকে প্রধান আসামি করে ৬৪জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলাটি বর্তমানে বিচারের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

নিহত শিশু আরমানের মা মিনতি পালিত বলেন, অজিতের গুলিতে আমার সন্তান মারা গিয়েছে। ঘটনায় জড়িত অধিংকাংশ আসামি গ্রেপ্তার হলেও যার গুলিতে আমার সন্তান মারা গেছে সাত বছরেও পুলিশ তাঁকে খুঁজে পায়নি। পুলিশ জানিয়েছে অজিতে বিশ্বাসকে তারা খুঁজে পাচ্ছে না। অথচ তিনি দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন জানান, অজিতের বিরুদ্ধে জোড়াখুনের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। জামালখানের হেমসেন লেনের যে ভাড়া বাসায় থাকতেন সেখানে এখন আর থাকেনা। তাকে আমরা খুঁজছি।

জোড়াখুনের মামলায় আদালতে দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্বাঞ্চল রেলের ফতেহপুর লেভের ক্রসিং, পদুয়ার বাজার লেভের ক্রসিং ও ভাতশালা স্টেশন মেরামত কাজের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালের ২৪ জুন সিআরবি সাত রাস্তার মোড়ে যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী ও সাইফুল আলম লিমনের অনুসারীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন। অজিত বিশ্বাস হেলাল আকবর বাবরের অনুসারী। পূর্বের একটি রেলের দরপত্র নিয়ন্ত্রণের চাঁদার ভাগভাটোয়ারা নিয়ে সাজু পালিতদের সাথে অজিতের বিরোধ চলছিলো। ঘটনার দিন সাত রাস্তার মোড়ের একটি টং দোকানে গরম পুরি নিচ্ছিলো সাজু। ওই সময় পাওনা টাকা খুঁজতে গেলে অজিতকে খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করে সাজু।

এ সময় অজিত ক্ষিপ্ত হয়ে কোমরে থাকা পিস্তল বের করে মাথায় ঠেকিয়ে গুলি করলে ঘটনাস্থলে মারা যায় সাজু পালিত। এরমধ্যে লিমনের অনুসারীরা এগিয়ে এলে এলোপাতাড়ি গুলি চালালে সাত রাস্তার মোড়ে দোকানের সামনে থাকা আট বছরের শিশু আরমান প্রকাশ টুটুল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। জোড়াখুন ছাড়াও সিআরবি মসজিদের সামনে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দায়েরকৃত আরো একটি মামলায় গ্রেপ্তার পরোয়ানা রয়েছে অজিতের বিরুদ্ধে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট