চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

কনের বয়স ১৪, বরের ১৫ !

নিজস্ব সংবাদদাতা হ কক্সবাজার

২০ জানুয়ারি, ২০২০ | ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের রামুর ঈদগড়ে অভিযান চালিয়ে বাল্য বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। বর কনে দুইজনে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার অভিযোগে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে গতকাল রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে ঈদগড় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোর্শেদ আলম বিয়ের আয়োজন প- করে দেন। এসময় বরের বাবা বজল আহম্মদকে আটকের পর মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছেন, রামু ঈদগড়ের ৩নং ওয়ার্ড চরপাড়াস্থ শিয়াপাড়া এলাকার বজল আহমদের ছেলে রবিউল (১৫) এর সাথে একই

ইউনিয়নের ২নং পূর্ব হাছনকাটা এলাকার কুলসুমা আক্তার (১৪) এর বিয়ের দিন ধার্য ছিল রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে। উভয়ের বাল্য বিয়ের বিষয়টি নজরে আসে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমার কাছে। রোববার সকালে ইউএনও এর নির্দেশে বিয়ের স্থান যান ঈদগড় পুলিশ ফাঁড়ির একটি টিম। পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোর্শেদ আলম জানান, সকাল ১১টার দিকে প্রথমে কনের বাড়িতে যান। গিয়ে দেখেন সেখানে বিয়ের জন্য খাবার রান্নার আয়োজন চলছে। বিয়ের বিষয়ে কনে এবং কনের মা শামশুন নাহারের সাথে কথা হয়। শামশুন নাহার জানিয়েছেন, তার স্বামী মারা গেছেন অনেক আগে। বর্তমানে তার পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলে। কুলসুম তার ছোট মেয়ে। জম্ম নিবন্ধন অনুসারে তার বয়স ১৪ বছর। অভাবের সংসার হওয়ায় অল্প বয়সে তার মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। সবকিছু যাচাই করে পুলিশ বাল্য বিয়েটি বন্ধ করে দেন। এরপর বরের বাড়িতে যান পুলিশ। পুলিশ বরের বাড়িতে পৌঁছলেই বরসহ বাড়ির সবাই পালিয়ে যায় আয়োজন ফেলে। পরে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিতে বরের বাবা বজল আহম্মদ হাজির হন।

পর্যালোচনা করে দেখা গেছে তার ছেলের বয়স ১৫ বছর। বাল্য বিয়ে দেওয়ার অপরাধে পুলিশ বজল আহম্মদকে আটক করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসেন। পরে চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় বজল আহম্মদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মুচলেকায় প্রাপ্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না করার কথা উল্লেখ করেছেন। রামু ঈদগড় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোর্শেদ আলম জানিয়েছেন, ছেলে মেয়ে দুইজনেই খুব ছোট। ছেলেটি কোনো কাজও করে না। এলাকায় বখাটের মতো ঘুরাঘুরি করে বলে খবর পাওয়া গেছে। আর মেয়েটিও পড়ালেখা করে না। ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে বলে জানা গেছে। যেহেতু দুইজনেই অপ্রাপ্ত বয়সের তাই তাদের বিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্ত বয়স হওয়ার পর তারা বিয়ে করার মুচলেকা দিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট