সীতাকু-ে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের কমিটি গঠন নিয়ে সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দের মধ্যে মতানৈক্য চরমে পৌঁছেছে। সংগঠনটির উপজেলা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এক পক্ষ গতকাল (শুক্রবার) পৌরসদরে প্রতিবাদ সভা করেছে। আর অন্য পক্ষে বর্তমান কমিটি এদিন কমিটি গঠনে সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নিয়েও শেষ পর্যন্ত তা স্থগিত করে। কিন্তু এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশের মত সীতাকু-েও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটি রয়েছে। সর্বশেষ গত ২০১১ সালে সংগঠনটির সীতাকু- উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির সভাপতি পঙ্কজ কান্তি নাথ ও সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব কুমার দে। এদিকে কমিটি গঠনে ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল হবার কথা থাকলেও দীর্ঘ ৮ বছরেও আর কোন কাউন্সিল না হওয়ায় উপজেলার সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দ পুনরায় কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এরই মধ্যে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ ১৭ জানুয়ারি কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ করে উপজেলার বাড়বকু-ে অনুষ্ঠান করার প্রক্রিয়া শুরু করে। কিন্তু উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ, পৌরসভা পূজা উদযাপন পরিষদ, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে এ সম্মেলনের বিষয়ে না জানানোর অভিযোগ তুলে সেসব কমিটিসহ আরো অনেক সনাতনী নেতৃবৃন্দ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। এ বিষয়ে তারা গতকাল শুক্রবার পৌরসদর বড়বাজারস্থ ওয়াহেদী কমপ্লেক্স এর নিচতলায় একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। অন্যদিকে এদিন সকালে বাড়বকু-ে সংগঠনটির কমিটি গঠনের কথা থাকলেও বর্তমান কমিটি অজ্ঞাত কারণে তা স্থগিত করে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ সীতাকু- উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব কুমার দে বলেন, আমরা সংগঠনের গঠনতন্ত্র মেনে আমাদের সমস্ত ইউনিয়ন কমিটিকে সাথে নিয়ে ১৭ জানুয়ারি বাড়বকু-ে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেছিলাম। এ অনুষ্ঠানে আমাদের জেলার যেসব নেতৃবৃন্দ অতিথি হিসেবে থাকার কথা তারা সকলে স্বরসতী পূজার দিন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার কারণে ঢাকায় কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দের কাছে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এ কারণে আমরা সম্মেলন স্থগিত করেছি। পরবর্তীতে তা যথাযথ প্রক্রিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে। তবে এ নিয়ে সংখ্যালঘু অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের ক্ষোভের বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান। এদিকে গতকাল বিকালে বর্তমান কমিটির সম্মেলন প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পূজা পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি বিমল চন্দ্র নাথ, সাবেক সভাপতি স্বপন চন্দ্র বণিক, সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রঞ্জিত সাহা, শিক্ষক রুপন চন্দ্র দে, গৌতম অধিকারী, শুলাল দাশ সুনীল, কাশীনাথ নাথ, স্বপন নাথ, দুলাল দে, বিজয় ভট্টচার্য্য, মিন্টু মল্লিক সুমন দাশ, সুজিত পাল, মানস অধিকারী, সঞ্জয় চৌধুরী প্রমুখ। এখানে অধ্যাপক রঞ্জিত সাহাকে আহ্বায়ক ও গৌতম অধিকারীকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়। অধ্যাপক রঞ্জিত সাহা জানান, সংখ্যালঘু সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের না জানিয়ে বর্তমান কমিটি গোপনে কমিটি করছিলো। এই প্রক্রিয়া রুখতে তারা ৩১ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিরোধ কমিটি করেছে। এই কমিটির একটিই দাবি সনাতন ধর্মাবলম্বী সকল নেতৃবৃন্দকে নিয়ে যেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের কমিটি গঠন করা হয়।