চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মানববন্ধন ও সমাবেশ ন্যায্য দাম না পেয়ে ক্ষুব্ধ মহেশখালীর লবণ চাষিরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মহেশখালী

১৮ জানুয়ারি, ২০২০ | ৩:১৬ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারসহ দেশের উপকূলীয় এলাকায় মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত লবণের দাম নেই, দেশে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কঠোরভাবে লবণের দাম নিয়ন্ত্রণ করে নানা প্রক্রিয়ায় বিদেশ থেকে অবৈধভাবে লবণ আমদানি করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় চরম সংকটে পড়েছে দেশীয় লবণ শিল্প। এমন পটভূমিতে দ্রুত লবণের মূল্য বৃদ্ধি করে এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশ লবণচাষী বাঁচাও পরিষদ। গত ১৬ জানুয়ারি দেশের সবচেয়ে বেশি লবণ উৎপাদনকারী এলাকা মহেশখালীতে সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন সমাবেশ করেছেন।

উপজেলা সদরের বটতলা চত্বরে গত ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত মানববন্ধনত্তোর সমাবেশ থেকে বক্তারা সরকারের কাছে দ্রুত লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি জানান। ন্যায্যমূল্য না পেয়ে দেশে উৎপাদিত লবণের সংকটময় এই পরিস্থিতির বিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
বাংলাদেশ লবণচাষী বাঁচাও পরিষদ’র আহ্বায়ক সাজেদুল করিমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এহছানুল করিমের সঞ্চালনায় আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, চলতি মৌসুমে ১ একর জমিতে লবণ চাষ করতে খরচ পড়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকা। মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত লবণের মন প্রতি (৪০ কেজি) মূল্য ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। অথচ প্রতিমণ লবণ উৎপাদন করতে খরচ পড়ে এর চেয়ে অনেক বেশি। এ অবস্থায় খুবই করুণ দিন কাটাচ্ছে এলাকার লবণ চাষিরা। লবণের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে লবণ চাষের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে চাষীরা। এই অবস্থার চলতে থাকলে দেশীয় এ শিল্পী ধ্বংস হয়ে যাবে। অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করবে এই পেশার লোকজন।

তারা সরকারের কাছে দাবি জানান, এলসির মাধ্যমে লবণ আমদানি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করতে হবে, লবণ চোরাচালান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কঠোরভাবে দমন, মাঠ পর্যায়ে লবণের মূল্য কেজি প্রতি ১১ থেকে ১২ টাকায় করা, কক্সবাজারে লবণের স্থায়ী বোর্ড গঠন করা, লবণ ঋণের সহায়তা ও ইতোমধ্যে দেয়া ঋণ মওকুফ, প্রযুক্তি নির্ভর লবণ উৎপাদনের প্রশিক্ষণ প্রদান, উৎপাদিত লবণ সংরক্ষণ, সরবরাহ, বাজারজাত করণের কার্যকর কৌশল নির্ধারণ করা ও বিসিকের মাধ্যমে অন্ততঃ ২ লক্ষ মে. টন লবণ আপদকালীন সময়ের জন্য মজুত রাখার ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়।

উল্লেখ্য, মহেশখালীসহ কক্সবাজারের ৭ উপজেলা চকরিয়া, পেকুয়া, টেকনাফ, কক্সবাজার সদর, রামু ও কুতুবদিয়াসহ বাঁশখালীর প্রায় ৫৫ হাজার লবণচাষীসহ এ শিল্পের সাথে দেশের প্রায় ৫ লাখ মানুষ জড়িত। বহু মানুষের একমাত্র আয়ের উৎস লবণ চাষ। তাই লবণচাষী ও মালিকদের ন্যায্যামূল্য প্রদানের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখতে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলার নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর সংগঠনের আহ্বায়ক সাজেদুল করিম ও সদস্য সচিব এহছানুল করিম সাক্ষরিত স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট