চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ফার্নিচার দোকানে নারী পালিশ মিস্ত্রি

ওয়ার্ড ১৭ পশ্চিম বাকলিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ জানুয়ারি, ২০২০ | ৪:১৫ পূর্বাহ্ণ

বর্তমানে কোনো কাজেই পিছিয়ে নেই নারীরা। পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তারাও করছে সবরকম কাজ। তাই সময়ের সাথে সাথে এগিয়ে যাচ্ছে নারীরা। এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে নারীরা কাজ করছে না। অনেক প্রতিবন্ধকতার সাথে লড়াই করে হাসিনা ও তারই মত কিছু নারী ফার্নিচারের কাজ করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। সন্তান ও পরিবারের ভরণপোষন মিঠিয়ে পড়ালেখা করাচ্ছেন তাদের। এমনি কিছু নারী মিস্ত্রি কাজ করছেন নগরীর ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডের শাহ আমানত হাউজিং সোসাইটিতে ইকরা ফার্নিচারের দোকানে। বর্তমানে এই দোকানে কাজ করছে ৬ জন নারী ফার্নিচার মিস্ত্রি। সংসারে অভাবের সাথে যুদ্ধ করা এই নারীরা আজ সবাই স্বাবলম্বী হয়েছেন। হাল ধরেছেন সংসারের।

কথা হয় এমনি এক নারী মিস্ত্রি হাসিনা বেগমের সাথে। হাসিনা বেগম বলেন, আজ থেকে ১০ বছর আগে আরেকটা বিয়ে করে আমার স্বামী আমাকে ও আমার দুই মেয়েকে ছেড়ে চলে যায়। এমন পরিস্থিতিতে খুব অভাবে পড়ে যাই। বাবা, মা, ভাইবোন কেউ নেই আমার। দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন অতিবাহিত করছিলাম আমি। অনেক স্বপ্ন নিয়ে সংসার শুরু করেছি তার সাথে। কিন্তু আমার সেই স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে গেল। সে যখন আমাদের ছেড়ে চলে যায় এমন পরিস্থিতিতে কি করবো, কোথায় যাব কিছুই বুঝতে পরছিলাম না। ঘরে খাবার নেই। সন্তানদের কি খাওয়াবো, কিভাবে পড়ালেখা করাবো। সব মিলে খুব অসহায় হয়ে পড়েছিলাম। এমন দুঃখের সময় ফারুক ভাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। তিনি তারই ফার্নিচারের দোকানে আমাকে পালিশে কাজ দেন। আজ আমি পালিশের মিস্ত্রি। আমার অধীনে আরো ৫ জন নারী মিস্ত্রি কাজ করছে। তারাও কোন না কোনাভাবে কষ্ট পাওয়া। ফারুক ভাই তাদেরও এখানে কাজের ব্যবস্থা করে দেন। এখন তারাও ভালো আছে। ফার্নিচার দোকানের মালিক মো. ফারুক বলেন, হাসিনা আমার কাছে ফার্নিচার পালিশের কাজ শিখেছেন। বর্তমানে তিনি পরিপূর্ণ এক পালিশ মিস্ত্রি। শুধু তাই নয় তিনি আমার দোকানের বড় মিস্ত্রি। তার অধীনে আরো ৫ জন নারী পলিশ মিস্ত্রি কাজ করেছ। যাদের দৈনিক ৪শ টাকা বেতন।

শাহ আমানত হাউজিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আনিস ওয়ারেচী বলেন, নারীরা এখন অনেক এগিয়ে গেছে। অফিস আদালত থেকে শুরু করে সবরকম কাজ করছে মেয়েরা। মিস্ত্রি হিসেবে আমরা মেয়েদের আগে দেখিনি। কিন্তু এখন দেখছি। আর এটি খুব প্রশংসনীয়। কারণ তিনি কোনো খারাপ কাজ বা চুরি করছেন না। তারা পরিশ্রম করে খাচ্ছে। তাই আমি তাদের সম্মান করি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট